গোলমালে জখম। নিজস্ব চিত্র।
পুজো নির্বিঘ্নেই মিটেছে। ভিড় সামলাতে পুলিশি ব্যবস্থা ছিল যথেষ্ট প্রশংসনীয়। তবে শেষবেলায় তাল কাটল। বিসর্জনের শোভাযাত্রা ঘিরে দুই পুজো কমিটির গোলমালে উঠল পুলিশের লাঠিচার্জের অভিযোগ। ঘটনায় জুড়ে গেল রাজনীতিও!
বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে খড়্গপুর শহরের পুরনো মালঞ্চর ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ভীমচকে। লাকার শক্তি সঙ্ঘ পুজো কমিটি ও মালঞ্চ সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির বিসর্জনের শোভাযাত্রা নিয়ে গোলমাল বাধে। পরে মালঞ্চর শোভাযাত্রা এগোতেই পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। জখম হন ওই পুজো কমিটির ৫জন। ২জনকে নিয়ে যাওয়া হয় খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ পৌঁছে পরিস্থিতি সামলান।
এই সংঘাতে জুড়েছে রাজনীতিও। শক্তি সঙ্ঘের পুজোর উদ্বোধন এ বার মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর হাতে হয়েছে। তাই শক্তি সঙ্ঘের পক্ষ নিয়ে পুলিশ মারমুখী হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে মালঞ্চ সর্বজনীন। কারণ, এই পুজো কমিটির বেশিরভাগ সদস্য বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মী। যদিও পুলিশের দাবি, লাঠিচার্জ করা হয়নি। উত্তেজনা সামলাতে লাঠি হাতে ধাওয়া করেছিলেন পুলিশ কর্মীরা ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই পুজো কমিটির বিসর্জনের শোভাযাত্রা চণ্ডীপুর এলাকায় পাড়ার মধ্যে দিয়ে ভীমচকের কাছে মুখোমুখি হয়ে যায়। দু’পক্ষই পাড়ার মধ্যে দিয়ে গিড্ডু জমিদারের পুকুরে যাওয়ার কথা বলায় গোলমাল শুরু হয়। অশান্তি সামলাতে হস্তক্ষেপ করে খড়্গপুর গ্রামীণ থানার সাদাতপুর ফাঁড়ির পুলিশ। পরে স্থানীয় কংগ্রেস কাউন্সিলরের প্রতিনিধি জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি তথা মালঞ্চ সর্বজনীনের সভাপতি দেবাশিস ঘোষ মীমাংসায় নামেন। শেষমেষ পাড়ার মধ্যে দিয়ে স্বাধীন ক্লাবের পাশ দিয়ে পুকুরের দিকে এগিয়ে যায় মালঞ্চ সর্বজনীনের শোভাযাত্রা। ঠিক হয়, শক্তি সঙ্ঘের শোভাযাত্রা যাবে মালঞ্চ রোড হয়ে।
কিন্তু মালঞ্চ সর্বজনীনের শোভাযাত্রা এগোতেই আসে বিশাল পুলিশ। নতুন করে উত্তেজনা ছড়ালে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। মালঞ্চ সর্বজনীনের কর্মকর্তা বিজেপি নেতা মনোজ দে বলেন, ‘‘আমরা আমাদের রুটেই এগিয়েছি। কিন্তু শক্তি সঙ্ঘ যেহেতু তৃণমূলপন্থী ক্লাব ও শুভেন্দু অধিকারীকে এনে উদ্বোধন করেছে তাই পুলিশ ওদের সমর্থন করেছে। আর আমাদের কমিটির অধিকাংশ যেহেতু শাসকদলের বিরোধী তাই অকারণ এসডিপিও-র নেতৃত্বে আমাদের উপর লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ।’’ শক্তি সঙ্ঘের সম্পাদক তথা তৃণমূলের ওয়ার্ড সম্পাদক জয়দীপ ভট্টাচার্যের অবশ্য বক্তব্য, “মিথ্যা বলছে মালঞ্চ সর্বজনীন। প্রতিবার যে রুটে আমরা যাই ওরা সেই রুটে যেতে চেয়ে পুলিশকে হেনস্থা করছিল। তাই পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। পরে পুলিশ যে রুট ঠিক করে দিয়েছে, আমাদের শোভাযাত্রা সে পথেই এগিয়েছে।”
তবে এই ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে। তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী উদ্বোধন করাতেই ওই ক্লাবের প্রতি পুলিশ সহানুভুতিশীল ভূমিকা নিয়েছে বলে দাবি করেছে বিরোধীরা। মালঞ্চ সর্বজনীনের সভাপতি তথা কংগ্রেসের জেলা কার্যকরী সভাপতি দেবাশিস ঘোষ বলেন, “আমি মালঞ্চর সর্বজনীনের সভাপতি হলেও শক্তি সঙ্ঘের সদস্য। তাই দু’পক্ষ মুখোমুখি হতে আমিই পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে দু’পক্ষকে রুট ভাগ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু এ বার শুভেন্দু অধিকারী শক্তি সঙ্ঘের পুজোর উদ্বোধন করায় পুলিশ দলদাসের মতো আমাদের মালঞ্চ সর্বজনীনের ছেলেদের লাঠিচার্জ করেছে। আমাকেও মেরেছে।”
খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ অবশ্য বলছেন, “বিসর্জনের শোভাযাত্রা নিয়ে দুই কমিটির গোলমাল থামাতে লাঠি নিয়ে ধাওয়া করা হয়েছে। লাঠিচার্জ হয়নি। এর পরেও অভিযোগ থাকলে খতিয়ে দেখা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy