Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Jamtara Gang

Jamtara Gang: ব্যাঙ্কে ১৮ কোটি প্রতারণায় কি জামতাড়া গ্যাং, তদন্তে সিআইডি

ইতিমধ্যে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিআইডি। আগামী দিনে অতিরিক্ত (স্‌প্লিমেন্টারি) চার্জশিট জমা দেওয়া হতে পারে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৮:৩৩
Share: Save:

একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখয় অ্যাকাউন্ট থেকে ধাপে ধাপে সরানো হয়েছে ১৮ কোটিরও বেশি টাকা। অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয়েছে। পুলিশের হাত থেকে তদন্তভার গিয়েছে সিআইডি-র হাতে। সম্প্রতি সিআইডি-র একটি দল তদন্তে দিল্লি গিয়েছে। গোয়েন্দাদের একাংশের অনুমান, এই প্রতারণা চক্রের পিছনে ঝাড়খণ্ডের কুখ্যাত জামতাড়া গ্যাংয়ের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যোগ থাকলেও থাকতে পারে। এক তদন্তকারী মানছেন, ‘‘মনে হচ্ছে ওই চক্রের পিছনে কোনও গ্যাং থাকলেও থাকতে পারে। জামতাড়ার মতো।’’

ইতিমধ্যে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিআইডি। আগামী দিনে অতিরিক্ত (স্‌প্লিমেন্টারি) চার্জশিট জমা দেওয়া হতে পারে। মামলাটি চলছে মেদিনীপুর আদালতে। ঘটনাটি এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ঘাটালের স্থানীয় শাখার। তিনজন গ্রেফতার হয়ে এখন জেল হেফাজতে রয়েছেন। ওই শাখার ব্যাঙ্ক ম্যানেজার গৌতম দত্ত, শাখার কর্মী শ্রীমন্ত দাস এবং রাজীব বক্সী নামে এক ব্যক্তি। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, রাজীবই মূল চক্রী। রাজীব ইদানীং থাকতেন হুগলির আরামবাগে। আদি বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ে। গৌতমের বাড়ি কলকাতার রবীন্দ্র সরোবর এলাকায়। শ্রীমন্তের বাড়ি ঘাটালের সুলতানপুরে। শুরুতে শ্রীমন্তকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারপর একে একে রাজীব এবং গৌতমকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। রাজীব নিজেকে গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় নামে পরিচয় দিয়েছিলেন শুরুতে। পরে পুলিশ তদন্তে জানতে পারে, ওই অভিযুক্তের নাম গৌতম নয়, রাজীব। পরে তদন্তভার পেয়েছে সিআইডি।

জানা যাচ্ছে, রাজীব ওই শাখার লোকেদের কাছে দাবি করেছিলেন, তিনি সাইবার ক্রাইম অফিসার। কলকাতার বিধাননগরে থাকেন। তাঁদের কাছে অভিযোগ গিয়েছে যে, এই শাখায় কিছু সাইবার জালিয়াতি হয়েছে। তদন্তভার তাঁর উপরেই পড়েছে। রাজীব যে ‘ভুয়ো’ অফিসার, কথাবার্তায় তা বোঝা উচিত ছিল ব্যাঙ্কের লোকেদের। কিন্তু তাঁরা তা বুঝতে পারেননি বলেই তদন্তকারীদের কাছে দাবি করেছেন বাকি দুই অভিযুক্ত। এরপর তদন্তের অছিলায় একাধিক অ্যাকাউন্টের টাকা অন্য বেশ কিছু অ্যাকাউন্টে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন মূল চক্রী। ব্যাঙ্ক ম্যানেজারও সেই মতো বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে টাকা ফেলার অনুমতি দিয়েছেন!

গত এপ্রিলে ঘাটাল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের রিজিওনাল ম্যানেজার। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, প্রায় এক বছরের মধ্যে দফায় দফায় প্রায় ১৮ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা সরানো হয়েছে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে। এর মধ্যে একটি অ্যাকাউন্ট থেকেই সরানো হয়েছে প্রায় ১৮ কোটি টাকা। অ্যাকাউন্টটি দিল্লির একটি শাখায় খোলা হয়েছিল। জুলাইয়ে তদন্তভার হাতে নেয় সিআইডি। ওই মাসেই চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত (স্‌প্লিমেন্টারি) চার্জশিট দেওয়া হতে পারে। এই মামলায় দুর্নীতি দমন আইনও (পি সি অ্যাক্ট) যুক্ত করা হতে পারে। এক তদন্তকারী জানাচ্ছেন, টাকা সরানোর বিভিন্ন ভাউচারে সই রয়েছে ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের। তিনি দায় এড়াতে পারেন না। ম্যানেজারের কোড ব্যবহার করে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে টাকা সরানো হয়েছে। ম্যানেজারের পাসপোর্ট খতিয়ে দেখে সিআইডি জানতে পেরেছে, তিনি বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। গিয়েছেন দুবাই-সহ একাধিক ভিন্ দেশে। তদন্তকারীদের কাছে ধৃত ম্যানেজার অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁর বিদেশ ভ্রমণ ‘সাদা’ টাকায় হয়েছে।

প্রধানত যে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরানো হয়েছে, সেটি দিল্লির একজনের। সে বিষয়ে খোঁজখবর নিতেই সিআইডি-র একটি দল সম্প্রতি দিল্লি গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। গ্রাহকের অজান্তেই অ্যাকাউন্ট থেকে লোপাট কোটি টাকা— অন্য জেলায় এমন নজির রয়েছে। সে সব ঘটনার তদন্তে দেখা গিয়েছে, আগেই এসএমএস অ্যালার্ট চেঞ্জ করা হত। ফলে গ্রাহকও কিছুই জানতে পারতেন না। এমন কয়েকটি ঘটনায় হাত ছিল কুখ্যাত জামতাড়া গ্যাংয়ের। তদন্তকারীদের একাংশের অনুমান, এই প্রতারণা চক্রের জালও বহু দূর বিস্তৃত থাকতে পারে।

অন্য বিষয়গুলি:

Jamtara Gang Bank Fraud Case CID
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy