ছত্রধর মাহাতো। রবিবার ঝাড়গ্রামে। —নিজস্ব চিত্র।
জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র পুরনো মামলায় অব্যাহতি পেয়েছিলেন মঙ্গলবারই। আদালতের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর রবিবার নিজের গ্রামে ফিরলেন ছত্রধর মাহাতো। দুপুরে ঝাড়গ্রাম জেলার লালগড় থানার আমলিয়া গ্রামে ফেরেন তিনি। জেলায় প্রবেশের আগে লোধাশুলি এলাকায় তৃণমূলের তরফে ছত্রধরকে সংবর্ধনা জানানো হয়।
পুরনো মামলা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ছত্রধরকে ফের সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যাবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এর আগে ঘনিষ্ঠমহলে তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, তিনি এ বার ‘সামাজিক ভাবে’ কাজ করতে চান। ছত্রধরের স্ত্রী নিয়তি মাহাতো অবশ্য এখনও ঝাড়গ্রাম জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রীর পদে রয়েছেন।
রবিবার ছত্রধর বলেন, ‘‘ঝাড়গ্রামে ফিরে আদিবাসী-মূলবাসী মানুষের কাজ করব। এর বেশি এখনও কিছু ভাবনা চিন্তা করিনি।’’ ছত্রধর আরও বলেন, “আজ আমি আমার সঙ্গীসাথীদের সঙ্গে পেয়েছি। পরিষ্কার জলের মতো একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে আটকে রেখেছিল।” তার পরেই বিজেপির নাম না-করে পদ্মশিবিরকে আক্রমণ করেন ছত্রধর। বলেন, “এরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। গণতন্ত্রের মাধ্যমে জয় লাভ করতে পারছে না। তার জন্য বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন এজেন্সিকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে। তৃণমূলে কোনও দায়িত্ব পেলে কী করবেন, এই প্রশ্নের উত্তরে ছত্রধর বলেন, “দল কী দায়িত্ব দেবে, সেটা সম্পূর্ণ নেত্রীর উপর নির্ভর করছে। জঙ্গলমহলের মানুষের সুখে দুঃখে থাকব।”
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৭ অক্টোবর ঝাড়গ্রামের বাঁশতলায় ভুবনেশ্বর থেকে নয়াদিল্লিগামী রাজধানী আটক করেছিল মাওবাদী ও জনসাধারণের কমিটির লোকজন। ওই মামলায় ছত্রধরকে অভিযুক্ত করে এনআইএ। রাজধানী-আটকের সময়ে ছত্রধর জেলবন্দি ছিলেন। তাঁর মুক্তির দাবিতেই বাঁশতলায় রাজধানী এক্সপ্রেস থামানো হয়েছিল। ঘটনার ১২ বছর পরে, ২০২১ সালে রাজধানী আটকানোর পুরনো মামলায় ছত্রধরকে অভিযুক্ত করে গ্রেফতার করে এনআইএ। বছর দেড়েক আগে হাই কোর্ট থেকে ওই মামলায় শর্তাধীন জামিনে ছাড়া পান ছত্রধর। তবে হাই কোর্টের নির্দেশ ছিল, লালগড়ের আমলিয়ায় গ্রামের বাড়িতে ফিরতে পারবেন না তিনি। এমনকি ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া— এই পাঁচটি জেলাতেও ছত্রধরের যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল হাই কোর্ট। ফলে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ছত্রধর সল্টলেকের একটি বাড়ির একতলার বাসিন্দা হন।
পুজোর সময় অসুস্থ মাকে দেখার জন্য ছত্রধরকে ৯৬ ঘণ্টার জন্য আমলিয়া গ্রামে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল হাই কোর্ট। গত অক্টোবরে চার দিন বাড়িতে কাটিয়ে কলকাতায় ফিরে যান ছত্রধর। মঙ্গলবার কলকাতায় এনআইএ-এর বিশেষ আদালত ২০০৯ সালের ওই মামলা থেকে ছত্রধর-সহ পাঁচ অভিযুক্তকে অব্যাহতি দেয়। বাম আমলে প্রায় ৫০টি মামলায় অভিযুক্ত হন ছত্রধর। তাঁর মধ্যে বেশ কিছু মামলায় তিনি বেকসুর খালাস হন। ইউএপিএ মামলায় হাই কোর্ট সাজা কমানোয় ২০২০-তে ছত্রধর জেলমুক্ত হয়ে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদকের পদ পান। সেই সময় তাঁকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল করে গ্রামে ফেরানোর ব্যবস্থা করেছিল তৃণমূল। ২০২১ সালে ভোট দিতে গ্রামে ফিরেছিলেন। ভোটদানের দিন রাতেই ২০২১ সালের মার্চে ফের এনআইএ-র হাতে গ্রেফতার হন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy