প্রধানের সই করা অনুমতি পত্র।
ফের পাঁশকুড়ায় সেচ দফতরের গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠল। এবার নাম জড়াল পাঁশকুড়ার রঘুনাথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্ৰধানের। অজিত কুমার সামন্তের। গ্রামবাসীদের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা শুরু হয়েছে পঞ্চায়েত প্ৰধান অজিত কুমার সামন্ত ও গাছ ব্যবসায়ী পরাণ বেরার বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পাঁশকুড়ার রঘুনাথবাড়ি পঞ্চায়েত এলাকার কামিনাচকে গত অক্টোবর মাসে সেচ দফতরের বাঁধের ওপর থাকা ১৩টি সোনাঝুরি ও দু’টি ইউক্যালিপ্টাস গাছ কেটে বিক্রি করার অভিযোগ ওঠে পঞ্চায়েত প্রধান অজিত কুমার সামন্তের বিরুদ্ধে। গাছগুলির আনুমানিক মূল্য কয়েক লক্ষ টাকা। গ্রামবাসীরা পাঁশকুড়া থানায় পঞ্চায়েত প্রধান এবং ওই গাছ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রধান কোনও সরকারি নির্দেশ ছাড়াই জোর করে ওই সব গাছ কেটে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এমনকী সিপিমের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে গাঠ কাটায় বাধা দিতে গেলে অজিতবাবু ও তাঁর অনুগামীরা তাঁদের প্রাণনাশের হুমকি দেন বলেও অভিযোগ। গাছ ব্যবসায়ী পরাণ বেরার দাবি, তাঁর কাছে প্রধানের সই করা গাছ কাটার অনুমতিপত্র রয়েছে।
কিন্তু সেচ দফতরের জায়গায় থাকা গাছ কাটার লিখিত অনুমতি কি পঞ্চায়েত প্রধান দিতে পারেন? এই বিষয়ে অজিতবাবুর দাবি, ‘‘পাশের প্রতাপপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ধুলিয়াপুর মৌজায় বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়ার জন্য আমার এলাকার কামিনাচক পশ্চিম মৌজায় থাকা ওই গাছগুলি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমি বিডিওকে তা জানিয়েছিলাম। তবে আমার ভুল, বিডিওর লিখিত অনুমতি ছাড়াই গাছগুলি কেটেছি। তবে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত পঞ্চায়েতের সাধারণ সভায় নেওয়া হয়েছিল।’’ লক্ষাধিক টাকার গাছগুলি এখন কোথায়? অজিতবাবুর দাবি, ‘‘স্থানীয় সিপিএম সদস্য শঙ্কর বর্মন গাছগুলি রাতের অন্ধকারে বিক্রি করে দিয়েছেন।’’ শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘আমি গাছগুলি কাটার অনুমতি কে দিয়েছে সেটুকু জানতে ওখানে গিয়েছিলাম। প্রধান আমার নামে মিথ্যা বদনাম দিচ্ছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘গাছগুলি কেটে ফেলার ব্যাপারে সাধারণ সভায় কোনও আলোচনাই হয়নি।’’ পাঁশকুড়ার বিডিও ধেনধুপ ভুটিয়া বলেন, ‘‘ প্রধান আমার কাছে গাছগুলি কাটার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু আমি তার জন্য অনুমতি দিতে পারি না। গাছ কাটতে গেলে বন দফতরের অনুমতি লাগে। কোনও প্রধানের এই অনুমতি দেওয়ার অধিকার নেই।’’ অজিতবাবু জানান, গাছ কাটা নিয়ে তিনি আদালতের নোটিস হাতে পেয়েছেন। যথাসময়ে তিনি তাঁর বক্তব্য জানাবেন।
কয়েকদিন আগে পাঁশকুড়া পুর এলাকায় সরকারি গাছ কেটে বিক্রির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের কাউন্সিলরের স্বামীর বিরুদ্ধে। ফেল দলীয় পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগে অস্বস্তিতে পড়েছে পাঁশকুড়া ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি তথা পাঁশকুড়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি কুরবান শা বলেন, ‘‘শুনেছি গ্রামের মানুষ প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। দল এই ধরনের ঘটনা সমর্থন করে না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
সেচ দফতরের জায়গা থেকে গাছ কাটা নিয়ে সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘গাছগুলি কাটার আগে সেচ দফতরের অনুমতি নেওয়া উচিত ছিল। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy