ঝাড়গ্রাম শহরের সুভাষচক এলাকায় বসেছে মকরের বাজার। নিজস্ব চিত্র
করোনা আবহে গত দু’বছর সে ভাবে জমেনি মকর সংক্রান্তির বাজার। এ বার পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। আগামিকাল রবিবার, মকর সংক্রান্তি। তার আগে শুক্রবার থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার বাজারগুলি জমজমাট। গ্রামের হাট ও বাজারে উপচে পড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। প্রত্যন্ত এলাকা থেকে দল বেঁধে অনেকেই শহর বা গঞ্জে এসে মকরের বাজার সেরে যাচ্ছেন। দুই জেলার জামাকাপড়ের দোকানগুলিতেও বিক্রি বাড়ছে। মকরে পিঠেপুলির আয়োজনে অনেকেই মাটির হাড়ি-সহ অন্য সরঞ্জামও ব্যবহার করেন। বিক্রি বেড়েছে সেগুলিরও। তুঙ্গে গুড় ও নারকেলের চাহিদা। টুসু কেনার হিড়িক পড়েছে ঝাড়গ্রামের বাজারগুলিতে।
রাঢ়বঙ্গে মকর সংক্রান্তি পালিত হয় বেশ ঘটা করেই। শীতের মিঠেকড়া রোদ গায়ে মেখে পিঠেপুলিতে রসনাতৃপ্তি করেন বহু পরিবার। তার আগে গুড়, নারকেল, চালগুঁড়ি কেনার হিড়িক পড়ে সর্বত্র। করোনা আবহে দু’বছর মকরের বাজার সে ভাবে জমেনি। এ বার পৌষমাসের শেষে ফের স্বমহিমায় মকর সংক্রান্তি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গোয়ালতোড়, চন্দ্রকোনা রোড, শালবনি, মেদিনীপুর সদর, কেশিয়াড়ি, ঘাটাল, দাসপুর প্রভৃতি ব্লকের হাট ও বাজারগুলিতে শুক্রবার থেকেই মকরের জিনিসপত্র কিনতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গিয়েছে। চন্দ্রকোনা রোডের বাজারে স্ত্রীকে নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন নয়াবসতের বাসিন্দা দশরথ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘আগের দু’বছর মেয়ে-জামাইরা আসতে পারেনি, এ বার ওরা আসবে। তাই বেশি করেই পিঠে করতে হবে। গুড়, নারকেল, চালের গুঁড়ো কিনছি। নাতি-নাতনিদের নতুন জামাপ্যান্টও দেব।’’ গড়বেতা ও গোয়ালতোড়ের বাজারে নারিকেলের চাহিদা তুঙ্গে। মাঝারি নারকেল পিস ২০-২৫ টাকা, একটু বড় মাপের হলে ৩০-৩৫ টাকা পিস। দাম আয়ত্বের মধ্যে থাকায় নারকেল বিকোচ্ছে দেদার।
শনিবার রাতেই সমৃদ্ধির দেবী টুসুর পুজো। রবিবার সংক্রান্তির সকালে টুসু ভাসানের পর জঙ্গলমহল মেতে উঠবে মকর পরবে। পিঠেপুলি আর মাঁস পিঠার (মাংস পিঠে) সুগন্ধে ম-ম করবে চারপাশ। তার আগে শুক্রবার ঝাড়গ্রামের বাজারও জমে উঠেছিল। এ দিন শহরের আদিবাসী বাজারে টুসুর পসরা নিয়ে বসেছিলেন বিনপুরের কেন্দডাংরি গ্রামের দীনবন্ধু দাস, শিশির দাসরা। প্রতি বছরই তূষ ও মাটির টুসু মূর্তি গড়ে হাটে বেচতে আসেন তাঁরা। দীনবন্ধু বলছিলেন, ‘‘করোনা-কালে নিয়মরক্ষার উৎসব হয়েছে। এ বার ভালই টুসু মূর্তি বিক্রি হচ্ছে। ৩০, ৪০, ৫০ থেকে বড় মূর্তির দাম ১৫০ টাকা পর্যন্ত। তবে বড় মূর্তির চেয়ে ছোট মূর্তিই ভাল বিক্রি হয়েছে।’’ ঝাড়গ্রামের নেদাবহড়া গ্রামের প্রৌঢ়া পিয়াসি মাহাতো বলেন, ‘‘টুসু কিনতে এসেছি। নতুন কুলো, শালপাতাও কিনব।’’ বিনপুরের শঙখহার গ্রামের ফুলমণি মাহালি কাঁচা শালপাতার পসরা নিয়ে বসেছিলেন আদিবাসী বাজারে। নিজের বোনা বাঁশের কুলোও এনেছিলেন। ফুলমণি বলেন, ‘‘২৯টা কুলো এনেছি, দুপুরের মধ্যে ২৩টা বিক্রি হয়ে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy