ফাইল চিত্র।
কালীপুজোর সময় চাহিদা প্রচুর। তাই দুর্গাপুজোর আগে থেকেই বাজি তৈরি ও মজুত শুরু হয়ে যায়। নাওয়া-খাওয়া ভুলে মহিলা থেকে পুরুষ এমনকী কচি হাতগুলোও নাওয়া-খাওয়া ভুলে লেগে পড়ে বাজি তৈরিতে। বারুদ মাখা হাতে চাহিদা মেনে রকমারি শব্দবাজি (বেশিরভাগই বেআইনি) তৈরির ফাঁক দিয়ে গলে যায় নিরাপত্তা। যার জেরে বিরাম থাকে না দুর্ঘটনারও। আর দুর্ঘটনা ঘটলে ছুটোছুটি শুরু হয়ে যায় পুলিশ-প্রশাসনের। শুরু হয়ে যায় ধরপাকড়। বন্ধ হয়ে যায় কারখানা। বছরের পর বছর ধরে বেআইনি শব্দবাজির বিরুদ্ধে প্রশাসনের নজরদারির ছবিটা এমনই।
তবে কালীপুজোর আগে ‘নিয়মরক্ষা’য় পুলিশ অভিযানে নামলেও এমন বিপজ্জনক কাজে যে তাতে ফারাক পড়ে না তা প্রায় প্রতি বছরই দেখা যাচ্ছে। নানা রকমের বাজি তৈরির কারখানা জেলার প্রায় সর্বত্রই ছড়িয়ে আছে। অসাবধানে মৃত্যুর হাতছানি থাকা সত্ত্বেও অল্প সময়ে বেশি আয়ের পাশাপাশি সংসারের অভাব মেটাতেও অনেকে নেমে পড়েন এই বিপজ্জনক পেশায়। গুটিকয়েক লাইসেন্সধারীর আড়াল নিয়েই প্রচুর মানুষ যে এই কাজে নেমে পড়েন তা জানা আছে পুলিশেরও। এমনকী সাধারণ বাজি (তুবড়ি, ফুলঝুরি) তৈরির লাইসেন্স নেওয়ার পর বেআইনি ভাবে চাহিদামতো হরেক শব্দবাজি তৈরির মতো ঘটনা সামনে এলেও তা যে একেবারে বন্ধ হয়নি তার প্রমাণ মেলে প্রতি বছর। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের কড়াকড়িতে অনেক ক্ষেত্রে বাজির কারখানা বন্ধ হয়ে গেলেও পরে ফের সেখানে বাজি তৈরির কারবার শুরু হয়েছে, এমন ঘটনাও বিরল নয়।
গত ১৪ অক্টোবর ভগবানপুর থানার চড়াবাড় গ্রামে বাড়িতে বাজি তৈরির সময় বিস্ফোরণে হিমাংশু পাল নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয় । বিস্ফোরণে তার বাড়ি ধূলিসাৎ হয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই বাড়িতে আতসবাজি ছাড়াও দোদমা, চকলেট বোমার মতো নিষিদ্ধ বাজি মজুত ছিল। ২০১৬ সালের ২৯ অক্টোবর কালীপুজার রাতে ভগবানপুর থানারই মহম্মদপুর এলাকার শিলাখালি গ্রামে পুজোর মণ্ডপের কাছেই বাজি ফাটানোর প্রদর্শনীর সময় মজুত করা বাজিতে আগুন লেগে বিস্ফোরণে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল। আহত হয়েছিল চার শিশু সহ সাতজন। সেখানেও নিষিদ্ধ বাজি মজুতের অভিযোগ উঠেছিল। বাজি তারি হয় এমন এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, কালীপুজো এলেই বাজি নিয়ে পুলিশকে নড়েচড়ে বসতে গেখা যায়। পুজো মিটে গেলেই সব শেষ। তা ছাড়া সারা বছর ধরে বাজি তৈরি হলেও তখন পুলিশের কোনও নজরদারি থাকে না। এমনকী বাজি তৈরির লাইসেন্স পাওয়ার পরেও সেই কারখানায় নিয়ম মেনে বাড়ি তৈরি হচ্ছে কি না, নজরদারি থাকে না তা নিয়েও। কেবল কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তখন ছুটোছুটি শুরু হয়ে যায় পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের।
যদিও পুলিশের দাবি, বেআইনি বাজি তৈরি ও বেচাকেনার বিরুদ্ধে তাদের অভিযান সমানে চলে। কাঁথি মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিক ৈবলেন, ‘‘বেআইনি বাজির কারবার বন্ধে আগের চেয়ে নজরদারি অনেক বেশি কড়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই গত শনিবার থেকে এলাকায় অভিযান শুরু করে প্রচুর শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy