উন্নয়নের কাজে অসন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী সাম্প্রতিক ঝাড়গ্রাম সফরে প্রশাসনিক কর্তাদের বিস্তর বকাবকি করেন। সেই সময়ই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে আনা হয়, নতুন এই জেলায় আমলার ঘাটতির কথা। মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দেন, বিষয়টি তিনি দেখে নেবেন। সেই মতোই এ বার কাজ শুরু হল। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এ বার নতুন জেলায় আমলা সঙ্কট মেটানোয় নজর দিল নবান্ন।
নবান্ন সূত্রে খবর, শীঘ্রই বেশ কয়েকজন আমলা বিভিন্ন জেলা থেকে বদলি হয়ে ঝাড়গ্রামে আসছেন। নতুন করে একজন অতিরিক্ত জেলাশাসকও পেতে চলেছে ঝাড়গ্রাম। এর ফলে, জেলার উন্নয়নে গতি আসবে বলেই মনে করছে প্রশাসন। ঝাড়গ্রাম জেলার এক শীর্ষ আধিকারিক মানছেন, “কয়েকজন অফিসার ঝাড়গ্রামে আসছেন। তাঁদের বদলির নির্দেশ হয়েছে। এতে নিশ্চিত ভাবেই আরও বেশি কাজ হবে।”
৯-১১ অক্টোবর, তিন দিনের ঝাড়গ্রাম জেলা সফরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নতুন জেলা গঠনের পরে এটাই ছিল মমতার প্রথম ঝাড়গ্রাম সফর। সেখানেই প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর উপলব্ধি, জঙ্গলমহলের সাধারণ মানুষের মনের খবরই রাখেন না প্রশাসন ও তাঁর দলের জনপ্রতিনিধিরা। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘জঙ্গলমহল খুব সেনসিটিভ। আমি কোনও অভিযোগ শুনতে চাই না। সরকারের যেন বদনাম না হয়।’
ওই প্রশাসনিক বৈঠকের পরে অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতোকে তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতিকে। সমান্তরাল ভাবে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আর অর্জুনের মাথায় বসানো হয় পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনাকে। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষকে ঝাড়গ্রামের পরিস্থিতির উপর নজর রাখার কথা বলা হয়।
প্রশাসনিক বৈঠকে অতিরিক্ত জেলাশাসক সজলকান্তি টিকাদারের কাছে জেলা পরিষদের কাজের হিসেব চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সজলকান্তিবাবু ঠিক মতো হিসেব দিতে পারেননি। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে ভর্ৎসনা করেন। পরে মুখ্যমন্ত্রীকে বোঝানো হয়, সজলকান্তিবাবু পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ)। ঝাড়গ্রামে এই পদে কোনও আধিকারিক নেই। তখন মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, এখন থেকে ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের কাজকর্ম দেখভাল করবেন ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত জেলাশাসক টি সুব্রক্ষ্মণ্যম।
এরপরই ঝাড়গ্রামে আমলা পদের মেটাতে তোড়জোড় শুরু হয়। নবান্ন সূত্রে খবর, ঝাড়গ্রামের নতুন অতিরিক্ত জেলাশাসক হয়ে আসছেন কৌশিক পাল। কৌশিকবাবু পূর্ব মেদিনীপুরের গ্রামোন্নয়ন বিভাগে কর্মরত ছিলেন। ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের সচিব হচ্ছেন বর্ষারানি বসু। তিনি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের উপ-সচিব ছিলেন। নতুন জেলার পরিকল্পনা ও উন্নয়ন আধিকারিক হয়ে আসছেন দেবাশিস চৌধুরী। তিনি পুরুলিয়ার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। পাশাপাশি, ইন্দ্র সরকার সহ আরও চারজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদার অফিসারও ঝাড়গ্রামে আসছেন। এঁরা বিভিন্ন দফতরের কাজকর্ম দেখবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy