Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
BJP

WB Municipal Election 2022: ‘জাগরণ ছাড়া সমাজ এগোতে পারবে না’, ভোটের আগে তাই বাড়ি বাড়ি গীতা বিলি করছে বিজেপি

বাড়ি বাড়ি গীতা বিলি নিয়ে বিজেপি-কে বিঁধছে তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস। তিন দলেরই অভিযোগ, ধর্মের নামে বিভাজনের রাজনীতি করছে বিজেপি।

বাড়ি বাড়ি গীতা বিলি বিজেপির। মেদিনীপুরে।

বাড়ি বাড়ি গীতা বিলি বিজেপির। মেদিনীপুরে। নিজস্ব চিত্র।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:০৬
Share: Save:

সব ঠিক থাকলে সামনেই পুরভোট। তার আগে ভোটের মুখে বাড়ি বাড়ি গীতা বিলি করছেন বিজেপির কর্মীরা। ঘটনা মেদিনীপুর শহরের। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, জাগরণ ছাড়া সমাজ এগোতে পারবে না। তাই গীতা বিলি। বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মীয় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস।

মেদিনীপুর শহরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি গীতা বিলি শুরু করেছেন বিজেপির কর্মীরা। ইতিমধ্যে একশোটিরও বেশি বাড়িতে গিয়ে গীতা পৌঁছে দিয়েছেন তাঁরা। আপাতত, এই ওয়ার্ডের এক হাজারটি বাড়িতে গীতা পৌঁছনোর পরিকল্পনা রয়েছে গেরুয়া শিবিরের। স্থানীয় বিজেপি নেতা সুব্রত খাঁড়া বলেন, ‘‘সমাজের জাগরণ করতে হবে। তাই আমরা বাড়ি বাড়ি গীতা বিলি করছি। আমরা এখন যে পাড়াতেই যাচ্ছি, সে পাড়াতেই বাড়ি বাড়ি গীতা বিলি করছি।’’ রাজনৈতিক মহলের ধারণা, ধর্মীয় আবেগ উস্কে দিতেই গেরুয়া- শিবিরের এই পন্থা। গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচন থেকে স্পষ্ট, মেদিনীপুর শহরে গেরুয়া প্রভাব রয়েছে। সেই প্রভাবই আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। বিজেপির মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তাপস মিশ্র বলেন, ‘‘গীতা বিলি করা তো ভালই। জাগরণে গীতা দরকার।’’

মেদিনীপুরে শেষ পুরভোট হয়েছে ২০১৩ সালে। ওই পুরভোটে শহরে বিজেপির আসন প্রাপ্তি ছিল শূন্য। শহরের ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল দখল করেছিল ১৩টি। বাকি ১২টির মধ্যে কংগ্রেস ৬টি, বামেরা ৫টি এবং নির্দলের দখলে গিয়েছিল ১টি ওয়ার্ড। পরে দলবদলের অঙ্কে তৃণমূলের দখলে থাকা ওয়ার্ড সংখ্যা বেড়ে হয়েছিল ১৯। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে শহরে ধাক্কা খেয়েছিল তৃণমূল। লোকসভার নিরিখে ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল এগিয়ে ছিল ৮টিতে। বিজেপি ১৭টিতে। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে অবশ্য সে ধাক্কা অনেকটা কাটিয়ে উঠেছে শাসক দল। বিধানসভা ভোটের ফলাফলের নিরিখে ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে ১৬টিতে। বিজেপি ৯টিতে। বিধানসভা ভোটের পরে শহরে বিজেপির সংগঠন দুর্বল হয়েছে। বিজেপির অবশ্য দাবি, তারা পুরোশক্তি দিয়ে ভোটে লড়াই করবে। পুরসভা দখলই তাদের লক্ষ্য।

বাড়ি বাড়ি গীতা বিলি নিয়ে বিজেপিকে বিঁধছে তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস। তিন দলেরই অভিযোগ, ধর্মের নামে বিভাজনের রাজনীতি করছে বিজেপি। তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, ‘‘ধর্ম ছাড়া বিজেপির আর আছেটা কী? ওরা বরাবরই তো ধর্ম নিয়েই রাজনীতি করে আসছে। পুরভোটের আগেও শহরে ধর্মীয় উস্কানি দিতে চাইছে।’’ সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কীর্তি দে বক্সী বলেন, ‘‘ধর্ম ও রাজনীতিকে মিশিয়ে ফেলছে বিজেপি। ধর্মীয় আবেগ উস্কে ভোট বৈতরণী পেরোতে চাইছে ওরা। ভোটেই মানুষ যোগ্য জবাব দেবে ওদের।’’ কংগ্রেসের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি সমীর রায় বলেন, ‘‘আর কত নীচে নামবে ওরা? হিন্দুত্ব মানে সততা, ভালবাসার ধর্ম। কিন্তু তাতে রাজনীতি মিশিয়ে বিষাক্ত করে তুলছে বিজেপি।’’

জেলা বিজেপির এক নেতার পাল্টা যুক্তি, ‘‘ধর্ম ছাড়া রাজনীতি হয় না! ধর্ম মানে কী করতে হবে, আর কী করতে হবে না। আর সেই কারণেই রাজনীতিতে ধর্মের প্রয়োজন রয়েছে!’’ স্থানীয় বিজেপি নেতা সুব্রত খাঁড়া বলেন, ‘‘আমরা এলাকার হিন্দু বাড়িতেই গীতা দিচ্ছি। অন্য কেউ চাইলে তাঁকেও দেব।’’

পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি এখনও জারি হয়নি। তবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২৭ ফেব্রুয়ারি মেদিনীপুরে পুরভোট হওয়ার কথা। তার আগেই গীতা বিলি নিয়ে আপাতত তেতে উঠেছে মেদিনীপুরের ভোট ময়দান।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC CPM WB Municipal Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy