প্রতীকী চিত্র
মাওবাদী স্মৃতি উস্কেই জঙ্গলমহলে নতুন জনসংযোগ শুরু করছে বিজেপি। মাওবাদী হানায় নিহত ও নিখোঁজের পরিজনেরা কেমন আছেন জানতে এ বার গ্রামে-গ্রামে ঘোরা শুরু করবেন ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, ছত্রধর মাহাতোকে সামনে রেখে বিধানসভা ভোটের আগে জঙ্গলমহলে জমি ফেরতের চেষ্টা তৃণমূল শুরু করেছে, তার পাল্টা হিসেবেই গেরুয়া শিবিরের এই উদ্যোগ। কারণ, এত দিন মাওবাদী হানায় নিহত ও নিখোঁজদের পরিবারের নানা দাবিদাওয়া নিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছে বামেদের আর ‘মাওবাদী হানায় শহিদ, নিখোঁজ ও আহত পরিবারের যৌথ মঞ্চ’কে। সাংসদ হওয়ার পরে কুনার এমন কয়েকটি পরিবারের কাছে গিয়েছিলেন, সংসদে একবার বিষয়টি তুলেওছিলেন, তবে ওই পর্যন্তই।
ছত্রধর তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদকের পদ পাওয়ার পরে জঙ্গলমহলের রাজনীতির যে নতুন সমীকরণ তৈরি হয়েছে, সেই প্রেক্ষিতেই বিষয়টি নিয়ে নতুন ভাবে সক্রিয় হয়েছে বিজেপি। জানা যাচ্ছে, ঘনিষ্ঠমহলে কুনার জানিয়েছেন, ছত্রধরের খাসতালুক লালগড় থেকেই তিনি এই কর্মসূচি শুরু করতে চান। মাওবাদী পর্বে ছত্রধরের গ্রাম লালগড়ের আমলিয়ায় এক বাসিন্দাও খুন হন। এখনও আমলিয়া গ্রামের এক বাসিন্দা নিখোঁজ।
মাওবাদী সন্ত্রাস পর্বে ঝাড়গ্রাম জেলায় খুন হন ২৯৫ জন, নিখোঁজ ৮৪ জন। এ ছাড়া মাওবাদী হানায় আহত হয়ে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন ৭৬ জন। এঁদের বাড়ি বাড়িই যাবেন সাংসদ। গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি জেলা বিজেপি-র পর্যবেক্ষক সুজিত অগস্তি, ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপি সভাপতি সুখময় শতপথী, সাংসদ কুনার এ নিয়ে আলোচনা সেরে ফেলেছেন। কুনারে মতে, ‘‘আমি সাংসদ হওয়ার পরে স্বজনহারানো কয়েকটি পরিবারের খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করি। করোনা আবহে কয়েক মাস যাওয়া সম্ভব হয়নি। ওই পরিবারগুলি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। সংসদে আগেই ওঁদের দাবি তুলেছিলাম। ফের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওঁদের খোঁজখবর নেব। পরিবারগুলির সমস্যা কেন্দ্রের নজরে আনব।’’ জেলা বিজেপি-র সভাপতি সুখময় শতপথীও বলেন, ‘‘মাওবাদী সন্ত্রাস পর্বে নিহত ও নিখোঁজদের পরিবারগুলির পাশে দাঁড়াতে তাঁদের বাড়িতে যাবেন সাংসদ।’’
জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক সুব্রত সাহার অবশ্য অভিযোগ, ‘‘মানুজনকে ভুল বুঝিয়ে এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর নানা চেষ্টা করছে বিজেপি।’’ ‘মাওবাদী হানায় শহিদ, নিখোঁজ ও আহত পরিবারের যৌথ মঞ্চ’ নিখোঁজদের পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ এবং নিহত, নিখোঁজ, আহত ও কর্মক্ষমতা হারানো পরিবারের সদস্যদের চাকরির দাবিতে লড়ছেন। মঞ্চের সম্পাদক শুভঙ্কর মণ্ডল বলেন, ‘‘কোনও জায়গায় আবেদন করতে আমরা বাকি রাখিনি। পিকে-র দফতরের লোকজনও আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কিছুই হয়নি। উল্টে মাওবাদী ও জনসাধারণের কমিটির লোকজন এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা চাকরি ও সরকারি উচ্চ পদ পাচ্ছেন।’’
শুভঙ্কর জানান, লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি যোগাযোগ করেছিল। ভোটের পরে মঞ্চের দাবিদাওয়াগুলি কেন্দ্রের নজরে আনার আশ্বাসও দেওয়া হয়। শুভঙ্করের দাবি, ‘‘আমরা এ বার আশ্বাসের বাস্তবায়ন দেখতে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy