যশপ্রীত বুমরা (বাঁ দিকে) ও অজিঙ্ক রাহানে। অধিনায়ক হিসাবে দু’জনেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। —ফাইল চিত্র।
ঘরের মাঠে নিউ জ়িল্যান্ডের কাছে ০-৩ চুনকামের লজ্জা নিয়ে পার্থে নেমেছিল ভারত। সেখানে প্রথম ইনিংসে ১৫০ রানে গুটিয়ে যাওয়ায় আরও এক হারের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। সেখান থেকে জিতেছে ভারত। শুধু জিতেছে বললে ভুল বলা হবে, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে রানের নিরিখে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে (২৯৫ রান) জিতেছে তারা। এই জয়ের বড় কৃতিত্ব অধিনায়ক যশপ্রীত বুমরার। রোহিত শর্মার জুতোয় পা গলিয়ে দলকে দুর্দান্ত শুরু দিয়েছেন তিনি। কী ভাবে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ জয় তুলে নিলেন ভারতের পরিবর্ত অধিনায়ক বুমরা?
ফিরে যাওয়া যাক ২০২০-২১ সফরে। সে বার অ্যাডিলেডে প্রথম টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৬ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল ভারত। লজ্জার হার হয়েছিল বিরাট কোহলিদের। তার পরেই সন্তানের জন্মের জন্য দেশে ফিরে গিয়েছিলেন কোহলি। নেতৃত্বের দায়িত্ব নিয়েছিলেন অজিঙ্ক রাহানে। সেখান থেকে ২-১ সিরিজ় জিতেছিল ভারত। জিতিয়েছিলেন পরিবর্ত অধিনায়ক রাহানে। তা-ও এমন একটা দল নিয়ে, যেখানে শেষ টেস্টে ১১ জন ক্রিকেটারকে নামানোই সমস্যা হয়ে গিয়েছিল। চোটের কারণে ছিটকে গিয়েছিলেন ছ’জন ক্রিকেটার। বাধ্য হয়ে নেট বোলার হিসাবে নিয়ে যাওয়া নবদীপ সাইনিকেও খেলিয়ে দেওয়া হয়। পরিবর্ত অধিনায়ক রাহানের সেই খাতা থেকেই জয়ের মন্ত্র খুঁজে পেয়েছেন বুমরা।
এর আগে ভারতকে টেস্টে মাত্র এক বারই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বুমরা। ২০২২ সালের জুলাই মাসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ়ের বাকি থাকা পঞ্চম টেস্টে তিনি ছিলেন অধিনায়ক। সেখানে প্রথম ইনিংসে ১৩২ রানে এগিয়ে থাকার পরেও হেরেছিল ভারত। চতুর্থ ইনিংসে ৩৭৮ রান তাড়া করে জিতেছিল ইংল্যান্ড। ফলে পার্থে নামার আগে বুমরার উপর চাপ কম ছিল না। তার পরে প্রথম টেস্টে ১৫০ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল দল। কিন্তু নিজের উপর ভরসা রেখেছিলেন বুমরা।
বল করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার টপ ও মিডল অর্ডারে ধস নামান বুমরা। তাঁর বলের সামনে দাঁড়াতে পারেননি কোনও ব্যাটার। স্টিভ স্মিথের মতো ব্যাটারকে যে ভাবে তিনি আউট করেন তাতে বোঝা গিয়েছিল, কতটা পরিকল্পনা করে নেমেছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেট তুলে নেন বুমরা। তাঁর দাপটেই প্রথম ইনিংসে ৪৬ রানের লিড পায় ভারত। সেটাই ভারতের জয়ের ভিত তৈরি করে দেয়। দ্বিতীয় ইনিংসেও ৩ উইকেট নেন বুমরা। ক্রিজ়ে থিতু হয়ে যাওয়া ট্রেভিস হেড ৮৯ রানের মাথাতেও বুমরার বল বুঝতে না পেরে আউট হন। শেষ দিকে ওয়াশিংটন সুন্দর ও হর্ষিত রানাকে দিয়ে টানা বল না করালে দ্বিতীয় ইনিংসেও ৫ উইকেট নেওয়ার সুযোগ ছিল বুমরার।
২০২০-২১ সফরে ঠিক একই কাজ করেছিলেন রাহানে। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। অ্যাডিলেডে হারের পর মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্ট খেলতে নেমেছিল কোহলিহীন ভারত। ভারতের প্রথম ইনিংসে শতরান করেছিলেন রাহানে। সেই সিরিজ়ে সেটাই ছিল কোনও ভারতীয় ব্যাটারের করা একমাত্র শতরান। রাহানের শতরানে প্রথম ইনিংসে ১৩১ রানের লিড পেয়েছিল ভারত। চতুর্থ ইনিংসে ৭০ রান তাড়া করতে নেমে শুভমন গিলের সঙ্গে ৫১ রানের জুটি বেঁধেছিলেন রাহানে। সেই জয় দলের মনে বিশ্বাস তৈরি করেছিল। সেই বিশ্বাসে ভর করে সিডনিতে হারতে থাকা তৃতীয় টেস্ট ড্র করে ভারত। পরে ব্রিসবেনে শুভমন গিল, চেতেশ্বর পুজারা ও ঋষভ পন্থের ব্যাটে রান তাড়া করে সিরিজ় জিতে যায় ভারত।
সে বার মেলবোর্নে ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন রাহানে। এ বার পার্থে ম্যাচের সেরা হয়েছেন বুমরা। দুই পরিবর্ত অধিনায়কই দলকে জিতিয়েছেন নিজের কাঁধে। রাহানে সে বার অধিনায়ক হিসাবে সিরিজ় জিতিয়ে ফিরেছিলেন। তবে এ বার বুমরা সেটা পারবেন না। কারণ, দ্বিতীয় টেস্ট থেকেই ফিরছেন রোহিত। তাতে কী? ভারত যদি সিরিজ় জিতে ফিরতে পারে তা হলে পার্থে বুমরার কৃতিত্ব একটুও কমবে না। অধিনায়ক না থাকলেও রোহিতদের সিরিজ় জিততে পেসার বুমরাকে দরকার পড়বেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy