প্রতীকী ছবি।
নাগরিকত্ব আইন কি? এক বাসিন্দা প্রশ্ন করলেন বিজেপির বুদ্ধিজীবী সেলের নেতা পঙ্কজ রায়কে। ওই বাসিন্দাকে তিনি বোঝালেন, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্থান থেকে আসা সেদেশের সংখ্যালঘু শরণার্থীরা ভারতের নাগরিকত্ব পেতে চাইলে অনায়াসে সুযোগ পাবে। কিন্তু তারপরেই, বিজেপির বুদ্ধিজীবী সেলের ওই নেতাকে শুনতে হল জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে নানা প্রশ্ন। যা শুনে তাঁর জবাব, ‘‘এটা নিয়ে অকারণে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে কেন্দ্র সরকার এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। শুধুমাত্র নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করা হয়েছে।’’
নাগরিকত্ব আইন-এর সমর্থনে বিজেপির বাড়ি বাড়ি প্রচারের কর্মসূচিতে এমনই পরিস্থিতি তৈরি হল কাঁথি-১ ব্লকের দুলালপুরে। জাতীয় নাগরিক পঞ্জী ও নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল থেকে বিরোধী বাম ও কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় গিয়ে এর বিরুদ্ধে মিছিল করছেন। যা নিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় থেকে রাজ্য নেতৃত্বের অভিযোগ, এ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল এবং কংগ্রেস ও বামেরা নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সাধারণ মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। মানুষের মনে অষথা এই আইন নিয়ে ভীতির সঞ্চার করছে। তাই সাধারণ মানুষের কাছে বিজেপি নেতৃত্বের অনুরোধ, তাঁরা যেন তৃণমূল, কংগ্রেস, বামেদের কথায় কান না দেন। বদলে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মানুষের ভয় কাটাতে এবং আইনে প্রকৃত কী বলা হয়েছে তা মানুষকে বোঝাতে রাজ্য জুড়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। এর জন্য তাঁদের বেশ কিছু নেতা-কর্মীকে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। তাঁদের কাজ হবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাগরিকত্ব আইন কী তা বোঝানো। গত ৫ জানুয়ারি দুলালপুরে বিজেপির এই কর্মসূচি ছিল তারই অঙ্গ।
ওই দিন কাঁথির বিজেপি নেতৃত্বের তরফে সিএএ (সিটিজেন অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট) বা নাগরিকত্ব আইন সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তুলতে প্রচার অভিযান চালানো হয়। কাঁথি-১ ব্লকের দুলালপুর এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। সেখানে বিজেপির বুদ্ধিজীবী সেলের নেতা পঙ্কজ রায় উপস্থিত ছিলেন।
পঙ্কজবাবু বলেন, ‘‘১৯৮৫ সালে বামফ্রন্ট যে মানচিত্র প্রকাশ করেছিল, সেখানে যশোর, খুলনা এবং নদিয়াকে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। পরে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় আলোচনার মাধ্যমে নদিয়াকে পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্ভুক্ত করেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘নাগরিকত্ব আইন নিয়ে এ দেশে সংখ্যালঘু স্থায়ী বাসিন্দাদের ভয়ের কোনও কারণ নেই। যারা অনুপ্রবেশকারী তারা যাতে আমাদের দেশের জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। তারা যাতে ভোটাধিকার না পায় তার জন্যই কঠিন কাজ কঠিন ভাবে করতে হবে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘১৯৪৭ সাল এবং ১৯৭১ সালে অনেকেই এদেশে চলে এসেছেন। কিন্তু তাঁরা নিজ ভূমে পরবাসীর মতো জীবনযাপন করছেন। তাঁদের নাগরিকত্ব দিতে এই আইন আনা হয়েছে।’’ দুলালপুরের বাসিন্দা ও পেশায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী বনবিহারী দাস বলেন, ‘‘নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আমার যা কিছু জানার ছিল, সব জানতে পেরেছি।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূল সাধারণ মানুষকে নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে। প্রকৃত আইন কী এবং তার সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করতে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ যদিও বিজেপির এই বাড়ি বাড়ি প্রচারের পাল্টা নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রচার চালানো হবে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি কী প্রচার করছে সেটা ওদের নিজস্ব ব্যাপার। তবে নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে বিজেপি সাধারণ মানুষের সঙ্গে যে ভাবে ধোঁকাবাজি চালাচ্ছে, আমরাও সাধারণ মানুষকে গিয়ে বাড়ি বাড়ি তা বোঝাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy