চন্দ্রকোনার মতো ময়নাতেও শুভেন্দু অধিকারীর সভা করার অনুমতি চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। —ফাইল চিত্র।
পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার পর পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নাতেও বিরোধী দলনেতার শুভেন্দু অধিকারীর সভা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। অবশেষে সভার ঠিক আগের দিন, শুক্রবার আদালতের হস্তক্ষেপে সভার অনুমতি পেল বিজেপি। আর তার পরেই ময়নার বিজেপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সাজ সাজ রব। শনিবার শুভেন্দুর নেতৃত্বে ময়নার বাকচার জনসভায় বিপুল জমায়েতের লক্ষ্য নিয়েছে তারা। সংশ্লিষ্ট বিধানসভাটি বিজেপির দখলে। শনিবার ওই সভা থেকে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে ‘একচেটিয়া জয়ের’ বার্তা দেবেন শুভেন্দু। জানাচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্ব। পাশাপাশি আদালতের অনুমতি মেলার পর বিজেপির কটাক্ষ, শাসকদল ময়নাকে কব্জা করার যতই চেষ্টা চালাবে, ততই তাদের পায়ের তলার মাটি আলগা হবে।
বস্তুত, গত বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই বার বার শিরোনামে উঠে এসেছে ময়নার বাকচা। ক্রমাগত রাজনৈতিক সংঘর্ষ, বিপুল বিস্ফোরক উদ্ধার, দুই যুযুধান পক্ষের মারামারিতে উত্তপ্ত হয়েছে এলাকা। এই সংঘর্ষের নেপথ্যে রয়েছে ভোট অঙ্ক। কারণ, ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে ময়নায় বিজেপি প্রার্থী অশোক দিন্দার জয়ের পিছনে বাকচার ভূমিকা অপরিসীম। তার পর থেকেই ওই এলাকায় ধারাবাহিক ভাবে রাজনৈতিক কোন্দলের ঘটনা ঘটছে। তাই ওখানেই সভা করার কথা ঘোষণা করেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু ‘রাজনৈতিক উত্তেজনাপ্রবণ এলাকা’ বলে প্রথমে সভার অনুমতি দেয়নি পুলিশ। এর পরে আদালতের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। তারা আবেদনে জানায়, ময়নার ইসমালিচক ফুটবল মাঠে সভা করতে চায়। কিন্তু প্রশাসনের তরফে আপত্তি জানানো হয়। যুক্তি দেওয়া হয়, ওই মাঠে ১০ হাজারের বেশি লোকের জায়গা হবে না। যদি অতিরিক্ত ভিড় না হয়, তবেই সভার অনুমতি মিলবে।
শুক্রবার দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর বিচারপতি রাজশেখর মান্থার বেঞ্চ সভার অনুমতি দেন। পাশাপাশি চন্দ্রকোনার সভার মতো বেশ কিছু গাইডলাইন দিয়েছে আদালত। বলা হয়েছে, শব্দবিধি মানার পাশাপাশি অতিরিক্ত ভিড় যাতে না হয় সে দিকেও নজর দিতে হবে। পুলিশকেও উপযুক্ত সুরক্ষাবিধির বন্দোবস্ত করতে হবে। আদালতের এই নির্দেশের পরেই পূর্ণ উদ্যমে সভার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিজেপি। দলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি আশিস মণ্ডল বলেন, “বিজেপি কোথাও সভা করতে গেলেই তার অনুমোদন দেওয়া হয় না। এর বিরুদ্ধে আমাদের হাই কোর্টে যেতে হচ্ছে। কিন্তু আদালতের নির্দেশে শেষ পর্যন্ত রাজ্য প্রশাসন পিছু হটতে বাধ্য হয়।” তাঁর অভিযোগ, “পুলিশকে কাজে লাগিয়ে সর্বত্র বিজেপিকে রোখার চেষ্টা হচ্ছে। তবে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ময়না বিধানসভা দেখিয়ে দেবে কী ভাবে মানুষের রায় নিয়ে ভোটে জেতা যায়।”
অন্য দিকে তৃণমূলের তরফে মহিষাদলের বিধায়ক তিলক কুমার চক্রবর্তীর পাল্টা অভিযোগ, “বিজেপি ময়নাকে ক্রমাগত উত্তপ্ত করছে। ওরা যেখানে সভা করছে সেখানেই আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছে। ময়নার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি দেখেই প্রশাসন সেখানে সভা করতে নিষেধ করেছিল।” তাঁর সংযোজন, “আমরা কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আদালতের নির্দেশ সকলকে মাথা পেতে নিতে হবে। আদালতের নির্দেশে যা যা ব্যবস্থা করার তা প্রশাসন নিশ্চয়ই করবে। এ ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy