শিশির অধিকারী, শুভেন্দু অধিকারী এবং সৌমেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
রাজ্যব্যাপী সবুজ ঝড়ের মাঝে অক্ষত অবস্থায় দ্বীপের মতো জেগে রয়েছে ‘অধিকারী গড়’ কাঁথি। কাঁথি দক্ষিণ কেন্দ্রের অন্তর্গত এই শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড-সহ অধিকাংশ ওয়ার্ডেই উড়েছে বিজেপি’র জয়পতাকা। তবে নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত তথ্যে দেখা গিয়েছে, অধিকারী পরিবার যে বুথে ভোট দেয়, সেখানে গেরুয়া শিবিরকে ৫৪টি ভোটে টেক্কা দিয়েছে তৃণমল! রবিবার ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর বিষয়টি সামনে আসায় ‘অধিকারী গড়ে’র সুরক্ষা নিয়ে কটাক্ষ করছে তৃণমূল।
গত ডিসেম্বর বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। একই পথে হেঁটেছেন ভাই সৌমেন্দু। বাবা তথা সাংসদ শিশির অধিকারীকেও দেখা গিয়েছে বিজেপি’র কর্মসূচিতে। পরিবারের সদস্য দিব্যেন্দু অধিকারী এখনও পর্যন্ত অবশ্য তৃণমূলেই সাংসদ হিসাবে রয়েছেন। গত ২৭ মার্চ প্রথম দফায় কাঁথি দক্ষিণ কেন্দ্রে ভোট হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, কাঁথি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ৮৩ নম্বর বুথে গত কয়েক বছর ধরে ভোট দিয়ে আসছেন ‘শান্তি কুঞ্জে’র সদস্যরা। গত ২৭ মার্চ প্রথম দফার ভোটে ওই ৮৩ নম্বর বুথে সাংসদ শিশির অধিকারী, তাঁর স্ত্রী গায়ত্রী অধিকারী, বড় ছেলে কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, তাঁর স্ত্রী দেবশ্রী অধিকারী, সেজো ছেলে দিব্যেন্দু অধিকারী, তাঁর স্ত্রী সুতপা অধিকারী মুখোপাধ্যায় এবং ছোট ছেলে সৌমেন্দু ভোট দিয়েছেন। বাড়ির পাশের কাঁথি প্রভাতকুমার কলেজের ওই বুথে এক সময় ভোট দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীও। পরে তিনি হলদিয়া এবং বর্তমানে নন্দীগ্রামের নন্দনায়েকবাড়ের ভোটার হন।
১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মোট চারটি বুথ (৮৩, ৮৩এ, ১১৪, ১১৪এ) রয়েছে। ৮৩ নম্বর বুথে বিজেপি পেয়েছে ২১১টি এবং তৃণমূল পেয়েছে ২৬৫টি ভোট। অর্থাৎ ওই বুথে তৃণমূল বিজেপির থেকে ৫৪টি ভোটে এগিয়ে। অন্য তিনটি বুথে অবশ্য বিজেপি টেক্কা দিয়েছে তৃণমূলকে। উল্লেখ্য, ২১ ওয়ার্ড বিশিষ্ট কাঁথি পুরসভায় ১৫টিতে এগিয়ে বিজেপি। বাকি ছ’টিতে তৃণমূল এগিয়ে।
দক্ষিণ কাঁথি কেন্দ্রে এবার হরে গিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী জ্যোতির্ময় কর। কিন্তু শিশিরবাবু এবং তাঁর পরিবার যে বুথে ভোট দেন, সেখানের ফলাফল দেখে জ্যোতির্ময়ের কটাক্ষ, ‘‘হাতে সময় খুব কম পেয়েছিলাম। না হলে দেখে নিতাম কাঁথি দক্ষিণ কার গড়!"
এবার কাঁথি দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন সৌমেন্দু অধিকারী। তিনি যে বুথে ভোট দিয়েছেন, সেখানে তৃণমূল এগিয়ে থাকা প্রসঙ্গে বলছেন, ‘‘ওই বুথে সংখ্যালঘু ভোটারের সংখ্যা বেশি। তাই এটা হয়েছে। তবে পাশাপাশি সব বুথ এবং ওয়ার্ড মিলিয়ে পুরসভায় তো বিজেপি ভালই ফল করেছে।’’
তৃণমূল ছাড়ার পর দলীয় সভায় একাধিকবার দক্ষিণ কলকাতায় ভবানীপুরে যে বুথের ভোটার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেখানে তৃণমূল পিছিয়ে ছিল বলে শুভেন্দুকে বলতে শোনা গিয়েছে। এবার সেই একই ফল কাঁথিতে হওয়ায় গোটা অধিকারী পরিবারকে তার পুরোনো দলের নেতাদের সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে। যদিও এ প্রসঙ্গে সাংসদ শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘যে তথ্য খাড়া করা হচ্ছে, সেটা পাশের ওয়ার্ডের। যদি এ ধরনের ফল হয়ে থাকে তাতেও কোন অসুবিধে নেই। কাঁথিতে মানুষ আমাদেরকেই ভালবাসেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy