প্রতীকী ছবি।
এক সময়ে যে তালুক ছিল শক্তির, এ বার সেখানেও বিপর্যস্ত বিজেপি। ফলাফল বিচার করে যাচ্ছে, খড়্গপুরের অবাঙালি ভোটও নিজেদের অনুকূলে আনতে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি।
সদ্য সমাপ্ত উপ-নির্বাচনে রেলশহরের অবাঙালি এলাকায় ভোটের হারও কম। বিজেপির অভিযোগ, অবাঙালি এলাকাগুলিতে ভোটের দিন কয়েক আগে থেকে সন্ত্রাস করেছে তৃণমূলের লোকজন। বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশের কথায়, ‘‘রেল এলাকাগুলিতে ভোট কম পড়েছে। তৃণমূলের সন্ত্রাসের জন্যই এটা হয়েছে। ওদের লোকেরা ভোটারদের ভয় দেখিয়েছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘ভোটে হেরে গিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করছে বিজেপি। ওদের অহঙ্কার বেড়ে গিয়েছিল। মানুষ ভোটেই যোগ্য জবাব দিয়েছেন।’’
তবে তৃণমূলের এক সূত্র মানছে, অবাঙালি এলাকায় কম ভোট পড়েছে। এতে দলের সুবিধে হয়েছে। খড়্গপুরে বিধানসভা উপ- নির্বাচনে সার্বিক ভাবে ভোটের হার ৬৮ শতাংশ। জানা যাচ্ছে, রেল এলাকাগুলিতে গড়ে ৪০-৪৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। কোথাও কোথাও আরও কম!
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ভোটের দিনে শেষবেলায় এই রেল এলাকাতেই গোলমাল পাকানোর অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পৌঁছেছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। তবে কি ভোটদানের হার কম রাখা ওই গোলমাল পাকানোর উদ্দেশ্য ছিল, জল্পনা বিভিন্ন মহলে।
ভোটের ফলে স্পষ্ট, লোকসভার ছ’মাসের মাথায় খড়্গপুরে বিজেপির ভোট কমেছে বিপুল হারে। লোকসভার নিরিখে এখানে তৃণমূলের থেকে ৪৫ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। ওই ভোটের বড় অংশ এসেছিল রেল এলাকাগুলি থেকে। রেলশহরে রয়েছেন প্রচুর ভিন্ রাজ্যের মানুষ। এই অবাঙালি সম্প্রদায়ের ভোট মূলত বিজেপির দিকেই যেত। তবে কি তাঁরাও এ বার মুখ ফেরাতে শুরু করেছেন বিজেপির দিক থেকে? প্রশ্ন উঠছে। মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ দিকে ইঙ্গিত করেছেন। ভোটের ফল বেরোনোর পরে মমতাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘খড়্গপুরের অবাঙালি ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দারাও আমাদের ভোট দিয়েছেন।’’ রেলশহরের ভোটারদের একটা বড় অংশই অবাঙালি। শুধু তেলুগু ভোটারই রয়েছেন ৬৫ হাজার।
দেখা যাচ্ছে, রেল এলাকার মধ্যে থাকা ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল বিজেপির থেকে ৭৬৯ ভোটে এগিয়ে রয়েছে। এই এলাকার কাউন্সিলর পূজা নায়ডু। গত পুর- নির্বাচনে পূজা বিজেপির টিকিটে জেতেন। পরে তৃণমূলে যোগ দেন। উপ-নির্বাচনে এই ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে ৫২ শতাংশ। যা খড়্গপুরের সার্বিক ভোটের হারের থেকে ১৬ শতাংশ কম।
খড়্গপুরের বাসিন্দা, বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘রেল এলাকাগুলিতে আরও বেশি ভোট পড়া উচিত ছিল।’’ ভোটকে বুথ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যায়নি। এটা কি সাংগঠনিক ব্যর্থতা নয়? তুষারের জবাব, ‘‘আমরা বুথ ধরে ধরেই পর্যালোচনা করব। কোথাও ভুল হয়ে থাকলে নিশ্চিত ভাবে সংশোধন করা হবে।’’ অনেকে মনে করছেন, তৃণমূলের কৌশলের কাছেই হেরে গিয়েছে বিজেপি। বিজেপি হয়তো মনে করেছিল, অবাঙালি ভোটারদের ভোটেই তারা উতরে যাবে। তবে তা হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy