নন্দীগ্রামের টেঙ্গুয়ায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের যজ্ঞ (বাঁদিকে)। চণ্ডীপুরে বিজেপি কর্মীদের মিছিল। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে রাম মন্দিরের ভূমি পুজো উপলক্ষে দলীয় ভাবে কোনও রকম কর্মসূচি ছিল না বলে মঙ্গলবারই জানিয়েছিলেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। পাশাপাশি, এই ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন যে, অত্যুৎসাহীরা রাস্তায় নামলে তাঁদের কিছু করার নেই। বুধবার বিজেপি নেতৃত্বের ওই ইঙ্গিতই ফলে গেল। লকডাউনে কোথাও পুলিশের সামনেই রাস্তায় বাইক মিছিল করলেন বিজেপি’র কর্মী-সমর্থকেরা, তো কোথাও হল রাম পুজো।
এ দিন সকাল থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন থানার পুলিশ রাস্তায় নামে লকডাউন সফল করতে। হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য এবং জাতীয় সড়ক, নন্দকুমার-দিঘা জাতীয় সড়ক-সহ বিভিন্ন রাস্তায় গাড়ি আটকে জিজ্ঞাসাবাদ চলে। কিন্তু সেই নজরদারির ফাঁকেই লকডাউনের বিধি উপেক্ষা করে তমলুকে একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের ব্যানারে বিজেপি নেতা-কর্মীরা মোটরসাইকেল মিছিল করেন। প্রায় ১৫টি মোটরবাইকের ওই মিছিল শহরের নিমতলা মোড়, বড়বা জার, বর্গভীমা মন্দির, টাউনস্কু লপাড়া হয়ে শালগেছিয়া এলাকায় একটি হনুমান মন্দিরে পৌঁছে পুজো দেন।
বিজেপি’র আর একটি দল তমলুক শহরের গঞ্জনারায়ণপুরের কালী মন্দির থেকে কীর্তন সহযোগে মিছিল করে। তবে নিমতলা মোড়ের দিকে আসার পথে পুলিশ তাঁদের আটকায় এবং মিছিল বন্ধ করে দেয়। চণ্ডীপুর ব্লকে বিজেপি’র পতাকা নিয়ে মোটর সাইকেল মিছিল হয়েছে। তমলুক পুরসভার প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘‘শহরের রাস্তায় কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে মিছিল করতে দেখেছি। তবে তাতে খুব বেশি লোক ছিলনা। শহরের অন্য সমস্ত বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী লকডাউন মেনে চলেছেন।’’
এদিকে, পিছিয়ে ছিলেন না ভগবানপুর, পটাশপুর ও এগরার বিজেপি কর্মীরা। যে ভগবানপুর এক সময় ভেড়ি-কাণ্ডে নিহত তৃণমূল নেতা নান্টু প্রধানের এলাকা হিসাবে পরিচিত ছিল, সেখানে এ দিন বিজেপি’র বহু কর্মসূচি হয়েছে। ভগবানপুর থানা এলাকার মহম্মদপুর, গোয়ালাপুকুর, বিভীষণপুরে বড় করে করে ভূমি পুজোয় যজ্ঞ ও পূজা অর্চনা হয়। বিভীষণপুর আনাজ বাজার থেকে পুলিশের সামনেই বাইক মিছিল শুরু করেন বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা। পুলিশ সাময়িক ভাবে তাঁদের আটকাল ও পরে ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ।
পটাশপুর থানার টাকাবেড়িয়া, গোকুলপুর, অমর্ষি, সামন্তখণ্ড, এগরার কুদি, মির্জাপুর-সহ একাধিক জায়গায় ভূমি পুজো হয়েছে। কোথাও তো আবার পুজোকে কেন্দ্র করে খাওয়াদাওয়া ব্যবস্থাও চিল। তবে শেষ মুহুর্তে তা বাতিল করা হয়। সহ একাধিক জায়গায় বিজেপি কর্মসূচি পালন করে। এগরার এসিডিপিও মহম্মদ বৈদুজ্জমান বলছেন, ‘‘কোথায় প্রকাশ্যে এই ধরনের কর্মসূচি হয়নি। ঘরের মধ্যে দু-এক জায়গায় কিছু মানুষ এই ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করেছেন।’’
পাঁশকুড়ায় অবশ্য বিজেপি নেতা-কর্মীদের দাবি পুলিশ তাঁদের কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে। বিজেপি’র জেলা কমিটির সদস্য অঞ্জন মাইতির অভিযোগ, ‘‘সামাজিক দূরত্ব মেনেই পাঁশকুড়া ব্লকে কর্মসূচি ছিল। অন্য সময় লকডাউনে পুলিশ এতটা সক্রিয় ছিল না। এ দিনের কড়াকড়িতে কয়েকটি কর্মসূচি বাতিল হয়ে যায়।’’
লকডাউন উপেক্ষা করে জেলাজুড়ে মোটরসাইকেল মিছিলের কথা স্বীকার করলেও বিজেপি জেলা (তমলুক) সভাপতি নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘দলীয় কোনও কর্মসূচি ছিল না। তবে বিভিন্ন এলাকায় দলীয় কর্মীরা নিজেদের মত কর্মসূচি পালন করেছেন। কয়েক জায়গায় মোটর সাইকেল মিছিল হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।’’
লকডাউনে এভাবে মিছিল করা নিয়ে জেলা পুলিশের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, ‘‘তমলুক শহরে একটি পদযাত্রা বের হয়েছিল। তা বুঝিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। লকডাউন ভেঙে মিছিল করার অভিযোগ কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে। তবে মোটর সাইকেল মিছিলের বিষয়টি নজরে নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy