বাসুদেব তুরকালি ও সৌরভ ভুঁইয়া
‘‘পশু হাসপাতাল বন্ধ না থাকলে পাখিটা হয়তো প্রাণে বেঁচে যেত’’— আফসোস করেই কথাটা বলছিল মেদিনীপুর শহরের গোলকুয়াচকের বাসিন্দা বাসুদেব তুরকালি।
মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির এই ছাত্র বাসুদেব তুরকালি আর নবম শ্রেণির স্কুল পড়ুয়া সৌরভ ভুঁইয়াই গত বুধবার উদ্ধার করেছিল ঘুড়ির মাঞ্জায় জখম চিলটিকে। কলেজ মাঠে ঘুড়ির মাঞ্জায় ডানা কেটে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিল চিলটি। মাঠে তখন ক্রিকেট খেলছিল বাসুদেব ও সৌরভ। তারাই সুতো কেটে মুক্ত করে মরমর পাখিটিকে নিয়ে তড়িঘড়ি পৌঁছয় শহরের পশু হাসপাতালে। কিন্তু তখন সন্ধে ছ’টা। হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তারপর স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে শুশ্রূষা করে পাখিটিকে বন দফতরের জিম্মায় দিলেও তাকে প্রাণে বাঁচানো যায়নি।
নিয়মমতো মেদিনীপুরের পশু হাসপাতাল সকাল ন’টা থেকে বিকেল সাড়ে তিনটে পর্যন্ত খোলা থাকে। যদিও বাসুদেবের প্রশ্ন, ‘‘মানুষের জন্য যদি ২৪ ঘন্টা হাসপাতাল খোলা থাকে, তাহলে কেন পশুপাখিদের জন্য থাকবে না?’’ ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় পাড়ারএকটি কুকুর দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিল। বাসুদেব তাকে সেবা-যত্ন করে সুস্থ করে তোলে।
কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্রাবাসেই থাকে সৌরভ। পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের কাজলা গ্রামে তার বাড়ি। সে-ও ছোট থেকে পশুপাখিদের ভালবাসে। কয়েকদিন আগেই স্কুল থেকে ৩টি কুকুরছানাকে ছাত্রাবাসে এনেছে সে। বন্ধুদের বলেছে, ‘আমরা যেমন বাড়ি ছেড়ে, বাবা-মা কে ছেড়ে এখানে আছি, ওদেরও তো এখানে দেখার কেউ নেই। ওদের মারিস না।’ সৌরভও বলছিল, ‘‘সে দিন পশু হাসপাতাল খোলা থাকলে হয়তো পাখিটিকে বাঁচানো যেত।’’
যদিও মেদিনীপুর প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের উপ-অধিকর্তা তুষারকান্তি নস্কর বলেন, ‘‘একমাত্র কলকাতার বেলগাছিয়াতে ২৪ ঘন্টা পরিষেবা দেওয়া হয়। তাছাড়া সারা রাজ্যের কোথাও এমন ব্যবস্থা নেই। পশু চিকিৎসকেরও অভাব রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy