প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। — ফাইল চিত্র।
খোদ মুখ্যমন্ত্রীর নেকনজরে তিনি। সদ্য তাঁকে রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র করা হয়েছে। অথচ মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ পছন্দের সেই প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা নিজের জেলা ঝাড়গ্রামে দলের কোনও সাংগঠনিক পদেই নেই। শুধু ঝাড়গ্রামের বিধায়ক হিসেবে পদাধিকার বলে তিনি জেলা কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
তাহলে কি পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলার রাজনীতিতে তাঁকে কোণঠাসা করা হচ্ছে? তৃণমূলের অন্দরেই শুরু হয়েছে এমন জল্পনা। সম্প্রতি ঝাড়গ্রাম জেলা মহিলা তৃণমূলের নয়া কমিটির তালিকা প্রকাশের পর সেই জল্পনা আরও উস্কেছে।
মহিলা তৃণমূলের জেলা কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকের পদ পেয়েছেন জেলা সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শুভ্রা মাহাতো, বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মামনি মুর্মু, পুরপ্রধান কবিতা ঘোষের মতো অনেকেই। ঝাড়গ্রাম জেলার বেশিরভাগ মহিলা নেত্রীকেই মহিলা তৃণমূলের জেলা কমিটিতে রাখা হয়েছে। তবে ওই কমিটিতে জেলা পরিষদের দু’জন মহিলা কর্মাধ্যক্ষ সুজলা তরাই ও সুপ্রিয়া মাহাতোকে রাখা হয়নি। এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিরবাহা। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল বিষয়টিকে ভাল চোখে দেখছেন না। তাঁদের ক্ষোভ, মহিলা তৃণমূলের জেলা কমিটিতে যখন এক গুচ্ছ সাধারণ সম্পাদক ও সদস্য পদে জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও পুরসভার মহিলা জনপ্রতিনিধিদের রাখা হয়েছে, তাহলে সেখানে মন্ত্রীর নাম নেই কেন?
ঘটনা হল, গত বছর রাজ্য মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে ঝাড়গ্রাম জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী পদ থেকে নিয়তি মাহাতোকে সরিয়ে দিয়ে জেলা সভানেত্রী পদে প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার নাম ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু ২৪ ঘন্টার মধ্যেই তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব সেই বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করে মহিলা তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী পদে নিয়তি মাহাতোকেই বহাল রাখেন। জেলবন্দি দলের রাজ্য নেতা ছত্রধর মাহাতোর স্ত্রী নিয়তির প্রতি তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ সহানুভূতিশীল।
তৃণমূলের অন্দরের খবর, গত বছর ওই ঘটনার পর থেকে বিরবাহা ও নিয়তির মধ্যে সম্পর্ক বেশ শীতল। বিরবাহার ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে নিয়তিকে দেখা যায়নি। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট পেতে নানা স্তরের নেতা-নেত্রীরা ঝাঁপাচ্ছেন। যদিও তৃণমূল সূত্রের খবর, পুরনোদের সরিয়ে এ বার নতুন মুখ আনার চ\ন্তাভাবনা চলছে। সেই অঙ্কেই কি জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত স্তরের জনপ্রতিনিধিদের সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে?
যদিও জেলা তৃণমূলের এক প্রবীণ নেতা জানাচ্ছেন, প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা রাজ্য রাজনীতিতে ও রাজ্য প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ মুখ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু নিচুতলায় একাংশ কর্মী প্রতিমন্ত্রীকে ভুল তথ্য দিয়ে বারে বারে বিভ্রান্ত করছেন। তার জেরে লালগড় ব্লকে প্রতিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে এমন কিছু সাংগঠনিক রদবদল হয়েছে, যা সমস্যা তৈরি করছে।
জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী নিয়তি মাহাতো অবশ্য বলছেন, ‘‘প্রতিমন্ত্রীকে কমিটিতে সহ-সভানেত্রী বা সাধারণ সম্পাদকের পদ দেওয়া হলে সেটা তার পক্ষে মর্যাদা হানিকর। উনি রাজ্যের মন্ত্রী। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত স্তরের জনপ্রতিনিধিদের মেয়াদ আর মাত্র কয়েক মাস। তাই সংগঠনের স্বার্থে তাঁদের পদ দিয়ে কমিটিতে রাখা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy