ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ পরিদর্শনে গিয়ে এক বৃদ্ধ রোগীকে হুইল চেয়ার ঠেলে ডায়ালিসিস ওয়ার্ডে নিয়ে যাচ্ছেন মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা।
সপ্তাহান্তের বিকেলে আচমকাই ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়েছিলে মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। পৌঁছে মন্ত্রী জানতে পারেন, মেডিক্যাল সুপার অনুপস্থিত। কারণ, বৃহস্পতিবারই তিনি কলকাতার বাড়িতে চলে গিয়েছেন। নেই মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপ্যালও। হাসপাতাল চত্বর জুড়ে কেবলই ‘কর্তা গেল ঘর, লাঙল তুলে ধর’ অবস্থা। শেষে এক বৃদ্ধ রোগীকে নিজেই হুইল চেয়ার ঠেলে ডায়ালিসিস ওয়ার্ডে নিয়ে পৌঁছে দেন মন্ত্রী। শনিবার বিকেলে হাসপাতালের অব্যবস্থার চিত্র দেখে ক্ষুব্ধ বিরবাহা।
রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী বিরবাহার কথায়, ‘‘শুনলাম নতুন সুপার নাকি সপ্তাহে মাত্র চারদিন থাকেন। হাসপাতাল চত্বর অপরিচ্ছন্ন। পুরনো ভবনের দোতলায় ডায়ালিসিসের জায়গায় জল জমে রয়েছে। হাসপাতালের কর্তৃপক্ষই যদি প্রতি সপ্তাহে এ ভাবে বাড়ি চলে যান, তা হলে কর্মীরা কী শিখবেন! বিষয়টি লিখিত ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনব।’’ প্রসঙ্গত, গত বছর ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উন্নীত হয়। চলতি বছরের জুলাইয়ে সুপার স্পেশালিটির বিদায়ী সুপারের কাছ থেকে দায়িত্বভার বুঝে নেন নতুন মেডিক্যাল সুপার তথা ভাইস-প্রিন্সিপ্যাল গৌতমেশ্বর মজুমদার। এখন হাসপাতাল পরিচালনার সার্বিক দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। অন্য দিকে, মেডিক্যাল কলেজটির দায়িত্বে রয়েছেন প্রিন্সিপ্যাল সুদেষ্ণা মজুমদার। যদিও পরিকাঠামোগত খামতির কারণে চলতি শিক্ষাবর্ষে মেডিক্যাল কলেজে পঠনপাঠনের অনুমোদন দেয়নি ন্যাশন্যাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি)।
হাসপাতালে যথাযথ পরিষেবা মিলছে না, এ ব্যাপারে কয়েকদিন আগেই অভিযোগ পেয়েছিলেন বিরবাহা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে, শনিবার বিকেলে নিজেই সটান হাসপাতালে পৌঁছন বিরবাহা। কথা বলেন রোগী ও তাঁদের পরিজনদের সঙ্গে। ঘুরে দেখেন হাসপাতাল চত্বরও। পুরনো ভবনের দোতলায় ডায়ালিসিস ইউনিট লাগোয়া ঘরে জল জমে রয়েছে দেখে কার্যত বিরক্ত তিনি। যদিও মেডিক্যাল সুপার গৌতমেশ্বর মজুমদার বলছেন, ‘‘শুক্রবারই হাসপাতাল চত্বর ভাল করে পরিষ্কার করা হয়েছে।’’ তিনি নিয়মিত হাসপাতাল করেন না, বাড়ি চলে যান, মন্ত্রীর এমন অভিযোগের প্রসঙ্গে মেডিক্যাল সুপার বলেন, ‘‘এ বিষয়ে যা বলার প্রিন্সিপ্যাল বলবেন।’’ মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপ্যাল সুদেষ্ণা মজুমদারকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি শুধু বলেন, ‘‘মন্ত্রী গিয়েছিলেন। সমস্ত পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। এ নিয়ে আর চিন্তা করবেন না। ধন্যবাদ।’’ এটুকু বলেই ফোন কেটে দেন সুদেষ্ণা।
বিরবাহা অবশ্য বলছেন, ‘‘হাসপাতালের অপরিচ্ছন্নতার ছবি তুলে এনেছি। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠাব। মেডিক্যাল সুপার ও অধ্যক্ষ দু’জনে কেন এ ভাবে একসঙ্গে স্টেশন লিভ করবেন? বাড়ির প্রতি যদি এতই টান, তা হলে চাকরি ছেড়ে দিয়ে তাঁরা বাড়িতে থাকুন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy