পার্সেল ভ্যানে ভিন্ রাজ্যে পাঠানো হচ্ছে পান। নিজস্ব চিত্র
করোনা মোকাবিলায় লকডাউন ঘোষণায় ২৪ মার্চ থেকে যাত্রীবাহি দূরপাল্লার ট্রেন-সহ বিভিন্ন যানবাহন ও অধিকাংশ দোকান বন্ধ ছিল। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় পান বাজারও বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা পান কেনা বন্ধ করে দেন। বিপাকে পড়েন কয়েক হাজার পানচাষি। তবে ৭ এপ্রিল থেকে রাজ্য সরকার পান বেচাকেনার জন্য পান বাজার খোলার ছাড়পত্র দিয়েছে।
কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জেরে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে পানের চাহিদা কমায় ও ট্রেন-লরিতে করে পান রফতানির সুযোগ না থাকায় তমলুক সহ বিভিন্ন পান বাজার খোলা যায়নি। শেষ পর্যন্ত রেল দফতর ভিন্ রাজ্য আনাজ, ফল ও ওষুধ সহ জরুরি সামগ্রী বহনের জন্য যে ‘পার্সেল এক্সপ্রেস’ চালাচ্ছে তাতে পান বহনের ব্যবস্থা করেছে। ফলে মহারাষ্ট্র, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, অসম প্রভৃতি রাজ্যে ফের পান রফতানির পথ খুলেছে। এতে স্বস্তিতে জেলার পানচাষি থেকে ব্যবসায়ীরা।
তবে পান ব্যবসায়ীরা জানান, করোনা পরিস্থিতির জেরে ওই সব রাজ্যে অধিকাংশ পানের দোকান বন্ধ থাকায় পানের চাহিদা খুব কম। ফলে সেইমতো রফতানি করা হচ্ছে। এর জন্য স্থানীয়ভাবে চাষিদের কাছ থেকে পান কিনে পাঠানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। গত ১১ এপ্রিল থেকে মেচেদা স্টেশন থেকে অল্প পরিমাণ পান ভিন রাজ্যে পাঠানো শুরু হয়। তবে ৩ মে দ্বিতীয় দফায় লকডাউনের শেষে কেন্দ্র সরকার দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ‘গ্রিন জোনে’ দোকানপাট খোলায় ছাড় দেওয়ায় পানের চাহিদা কিছুটা বাড়ায় রফতানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও তা খুব আশাব্যঞ্জক নয়, তবু রফতানি শুর হওয়ায় তাঁরা স্বস্তি পেয়েছেন। চাষিদের কাছ থেকে স্থানীয়ভাবে পানও কিনে নেওয়া হচ্ছে।
রেল দফতর সূত্রে খবর, এখন মুম্বই, সুরাত, পোরবন্দর, বেঙ্গালুরু, যশবন্তপুর, হায়দরাবাদ, চেন্নাই ও গুয়াহাটি-সহ বিভিন্ন জায়গায় পার্সেল এক্সপ্রেসে পান পাঠানো হচ্ছে। মেচেদা রেল স্টেশনের বুকিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সচিন দত্ত বলেন, ‘‘আগে বিভিন্ন এক্সপ্রেস ট্রেনে মেচেদা স্টেশনে প্রতিদিন মোট ৬০-৭০ টনের মতো পান তুলে ভিন রাজ্যে পাঠানো হত। এখন ২০-২৫ টন পান পাঠানো হচ্ছে। তবে রফতানি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে, এটাই আশার কথা।’’ পান ব্যবসায়ীদের সংগঠন পূর্ব মেদিনীপুর বিটল ট্রেড্রারস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুকান্ত আদক বলেন, ‘মহারাষ্ট্র, গুজরাত, তামিলনাড়ু ও কর্নাটকে মূলত গ্রিন জোনে অল্প পান পাঠানো হচ্ছে। তুলনায় অসমে কিছু বেশি পান রফতানি হচ্ছে। বিহার, উত্তরপ্রদেশে অল্প পান যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা চাষিদের কাছ থেকে অল্প পরিমাণ পান কিনছেন। তবে পানের বাজারদর খুব কম।’’
নন্দকুমার ব্লকের বহিচবেড়িয়া গ্রামের পানচাষি লক্ষ্মীকান্ত মাইতির কথায়, ‘‘লকডাউনের আগে বাজারে ১০ হাজার পান ১০ হাজার টাকা দরে বিক্রি করেছিলাম। কয়েকদিন আগে ১০ হাজার পান মাত্র ২ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। তবে কম দাম হলেও পান বিক্রি শুরু হওয়ায় অনেক স্বস্তি পেয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy