রক্ষীহীন: তমলুক জেলা হাসপাতালে জরুরি বিভাগের সামনে। নিজস্ব চিত্র
হাসপাতালের ইনডোরে ভর্তি থাকে গড়ে প্রায় সাড়ে পাঁচশো রোগী। আর বহির্বিভাগে প্রায় এক হাজারের বেশি রোগীর ভিড়। এহেন জনবহুল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতালের নিরাপত্তায় মাত্র একজন সশস্ত্র পুলিশ ও দু’জন এনভিএফ। আর হাসপাতালে অবাঞ্ছিতদের প্রবেশ রুখতে রয়েছেন ১২ জন বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী।
খোদ জেলা হাসপাতালে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ না থাকা নিয়ে আগে থেকেই অভিযোগ ছিল। কিন্তু কলকাতার এসআরএস কাণ্ডের প্রেক্ষিতে সেই অভিযোগ আরও জোরাল হয়েছে। শুধু জেলা হাসপাতালই নয়, জেলায় যে সব সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, মহকুমা হাসপাতাল রয়েছে সেখানেও চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনার জন্য আজ, বৃহস্পতিবার জেলাশাসকের অফিসে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, পুলিশ সুপার ও জেলার সাতটি হাসপাতালের সুপারদের নিয়ে বৈঠক হবে।
এনআরএস হাসপাতালে চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনায় চিকিৎসকদের আন্দোলনে কলকাতা-সহ রাজ্যের সব জেলা হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের পরেই কলকাতার হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তাজনিত সমস্যায় সাহায্যের জন্য কলকাতা পুলিশ হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে। সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজ সহ সমস্ত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক,নার্স, স্বাস্থ্য কর্মী ও রোগীর নিরাপত্তাজনিত সমস্যায় সাহায্য চাওয়ার জন্য হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে। সপ্তাহে সাতদিন ২৪ ঘণ্টাই হেল্পলাইন চালু থাকবে। এর ফলে হাসপাতালে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনও সমস্যা দেখা দিলে পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ করতে পারবে বলে দাবি করা হয়েছে।
তবে বুধবার পর্যন্ত জেলার হাসপাতালগুলিতে পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে তেমন কোনও বড় পরিবর্তন চোখে পড়েনি। জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক তথা ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের তাম্রলিপ্ত শাখার সম্পাদক যুগলচন্দ্র মাইতি বলেন, ‘‘এনআরএস হাসপাতালের মতো ঘটনা রুখতে জেলার সমস্ত হাসপাতালে পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তার প্রয়োজন। আমরা সংগঠনগতভাবে জেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছি।’’
হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে পুলিশের একজন সিভিক ভলান্টিয়ার থাকেন। আর ১৩ জন বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী রয়েছে। সুপার সুমনা সাঁতরা বলেন, ‘‘পুলিশি নিরাপত্তা বাড়াতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’ কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের নিরাপত্তা বলতে দুজন সিভিক ভলান্টিয়ার আর ১৬ জন বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী। এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালেও মাত্র দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার পাহারায় থাকেন। হাসপাতালের এক আধিকারিক জানান, গোলমাল হলে এগরা থানা থেকে সশস্ত্র পুলিশ আসে।’’
নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে বেসরকারি সংস্থার ২৫ জন নিরাপত্তা রক্ষী রয়েছে। তবে নন্দীগ্রাম থানা থেকে পুলিশ মাঝেমধ্যে হাসপাতালে ঘুরে যায়। গোটা হাসপাতাল জুড়ে রয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। এমনটাই দাবি করলেন হাসপাতালের সুপার আদিত্য মুদি। পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ১৪ জন নিরাপত্তাকর্মী রয়েছেন। এনআরএসের ঘটনার পর আরও ২ জন সিভিক ভলান্টিয়ার রাখা হয়েছে বলে জানালেন সুপার শচীন্দ্রনাথ রজক।
জেলার হাসপাতালগুলিতে পুলিশি নিরাপত্তার অভাব নিয়ে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘এবিষয়ে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের তরফে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy