Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

সময় কম, পুজোর বায়না মেটাতে ব্যস্ত মণ্ডপশিল্পীরা

মণ্ডপ শিল্পের জন্য রাজ্যে বরাবরই খ্যাতির প্রথম সারিতে রয়েছে কাঁথি।

কাচ কেটে নকশা তৈরি করছেন মণ্ডপশিল্পীরা। নিজস্ব চিত্র

কাচ কেটে নকশা তৈরি করছেন মণ্ডপশিল্পীরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:২২
Share: Save:

শরতের আকাশ দেখে সকলের পুজোর আনন্দে মেতে ওঠার ধুম শুরু হয়ে গেলেও ওঁদের কিন্তু নাওয়া-খাওয়ার সময় থাকে না। ওঁরা মানে-কাঁথির মণ্ডপ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষগুলোর। দিনরাত ঘাম ঝরিয়ে দর্শকদের মনোরঞ্জনে কয়েক শো জোড়া হাত ব্যস্ত মণ্ডপের নকশা আর কারুকাজে।

মণ্ডপ শিল্পের জন্য রাজ্যে বরাবরই খ্যাতির প্রথম সারিতে রয়েছে কাঁথি। আর দুর্গাপুজো মানেই এখানকার মণ্ডপশিল্পীদের কাছে চরম ব্যস্ততার দিন। ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে এখানকার মণ্ডপশিল্পীদের নিয়ে যাওয়া হয় মণ্ডপ তৈরির জন্য। কাঁথি শহরের রাজাবাজার, শনি মন্দির, দইসাই-এর মতো এলাকায় মণ্ডপশিল্পীরা কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন দুর্গাপুজোর মাস পাঁচেক আগে থেকেই। শুরু হয়ে যায় বিভিন্ন পুজোর উদ্যোক্তাদের ফরমায়েশ মতো বিভিন্ন মাধ্যমে (কাঠ, বাঁশ, বেত, কাপড়) মণ্ডপের নকশা ফুটিয়ে তোলার কাজ। যা কার্যত পুজোর আগে এখানকার বেকার যুবক যুবতীদের রোজগারের অন্যতম দিশা। কোথাও কাচের উপরে নকশা, কোথাও কাচ কেটে নকশা তৈরির পাশাপাশি আনাজের ঝুড়ি কিংবা তার সঙ্গে চটে নানা রঙের নকশা ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে পুজোর মণ্ডপের জন্য। আর এই সব কাজের জন্য লোকলস্করও দরকার হয় অনেক। তাই এলাকার যুবক-যুবতীদের পুজোর আগের মাস পাঁচেক সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুজিত বেরা নামে এক ডেকরটরের কথায়, ‘‘এক সময় ভিন রাজ্যে দুগাপুজোর মণ্ডপ তৈরির প্রচুর বায়না পেয়েছি। এ বছর দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং কোচবিহারের দুটি বড় বাজেটের মণ্ডপ তৈরি করছি। তার জন্য জুন মাস থেকে প্রাথমিক কাজকর্ম সেরে ফেলতে হচ্ছে। হাতের কাজ জানা বহু ছেলেমেয়ে জোগাড় করে বাড়িতে অস্থায়ী তাঁবু তৈরি করে মণ্ডপের নানা নকশা তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি মূল মণ্ডপ তৈরির কাজ চলছে জোরকদমে।’’

কুমারপুর এলাকায় এক মণ্ডপ শিল্পী পিঙ্কি বারিক বলেন, ‘‘মণ্ডপের কাজের জন্য রোজ তিনশো টাকা মজুরি পাই। বছরের পাঁচ মাস এভাবে যা উপার্জন করি তা দিয়েই সারা বছর সংসারটা কোনওরকম চলে যায়।’’ তপতী মাইতি নামে এক মহিলা শিল্পী বলেন, ‘‘স্বামী ট্রলারে মাছ ধরতে যায়। কিন্তু এ বছর বৃষ্টি সেরকম না থাকায় ট্রলার খুব একটা বেরোতে পারেনি। তাই বলে সংসারের খরচ তো আর কমবে না। তাই পেটের তাগিদে মণ্ডপের নকশা তৈরির কাজ করছি।’’

ভবশঙ্কর মণ্ডল নামে আর এক কর্মীর দাবি, ‘‘পাঁচ বছর ধরে মণ্ডপের নকশার কাজ করছি। তাতে পুজোর আগে যা আয় হয়, তা থেকে ছেলেমেয়ে এবং সংসারের খরচ সামাল দিই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2019 Pandals
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE