আবেদনের লাইন। ঝাড়গ্রাম মহকুমা শাসকের অফিস চত্বরে। নিজস্ব চিত্র
প্রয়োজন হলে লাগানো হবে কাজে। মিলবে দিন প্রতি মজুরি। তবে তার আগে নিতে হবে প্রশিক্ষণ। ‘আপদ মিত্র’ প্রকল্পে সেই উচ্চ প্রশিক্ষণের জন্য চাওয়া হয়েছিল আবেদন পত্র। কিন্তু বাজারে রটে যায় চাকরির জন্য আবেদন পত্র চাওয়া হয়েছে। ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। দুয়ারে যখন কড়া নাড়ছে করোনার চতুর্থ ঢেউ তখন ঝাড়গ্রাম মহকুমা শাসকের অফিসের সামনে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়েছে লাইন।
‘আপদ মিত্র’ প্রকল্পে উচ্চ প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন পত্র চাওয়া হয়েছিল। সিভিল ডিফেন্স ভলান্টিয়ার, এনওয়াই কেএস, এনসিসি, এনএসএস ভারত স্কাউট প্রশিক্ষণ এই পাঁচটি বিভাগের যে কোনও একটি বিভাগে প্রশিক্ষণ থাকতে হবে আবেদনকারীদের। গত ১৭ জুন থেকে ৮ জুন পর্যন্ত আবেদন পত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা ছিল। এমনকি এ জন্য এক্ষেত্রে ১৮ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে বয়সসীমা উল্লেখ করা ছিল। কিন্তু ‘চাকরি’ ভেবে বিভিন্ন বয়সীর লোকজন আবেদন পত্র জমা দিয়েছেন। শুক্রবার ভোর থেকেই মহকুমা শাসকের অফিসের সামনে লম্বা লাইন পড়ে যায়। মহকুমা শাসক বাবুলাল মাহাতো বলেন, ‘‘২৮ হাজারের বেশি আবেদন পত্র জমা পড়েছে। যার মধ্যে অনেকেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়। এত প্রচার করার পর ভুয়ো রটে যাওয়ার জন্য চাকরি ভেবে এত আবেদন পত্র জমা পড়েছে।’’ মহকুমা শাসকের দাবি, ‘‘২৮ হাজারের মধ্যে মাত্র এক হাজার জনের হয়তো প্রশিক্ষণ রয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কারা রয়েছেন তা বাছাই করার পর ইন্টারভিউর মাধ্যমে ১০০ জনের নাম চূড়ান্ত করে উচ্চ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এটা কোনও চাকরি নয়।’’
প্রশিক্ষণের পর বিপর্যয়ের সময় প্রয়োজন হলে কাজে লাগানো হবে এই ‘আপদ মিত্র’দের। সে সময় দৈনিক কাজের ভিত্তিকে মিলবে পারিশ্রমিক। প্রশাসনের দাবি, প্রচার সত্ত্বেও এই কাজকে চাকরি ভেবে ভুল করেছেন আবেদনকারীদের অনেকেই। বিরোধীদের কটাক্ষ, এ ধরনের কাজে বিপুল আবেদনই প্রমাণ করে আদতে রাজ্যে কর্মসংস্থানের হাল কী।
নিয়ম হল এই প্রকল্পে আবেদনকারীকে অবশ্যই ঝাড়গ্রাম জেলার বাসিন্দা হতে হবে। আবেদন পত্রের সঙ্গে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও মেডিক্যাল ফিট সার্টিফিকেট প্রয়োজন। আর এই মেডিক্যাল ফিট সার্টিফিকেট নিতে গিয়ে টাকা দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলা পুলিশের শীর্ষ মহলে সমাজমাধ্যমে ওই অভিযোগে জানানো হয়েছে, সাঁকরাইল ও তপসিয়ার চিকিৎসকদের একাংশ কোনও পরীক্ষা না করেই ২০০ টাকা নিয়ে সার্টিফিকেট দিচ্ছেন। যদিও এ ব্যাপারে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।’’
শুধু তপসিয়া বা সাঁকরাইল নয়। জেলা জুড়েই বিভিন্ন জায়গা কোনও পরীক্ষা-নিরিক্ষা না করেই টাকার বিনিময়ে ফিট সার্টিফিকেট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শিলদা গ্রাম পঞ্চায়েতের কামারবান্দি গ্রামের এক যুবক বলেন, ‘‘আমি শিলদা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাছে এক চিকিৎসকের কাছে ফিট সার্টিফিকেট নিতে গিয়েছিলাম। কোনও পরীক্ষা ছাড়াই উনি ১০০ টাকা নিয়ে সার্টিফিকেট দিয়েছেন।’’ তবে তপসিয়ার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কিংশুক রায় বলেন, ‘‘টাকা নেওয়ার বিষয়টি শুনেছি। তবে আমার কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি।’’ সাঁকরাইলের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বাসববিজয় শীট এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy