করমর্দন। অজিত প্রসাদ মাহাতো (বাঁদিকে) ও অনুপ মাহাতো। রবিবার পুরুলিয়ায়। — নিজস্ব চিত্র।
জল্পনা ছিল তিনি তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন। আদিবাসী নেগাচারী কুড়মি সমাজের নেতা অনুপ মাহাতো নিজেই জানিয়েছিলেন, জল্পনার অবসান ঘটাবেন ২১ জুলাই। কিন্তু রবিবার কলকাতামুখো হলেন না অনুপ। বরং সপার্ষদ পুরুলিয়ায় হাজির হয়ে অনুপ যোগ দিলেন অজিতপ্রসাদ মাহাতোর নেতৃত্বাধীন আদিবাসী কুড়মি সমাজে। এর ফলে আপাতত আদিবাসী নেগাচারী কুড়মি সমাজ মিশে গেল আদিবাসী কুড়মি সমাজের সঙ্গে।
এ দিন বাসে শতাধিক কর্মী ও সংগঠনের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে নিয়ে পুরুলিয়া শহরের ভবতারণ সরকার রোডে আদিবাসী কুড়মি সমাজের সদর কার্যালয়ে পৌঁছন অনুপ। আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূলমানতা (মুখ্য উপদেষ্টা) অজিতপ্রসাদ মাহাতোর সঙ্গে বৈঠকে বসেন অনুপ ও তাঁর সংগঠনের নেতা-নেত্রীরা। প্রায় ঘণ্টা তিনেক বৈঠকের পর অজিতপ্রসাদ আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘ওরাও একটা কুড়মি সামাজিক সংগঠন। আজ আমাদের সঙ্গে ওরা মিশে গেল। জাতিসত্তার দাবিতে আমরা একযোগে আন্দোলন করব।’’ তবে অজিতপ্রসাদ জানান, আগামী ২৮ জুলাই বান্দোয়ানে আদিবাসী কুড়মি সমাজের কর্মসমিতির এক বর্ধিত বৈঠকে দু’টি সংগঠনের সংযুক্তিকরণের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হবে। অজিত জানান, তাঁদের লক্ষ্য এক। ইতিমধ্যে জাতিসত্তার স্বীকৃতির দাবিতে ২০ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের আদ্রা-চান্ডিল শাখার কুস্তাউর স্টেশনে লাগাতার ‘রেল রোকো’ আন্দোলন হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন অজিত।
জাতিসত্তার দাবি নিয়ে কুড়মি সংগঠনগুলি কখনও কাছে এসেছে আবার কখনও পরস্পরের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। লোকসভা ভোটের আগে অজিতপ্রসাদ ও অনুপের সংগঠন মিলিত ভাবে ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছিল। শেষবেলায় দু’টি সংগঠন পৃথক দু’জন প্রার্থী দেয়। দু’জন প্রার্থীরই জামানত জব্দ হয়। অনুপের বিরুদ্ধে আবার তৃণমূল ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তুলেছিল অন্য একাধিক কুড়মি সংগঠন। লোকসভা ভোটে তাঁদের সংগঠনের মনোনীত প্রার্থীর পরাজয়ের দায় নিয়ে কিছুদিন আগে আদিবাসী নেগাচারী কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন অনুপ। তারপর কলকাতার ক্যাম্যাক স্ট্রিটে দাঁড়িয়ে সমাজমাধ্যমে নিজের ছবি পোস্ট করেন। তৈরি হয় জল্পনা। কারণ, তৃণমূলের রাজ্যসভার এক সাংসদের সঙ্গে অনুপের ঘনিষ্ঠতার কথা জানা যায়। অনুপও জানিয়ে দেন, তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপ ২১ জুলাই ঘোষণা করবেন।
এ দিন অবশ্য চমক দিয়ে পুরনো সংগঠনে সপার্ষদ ফিরলেন অনুপ। কারণ, অনুপ আগে আদিবাসী কুড়মি সমাজেই ছিলেন। গত বিধানসভা ভোটে কুড়মিদের ভোটে দাঁড়ানোর সওয়াল করে আদিবাসী কুড়মি সমাজ থেকে বহিষ্কৃত হন অনুপ। পরে অনুপ আদিবাসী নেগাচারী কুড়মি সমাজ গঠন করেন। এ বার সপার্ষদ পুরনো সংগঠনে ফিরলেন অনুপ! অনুপ বলছেন, ‘‘জাতিসত্তার দাবি আদায়ে কুড়মি সংগঠনগুলির এক ছাদের তলায় আসা দরকার। শুরুটা আমিই করলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy