Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Laxmi Bhandar Scheme

Laxmi Bhandar: লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকায় পড়ুয়াদের পাখা

পাঁশকুড়া পুর এলাকার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে চাঁপাডালি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ভবনটি ৩৫ বছরের পুরনো।

স্কুলে পাখা দিচ্ছেন প্রতিমা। নিজস্ব চিত্র

স্কুলে পাখা দিচ্ছেন প্রতিমা। নিজস্ব চিত্র

দিগন্ত মান্না
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২২ ০৭:০০
Share: Save:

কয়েকদিন ধরে নাগাড়ে তাপপ্রবাহে প্রাণ ওষ্ঠাগত। আগামী ২ মে থেকে স্কুল-কলেজে গরমের ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।তার আগে থেকেই অবশ্য পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় প্রাইমারি স্কুলগুলি সকালে বসছে। জেলায় এখনও বহু স্কুলেই পর্যাপ্ত পাখা নেই। পাঁশকুড়া পুর এলাকার চাঁপাডালি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মি়ড ডে মিল খাওয়ার জায়গায় কোনও পাখা না থাকায় গরমের মধ্যে খুবই কষ্ট হচ্ছিল পড়ুয়াদের। তাদের কষ্ট দূর করতে এগিয়ে এলেন প্রতিমা সামন্ত নামে এক মহিলা। লক্ষ্মীর ভান্ডারে পাওয়া টাকা জমিয়ে স্কুলের ডাইনিং হলের জন্য দু'টি পাখা কিনে দিয়েছেন তিনি। মহিলার উদ্যোগে খুশি স্কুল কর্তৃপক্ষ।

পাঁশকুড়া পুর এলাকার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে চাঁপাডালি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ভবনটি ৩৫ বছরের পুরনো। ইটের দেওয়াল, ছাউনির কিছুটা টালি, কিছুটা টিন এবং কিছুটা অংশে রয়েছে অ্যাসবেস্টস।কাঠামো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় স্কুলের দুয়ারের বেশ কিছুটা অংশের ছাউনি খুলে দিতে হয়েছে। ভবনটির বেশ কিছু অংশে ফাটল ধরেছে। বিপজ্জনক স্কুল ভবনেই তিনটি ক্লাসের পঠন পাঠন চলে। বহু আবেদন জানিয়েও স্কুল ভবনটি সংস্কারে কোনও অর্থ বরাদ্দ হয়নি বলে অভিযোগ স্কুল কর্তৃপক্ষের। স্কুলের সমস্ত ক্লাসরুমেই রয়েছে পাখা। তবে স্কুলের ডাইনিং হলে কোনও পাখা না থাকায় গরমে পড়ুয়াদের মিড ডে মিল খেতে অসুবিধা হয়। অত্যধিক গরমে অনেক পড়ুয়াই মিড ডে মিল খায় না বলেও দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের।

বিষয়টি নজরে আসে প্রতিমা সামন্ত নামে স্থানীয় এক মহিলার। তাঁর একমাত্র মেয়েও ওই স্কুলের ছাত্রী। সংসারের কাজের অবসরে প্রতিমা গাঁদা ফুলের মালা গাঁথার কাজ করেন। মেয়ের কাছে মাঝেমধ্যেই শুনতেন তার ও সহপাঠীদের কষ্টের কথা। ঠিক করেন পড়ুয়াদের মিড ডে মিল খেতে যাতে গরমে কষ্ট না হয় সে জন্য তিনি নিজের লক্ষ্মীর ভান্ডারের জমানো টাকায় দুটি সিলিং ফ্যান কিনে দেবেন। নিজের মনের কথা তিনি স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানালে তাঁরাও রাজি হয়ে যান। প্রতিমার কথায়, ‘‘স্বামীর একটি ছোটখাট সোনার দোকান রয়েছে।আমি নিজে ফুলের মালা তৈরির কাজ করি। সংসারটা মোটামুটি চলে যায়।গরমের সময় স্কুলের কচি ছেলেমেয়েরা যাতে মিড ডে মিল খেতে কোনও অসুবিধায় না পড়ে তাই আমি লক্ষ্মীর ভান্ডারের ৩ হাজার টাকায় স্কুলকে দুটি পাখা কিনে দিয়েছি।’’

প্রতিমার উদ্যোগে খুশি স্কুলের শিক্ষকরা। প্রধান শিক্ষক দিব্যেন্দু দোলই বলেন, ‘‘উনিও একজন অভিভাবক। নিজের লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা জমিয়ে স্কুলকে দুটি পাখা দিয়েছেন।পাখাগুলি আমরা স্কুলের ডাইনিং হলে লাগাব।ওঁর এই উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়।’’

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান হবিবুর রহমান বলেন, ‘‘আমরা অধিকাংশ স্কুলেই ফ্যান ও বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছি।তবে কিছু কিছু জায়গায় এখনও ঘাটতি রয়েছে। তবে ওই মহিলার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। জেলার একাধিক স্কুল ভবন মেরামতির প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের জন্য রাজ্যের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে ধাপে ধাপে সমস্ত স্কুল ভবনই মেরামত করে দেওয়া হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Laxmi Bhandar Scheme Panskura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE