গাড়িকে ধাক্কা দিচ্ছে খড়ু। নিজস্ব চিত্র
সাত সকালে জনতার তাড়া খেয়ে হঠাৎ মেজাজ বিগড়ে গেল খড়ু-র!
ক্ষিপ্ত খড়ু রাজ্য সড়কে একটি ওষুধবাহী গাড়িকে ধাক্কা মেরে উল্টে দিল। অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন ওই গাড়ির চালক ও খালাসি। যাত্রীবাহী দু’টি বাসকেও ধাক্কা দিয়ে যাত্রীদের হৃদকম্প তুলে দিল। একাধিক লরির ত্রিপল ছিঁড়ে খুঁজল খাবার। খড়ুর তাড়া খেয়ে পালাতে গিয়ে জখম হয়েছেন এক পুলিশকর্মীও। পরে জঙ্গলের দিকে যাওয়ার সময়ে এক যুবককে লাথি মেরে জখমও করেছে খড়ু। শুক্রবার সকালে রেসিডেন্ট হাতিটির এমন মেজাজ দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছেন ঝাড়গ্রামের গড়শালবনি ও জিতুশোল এলাকার বাসিন্দারা। আপাত শান্ত খড়ুর এমন আচরণে চিন্তিত বন দফতরও। বনকর্মীদের একাংশ বলছেন, হাতিটি খাবারের খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে। তাড়া খেয়ে বিফল হচ্ছে। একাংশ বাসিন্দা হাতি তাড়ানোর নামে খড়ুকে উত্যক্ত করছেন। সেই কারণেই মেজাজ হারিয়ে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে সে।
লোধাশুলি-ঝাড়গ্রাম ৫ নম্বর রাজ্য সড়কে খড়ুর আনাগোনা এখন গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে এলাকাবাসীর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে জঙ্গলের দিক থেকে এসে অন্য দিনের মতো এদিনও পণ্যবাহী লরি থামিয়ে খাবার খুঁজছিল খড়ু। ফলে লোধাশুলি-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শুরু হয় যানজট। অত্যুসাহীরা মোবাইল ফোনে ছবি-ভিডিয়ো তুলছিলেন। কেউ আবার ইটপাটকেলও ছোড়েন। গড়শালবনি পেট্রোল পাম্পের কাছে একটি অনলাইন মেডিক্যাল সংস্থার ওষুধবাহী গাড়িকে যেতে দেখে থমকে দাঁড়ায় খড়ু। তারপর তেড়ে আসে। খড়ু আচমকা গাড়িটিকে ধাক্কা মেরে উল্টে দেয়। গাড়ির ভিতরে আটকে পড়েন চালক নিরঞ্জন বারজিৎ ও খালাসি সৌমেন দাস। খড়ুকে তাড়িয়ে দিয়ে চালক ও খালাসিকে উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। তবে দু’জনের তেমন চোট লাগেনি। বন দফতরের সহযোগিতায় গাড়িটিকে সোজা করে ঝাড়গ্রামের গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ দিন খড়ু দু’টি যাত্রীবাহী বাসকেও ধাক্কা দেয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। চা খেয়ে বেরিয়ে খড়ুর তাড়া খেয়ে পালানোর সময় পড়ে অসুস্থ হন জিতুশোল সশস্ত্র পুলিশ ক্যাম্পের এক সিআইএসএফ (কাউন্টার ইনসার্জেন্সি ফোর্স) জওয়ান। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বিকাশভারতীর কাছে রোহিনী-ঝাড়গ্রাম রুটের একটি বাসের জানালায় শুঁড় গলিয়ে দেয়। যাত্রীরা ভয়ে বাস ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে কাছেই একটি অতিথিশালা চত্বরে আশ্রয় নেন। জিতুশোলের একটি চালকলেও হানা দিয়েছিল। পণ্যবাহী লরির ত্রিপল ছিড়ে খোবার খোঁজে খড়ু। এ দিন তাড়া খেয়ে খড়ু গড়শালবনি-কয়মা রাস্তা ধরে শিরষির দিকে চলে যায়। সকাল আটটা নাগাদ শিরষি গ্রামের বাসিন্দা দুলাল মাহাতো নামে এক যুবককে সামনে পেয়ে লাথি মারে খড়ু। জখম দুলালকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
ডিএফও (ঝাড়গ্রাম) বাসবরাজ হলেইচ্চি বলেন, ‘‘কেন রেসিডেন্ট হাতিটি এমন আচরণ করল সেটা হাতিটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে। হাতিকে উত্যক্ত করলে তখন সে যানবাহন ও মানুষজনকে দেখলে আত্মরক্ষার জন্য প্রত্যাঘাতের চেষ্টা করে। ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy