রিসর্টে হাতি। নিজস্ব চিত্র Ranjan Pal
সারাদিনের স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে যখন বাড়িতে গিয়ে বিশ্রাম করার কথা, তখন তিনি পৌঁছন স্কুলে। আবার সকালে যখন স্কুলের পৌঁছনোর কথা তখন তাঁর অবস্থান রিসর্টে। যাবতীয় কাজ-পড়াশোনা থেকে দূরে নিখাদ বিশ্রাম। এ যেন স্কুলের অবাধ্য কোনও পড়ুয়ার নিত্যদিনের ‘রুটিন’! কিন্তু এ ক্ষেত্রে প্রধান চরিত্রটি একটি রেসিডেন্সিয়াল হাতি।
শহর লাগোয়া এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে একটি রেসিডেন্সিয়াল হাতি। বৃহস্পতিবার রাতে শহরে ঢোকার পর শুক্রবার ভোরে শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত একটি রিসর্টে ঢুকে পড়ল সেই দাঁতাল। তারপর ঘণ্টা চারেক রিসর্টে বিশ্রাম নেয় সে। সব দেখেশুনে অনেকে মজা করে বলছেন, পর্যটক হিসেবে রিসর্টে বোধহয় বেড়াতে এসেছিল দাঁতালটি। যদিও শহরে হাতি ঢোকায়, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে দাঁতাল হাতিটি পেপার মিলে মোড়ে চলে আসে। সেখানে হাতিটিকে দেখতে ভিড় জমান মানুষজন। পরে হাতিটি তাড়া খেয়ে শহরের সারদাপীঠ কন্যাগুরুকুলের গেট ভেঙে ঢুকে পড়ে। সেখানে ঢুকে কাঁঠাল ও আম খেয়ে সাবাড় করে দেয় হাতিটি। পরে হাতিটি বেরিয়ে জঙ্গলের দিকে যায়। তারপর এ দিন ভোর সাড়ে পাঁচ নাগাদ রিসর্টে ঢুকে পড়ে হাতিটি। রিসর্টে থাকা বিভিন্ন গাছ খেয়ে ও ভেঙে নষ্ট করে সে। তবে এ দিন রিসর্টে কোনও পর্যটক ছিলেন না। চার ঘণ্টা রিসর্টে দাঁড়িয়ে থাকে হাতিটি। স্থানীয় বাসিন্দারা হাতিটি দেখতে আসেন। স্থানীয় বাসিন্দা গুরুপদ মুর্মু বলেন, ‘‘ভোর থেকে প্রায় সাড়ে ন’টা পর্যন্ত হাতিটি রিসর্টের মধ্যে ছিল।’’ রিসর্টের কর্ণধার অভিজিৎ রায় বলেন, ‘‘ভোর হতেই হাতিটি বেড়া ভেঙে ঢুকে পড়ে। সমস্ত গাছ নষ্ট করে দিয়েছে। বন দফতরকে বার বার ফোন করলেও কেউ আসেননি। ভাগ্যিস এ দিন কোনও পর্যটক ছিলেন না।’’
জানা গিয়েছে, সাড়ে ন’টা নাগাদ হাতিটি বেরিয়ে জঙ্গলে ঢুকে যায়। শুক্রবার ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে ৮১টি হাতি রয়েছে। এর মধ্যে ঝাড়গ্রাম রেঞ্জে ১৪টি হাতি রয়েছে। আবার, বৃহস্পতিবার বিকেলে মানিকপাড়া রেঞ্জের রমরমা বিটের রমরমার জঙ্গলে থাকা চারটি হাতির মধ্যে দু’টি হাতির লড়াই হয় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। সেই লড়াই দেখতে ভিড় জমায় পাশাপাশি গ্রামের মানুষজন। হাতির তান্ডবে নাজেহাল হয়ে পড়ছে মানুষজন।
বন দফতরের এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘হাতিকে আটকানো খুবই মুশকিল। বৃহস্পতিবার যে পথ দিয়ে হাতি ঢুকে সেখানে ফেন্সিং ছিল না।’’ ঝাড়গ্রামের এডিএফও বলরাম পাঁজা বলেন, ‘‘হাতির গতিবিধির উপর নজর রাখা হয়েছে। আমাদের টিম সবসময় প্রস্তুত রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy