প্রতীকী ছবি।
প্রাথমিক শিক্ষক, পঞ্চায়েত সহায়ক, সিভিক ভলান্টিয়ার ও সরকারি গ্রুপ-ডি কর্মী পদে নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা করেছেন তিনি। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূল নেতা সোমনাথ বেরার বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুললেন তৃণমূলের কিছু নেতা।
শুক্রবার রীতিমত সাংবাদিক বৈঠক ডেকে সোমনাথের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ করেন তাঁরা। তমলুকের রাধামনি এলাকায় একটি হোটেলে ওই সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন তমলুক ব্লক তৃণমূলের সহ-সভাপতি মাধব পাঁজা, ব্লক যুব সহ- সভাপতি শশধর সামন্ত, অনন্তপুর-২ অঞ্চল সভাপতি শ্রীকান্ত খাসকিল, শ্রীরামপুর-২ অঞ্চল সভাপতি কমল প্রামাণিক সহ বেশ কয়েক জন স্থানীয় নেতা। সাংবাদিক বৈঠকে শশধর অভিযোগ করেছেন, ‘‘২০১২ সালে জেলায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের সময় শিক্ষক পদে চাকরি ও পরবর্তী সময়ে পঞ্চায়েত সহায়ক, গ্রুপ-ডি এবং সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সোমনাথ দলের কর্মী এমন অন্তত ৭০ জন বেকার যুবক-যুবতীর কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা করে নিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে আমাদের কাছ থেকে প্রায় ২ কোটি টাকা নিয়েছেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চাকরি হয়নি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘প্রতিশ্রুতি মতো চাকরি না হওয়ায় বার বার টাকা ফেরত চাওয়ার পর ২০১৮ সালে বেশ কয়েকটি ‘চেক’ দিয়েছিলেন সোমনাথ। কিন্তু সেই চেকও বাউন্স হয়। গত নভেম্বর মাসে সোমনাথ নিজের ও স্ত্রী কাজল বেরার ‘উত্তর সোনামুই পঞ্চায়েতের প্রধান) নামে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক মিলিয়ে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার চেক আমাদের হাতে দেন। কিন্তু ওই সব চেক ব্যাঙ্কে জমা দিলে জানানো হয় ওই দু’জনের আকাউন্টে যথেষ্ট পরিমাণ টাকা নেই। ফলে সেগুলিও বাউন্স হয়। এ ভাবেই পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। আমাদের দাবি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে নেওয়া বেকার যুবক-যুবতীদের ওই টাকা ফেরত দেওয়া হোক।’’ বিষয়টি জেলা নেতৃত্বকেও জানিয়েছেন সোমনাথ।
দলের নেতাদের কাছ থেকেই চাকরি দেওয়ার নামে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠায় রাজনৈতিকমহলে শোরগোল পড়েছে। অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা নেতৃত্বও। তাঁর বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ নিয়ে সোমনাথের দাবি, ‘‘যে সব ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতৃত্ব হিসেবে পরিচয় দিয়ে অভিযোগ করছেন তাঁরা কেউ পদাধিকারী নন। দলের কর্মী। ওঁরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এমন অভিযোগ করেছেন। সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন। মাধব সহ কয়েকজনের সঙ্গে আমার ব্যবসায়িক লেনদেন রয়েছে। সেই সূত্রে টাকার লেনদেন হয়। চাকরি দেওয়ার জন্য টাকা নেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। ওঁরা আইনের সাহায্য নিতে পারেন।’’
বিজেপি তমলুক জেলা সভাপতি নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতাদের ‘কাটমানি’ ফেরতের কথা মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলেছিলেন। সোমনাথের বিরুদ্ধে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ আগেও উঠেছিল। আসলে টাকার ভাগ নিয়ে নিজেদের গোলমালেই এই ঘটনা ঘটেছে।’’
দলীয় নেতা তথা পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। দলীয় ভাবে তদন্ত হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy