অব্যবস্থা: সাফাই না হওয়া হাইড্রেন। নিজস্ব চিত্র
চলতি মাসেই সপ্তাহ তিনেক আগে কাঁথি থানার তিন পুলিশ কর্মী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তারপর নড়েচড়ে বসেছিল পুরপ্রশাসন। চটজলদি থানা চত্বর সাফাই অভিযান থেকে মশা মারার তেল, ধোঁয়া, ব্লিচিং পাউডার নিয়ে এলাকায় মশদমনে নেমে পড়েছিল পুরসভা। কিন্তু শুক্রবার শরীরে জ্বর এবং রক্তের প্লেটলেট কমে যাওয়ায় কাঁথি থানার এক পুলিশকর্মীর হাসপাতালে ভর্তিকে কেন্দ্র করে ডেঙ্গির আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সেই সঙ্গে পুরসভার এলাকা সাফাই ও মশা দমন অভিযান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁথি থানার ওই এস আই উমকান্ত ধর ওয়্যারলেস বিভাগের কর্মী। শুক্রবার তাঁর রক্তের পরীক্ষায় প্লেটলেট কাউন্ট ছিল নব্বই হাজার পার ডেসি লিটার। শনিবার সেই সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে আশি হাজার। অর্থাৎ একদিনে কমেছে দশ হাজার। কাঁথি মহকুমা হাসপাতাল সুপার সব্যসাচী চক্রবর্তী বলেন, “উমাকান্তবাবুর রক্তের নমুনা এলাইজা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে জ্বরের কারণ বোঝা যাবে।’’
তবে বার বার পুলিশ কর্মীদের জ্বরে আক্রান্ত হওয়া নিয়ে তাঁদের কর্মস্থল ও আবাসন এলাকায় পুরকর্মীরা মশাদমনে ঠিকমতো কাজ করছেন না বলে পুলিশ কর্মীদেরই একাংশ অভিযোগ করেছেন। উমাকান্তবাবু থাকেন মহকুমা শাসকের বাংলোর পাশে সরকারি আবাসনে। বাড়িতে ও কর্মস্থলে দুই জায়গার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিয়ে সরব হয়েছেন অন্যান্য পুলিশ কর্মীরা। তাঁদের দাবি, আক্রান্ত উমাকান্তবাবু যে অফিসে বসেন তার জানালার পাশেই নোংরা, আবর্জনা পড়ে থাকে। পথ চলতি মানুষজন জায়গাটিকে প্রসাবখানা হিসাবে ব্যবহার করেন। সেখানে গর্ত থাকায় নোংরা জল জমে পুতিগন্ধময় পরিবেশ তৈরি হয়েছে। গর্তের জমা জলে মশার লার্ভা যে নেই তাও হলফ করে বলা যায় না। তাঁদের অভিযোগ, ওই জায়গা পরিষ্কারে কোনও ব্যবস্থা তো দূর, মশা মারার তেল থেকে ব্লিুচিং পাউডার কিছুই দেওয়া হয় না। এদিন হাসপাতালে শুয়ে উমাকান্তবাবু বলেন, ‘‘দিন পনেরো আগে আবাসনে এসে পুরকর্মীর মশা মারার তেল ছড়িয়ে যান। তারপর আর কেউ আসেননি।’’
কাঁথি থানার ওয়্যারলেস দফতর থেকে হাত পঞ্চাশেক দূরে ক্যালটেক্স মোড়। সেখানকার এক বাসিন্দা সুদেষ্ণা পাহাড়ির দাবি, “দিন সাতেক আগে আমার স্বামী ও ছেলে জ্বর থেকে উঠেছে। বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে হাইড্রেনে সব সময় জল জমে থাকে। সেখানে মশা মারার তেল বা ব্লিচিং দিতে পুরকর্মীদের কাউকে দেখা যায় না।’’ তাঁর অভিযোগ, পাশেই এক ব্যক্তির পরিত্যক্ত ড্রাম ও বোতলের ব্যবসা রয়েছে। সেই সব ড্রাম ও বোতলে জল জমে থাকে। ডেঙ্গি কোনও সচেতনতা নেই। পুরসভার তরফেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।’’
কাঁথি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সত্যেন্দ্রনাথ জানা বলেন, ‘‘কিছুদিন আগেই পুরকর্মীরা গিয়ে কাঁথি থানা এলাকায় সাফাই অভিযান করেছিলেন। সেই সময় পুলিশের থেকে জানানো হলে ওয়্যারলেস দফতরের চারপাশও সাফাই করা হতো। তবে শীঘ্রই পুরকর্মীদের পাঠিয়ে ওই এলাকা সাফাইয়ের ব্যবস্থা করছি।’’
পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, ‘‘আমরা কাঁথি থানা এলাকায় সাফাই অভিযান শুরু করেছি। ওয়্যারলেস দফতরের দিকে সাফাই হয়নি। সত্যি, এটা সমস্যার। আমরা ওই জায়গা সাফাইয়ের ব্যবস্থা করছি। উমাকান্তবাবুর সুচিকিৎসার জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy