প্রতীকী ছবি।
এই প্রথমবার সাঁওতালি মহাকবি সাধু রামচাঁদ মুর্মুর যাবতীয় সাহিত্যকর্ম বাংলা ও অন্যান্য ভাষায় অনুবাদ করা হবে। উদ্যোগী মহাকবিরই নামাঙ্কিত ঝাড়গ্রামের সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর। সূত্রের খবর, উচ্চ শিক্ষা দফতরের অধীনস্থ ‘ইনস্টিটিউট অফ ল্যাঙ্গুয়েজ স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ’-এর সঙ্গে যৌথভাবে ওই অনুবাদের কাজ হবে। ইতিমধ্যে সাধু রামচাঁদ মুর্মুর গবেষক এবং বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের নিয়ে অনুবাদ কমিটি গঠিত হয়েছে।
উপাচার্য অমিয়কুমার পান্ডা বলছেন, ‘‘নিজের গানে-কবিতায় আদিবাসী সমাজকে জেগে ওঠার ডাক দিয়েছিলেন সাধু রামচাঁদ মুর্মু। তাঁর উৎকৃষ্ট সাহিত্যকর্ম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই এমন উদ্যোগ।’’ উপাচার্য জানান, বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজিতে সাধু রামচাঁদ মুর্মুর কবিতা, গান, গল্প নাটক সহ সমগ্র সাহিত্য কর্ম অনুবাদ করে প্রকাশ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রশান্তকুমার পণ্ডিত বলছেন, ‘‘ইতিমধ্যেই অনুবাদের কাজ কিছুটা এগিয়েছে। অনুবাদের পাশাপাশি, সাধু রামচাঁদ সম্পর্কে গবেষণার কাজও হবে।’’ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়টি সাঁওতালি মহাকবির নামাঙ্কিত হওয়ায় দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন সাহিত্যপ্রেমী ও গবেষকরা সাধু রামচাঁদ মুর্মুর সাহিত্যকর্ম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। কিন্তু সাধু রামচাঁদের সাহিত্য কর্মের অনুবাদ সমগ্র নেই। সেই কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাধু রামচাঁদের সাহিত্য কর্ম বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করতে চেয়ে উচ্চশিক্ষা দফতরে আবেদন করেছিলেন। ২২ নভেম্বর উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফে অনুমোদনপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পৌঁছেছে। উচ্চশিক্ষা দফতরের ওই অনুমোদনপত্রে জানানো হয়েছে, ইনস্টিটিউট অফ ল্যাঙ্গুয়েজ স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথভাবে ওই কাজ করবেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সাধু রামচাঁদ মুর্মুর জন্ম হয়েছিল ১৩০৫ বঙ্গাব্দের ১৬ বৈশাখ (১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দ) ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি ব্লকের শিলদা অঞ্চলের কামারবান্দি গ্রামে। বেশিদূর পড়াশোনা না করলেও সাঁওতালি সাহিত্যের এক অনন্যসম্ভার রচনা করেছেন তিনি। পরাধীন ভারতে তাঁর কবিতা-গানে ছিল প্রতিবাদের সুর। তাঁর লেখা গান ‘দেবন তিঙ্গুন আদিবাসী বীর’ (এসো জাগি আদিবাসী বীর) সারা বিশ্বের সাঁওতালদের কাছে জনপ্রিয়। বাংলাদেশেও শোনা যায় এই গান। জীবিত অবস্থায় সাধু রামচাঁদের কোনও বই মুদ্রিত হয়নি। অর্থাভাবই এর কারণ। তাঁর মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হয় পাঁচটি বই। তাঁর প্রকাশিত বইগুলি হল, ‘সারিধরম সেরেঞ পুঁথি’, ‘লিটা গড়েৎ’ (অখণ্ড সংস্করণ), কবিতা সমগ্র ‘অল দহ অনড়হে’। সাঁওতালদের সামাজিক ও ধর্মীয় বিষয়ে পদ্যে-গদ্যে লেখা গ্রন্থ ‘ঈশরড়’। আদিবাসী যাত্রাপালার সংকলন ‘সংসার ফেন্দ’। ১৯৯৭ সালে মহাকবির জন্ম শতবার্ষিকীতে ‘সাধু রামচাঁদ অনলমালা’ (রচনাসমগ্র) প্রকাশ করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর। সাধু রামচাঁদ প্রয়াত হন ১৩৬১ বঙ্গাব্দের ২৯ অগ্রহায়ণ। ইংরেজির ১৯৫৫ সাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy