প্রহৃত তৃণমূল নেতা রমেশ পড়িয়া। নিজস্ব চিত্র
চাকরি দেওয়ার নামে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তুলে তৃণমূল এবং বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে পোস্টার-ব্যানার দেওয়ার ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক চাপান-উতোর চলছেই তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে। এ বার ব্লক তৃণমূলের কাখরদা অঞ্চলের প্রাক্তন সহ-সভাপতি ও আহ্বায়ক রমেশ পড়িয়াকে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকা ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ উঠল। ওই টাকা ফেরানোর দাবিতে বাড়িতে চড়াও হয়ে মারধরের ঘটনার অভিযোগও উঠেছে।
রবিবার সকাল সাড়ে ৯ টা নাগাদ ব্লকের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন নোনাকুড়িবাজার সংলগ্ন কাঁকটিয়া গ্রামে রমেশের বাড়ির সামনে জমায়েত হয়ে টাকা ফেরতের দাবিতে তাঁকে বাড়ির ভিতরে আটকে রেখে বিক্ষোভ শুরু করে বলে অভিযোগ। তাঁকে বাড়ি থেকে টেনে বাইরে বের করে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে তমলুক থানার পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ও রমেশকে উদ্ধার করে। বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে রেহাই পেতে রমেশ তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য আগামী ৩১ অগস্টের মধ্যে আলোচনায় বসার ‘মুচলেকা’ দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, তৃণমূলের অঞ্চল সহ-সভাপতি থাকাকালীন রমেশ সরকারি বিভিন্ন দফতরে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নেন বলে অভিযোগ। সম্প্রতি ব্লকের একাধিক তৃণমূল এবং বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ তুলে পোস্টার পড়েছে। রমেশের বিরুদ্ধেও কয়েকদিন আগে তাঁর বাড়ির সামনে পোস্টার দিয়ে টাকা ফেরতের দাবি জানানো হয়। তারপরই এদিন সকালে রমেশের বাড়িতে চড়াও হয়ে বিক্ষোভ ও মারধরের ঘটনা ঘটে।
এদিন বিক্ষোভকারীদের মধ্যে শম্ভুনাথ মাইতির অভিযোগ, ‘‘চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আমার মতো ৪০-৪৫ জনের কাছ থেকে কয়েক লাখ করে টাকা নিয়েছে রমেশ। কিন্তু কারও চাকরি হয়নি। আমরা টাকা ফেরত চেয়ে একাধিকবার ওঁর কাছে গেলেও প্রতিবারই আশ্বাস দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে। বাধ্য হয়ে আমার মত যাঁরা প্রতারিত হয়েছেন, তাঁরা সবাই মিলে এখানে এসে রমেশকে টাকা ফেরতের দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু টাকা ফেরতের নিশ্চয়তা দিতে না পারায় ওঁকে আটকে রেখেছিলাম। পুলিশের উপস্থিতিতে উনি লিখিত জানিয়েছেন, আগামী ৩১ অগস্ট এ বিষয়ে আলোচনার বসবেন।’’
চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নেওয়া নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ কার্যত স্বীকার করেন রমেশ। তিনি বলেন, ‘‘টাকা পয়সা লেনদেন ২০১৭ সালে হয়েছে। চাকরি দিতে পারিনি এটা ঠিক। সে জন্য বেশ কয়েকজনকে টাকাও ফেরত দিয়েছি। যাদের টাকা বাকি আছে, তাদেরও তা ফেরানোর চেষ্টা করছি। তা সত্ত্বেও লোকজন এসে এ ভাবে আক্রমণ করেছে।’’
এমন ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছেন ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক তৃণমূল আহ্বায়ক শরৎ মেট্যা বলেন, ‘‘দলের অঞ্চল সহ-সভাপতি থাকাকালীন রমেশের বিরুদ্ধে এধরনের অভিযোগ উঠেছিল। তার প্রেক্ষিতে লোকসভা নির্বাচনের আগে রমেশকে দলের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এদিন রমেশের বাড়িতে হামলা ও তাঁকে মারধরের ঘটনা নিয়ে আমার কিছু জানা নেই।’’
বিজেপির তমলুক জেলা সাধারণ সম্পাদক নীলাঞ্জন অধিকারী বলেন, ‘‘বেকার যুবকদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তৃণমূলের নেতাদের অনেকেই টাকা নিয়েছে। তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করায় বেকার যুবকদের ক্ষোভ রয়েছে। ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy