গুড়গুড়িপালের শালিকা এলাকায় রাস্তার ধারে মজুত করা বালি। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
=বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে জেলা পুলিশ-প্রশাসন। তল্লাশি চলছে। তল্লাশি আরও জোরদার হবে। মঙ্গলবার জেলায় এ নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। ছিলেন জেলাশাসক রশ্মি কমল, জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার প্রমুখ। ছিলেন ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকেরা। ছিলেন বিডিও, আইসি, ওসি, বিএলআরও প্রমুখও। ব্লকস্তরের আধিকারিকেরা ভার্চুয়ালি বৈঠকে ছিলেন। সূত্রের খবর, বৈঠকে ঠিক হয়েছে, তল্লাশি- অভিযানের জন্য একটি এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর) তৈরি করা হবে। সংশ্লিষ্ট সমস্ত দফতরের মধ্যে সমন্বয় রাখতে এবং বিক্ষিপ্ত অভিযোগ এড়াতেই এই পদক্ষেপ হবে।
জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘কোথাও অবৈধ খাদান চলতে দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে সব রকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বৈঠক হয়েছে। এটা প্রশাসনিক ব্যাপার।’’ জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘যাঁরা বেআইনি খাদান চালাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবেই। আমরা ইতিমধ্যে ৫টি জায়গায় নাকা পয়েন্ট করেছি। গাড়িগুলি চেক করা হচ্ছে।’’ পুলিশ সুপার মানছেন, ‘‘এসওপি বানানো হচ্ছে। সেটা মেনেই আমরা আগামী পদক্ষেপ করব। বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’’ দিন কয়েক ধরেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি-অভিযান চলছে। অবৈধ বালি কারবারে যুক্ত থাকায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। লরি, নৌকো, বালি কাটার
মেশিন, পাইপ-সহ বেশ কিছু যন্ত্রাংশ আটকও করা হয়েছে। একাধিক খাদান মালিকের নালিশ, বৈধ খাদানেও হানা দিয়েছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘নিয়ম মেনে খাদান চালানো হলে কারও কোনও ভয়ের ব্যাপার নেই।’’ তিনি জুড়ছেন, ‘‘কেউ যদি মনে করেন, তাঁকে অযথা হেনস্তার মধ্যে পড়তে হচ্ছে, তবে তিনি সরাসরি আমাদের জানাতে পারেন। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখব।’’
তল্লাশি অভিযানের ক্ষেত্রে কোন কোন দিকে নজর রাখা জরুরি, বৈঠকে তা বিডিও, আইসি, ওসি-দের জানানো হয়েছে। ভূমি দফতরের আধিকারিকেরা কিছু নিয়মকানুনেরও উল্লেখ করেছেন। কেন এদিনের এই বৈঠক? প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, এটি রুটিন বৈঠক। দিন কয়েক ধরে তল্লাশি অভিযান চলছে। কিছু দিক পর্যালোচনা করতেই বৈঠক হয়েছে। অন্য এক সূত্রে অবশ্য খবর, সংশ্লিষ্ট সমস্ত দফতরের মধ্যে সমন্বয় বাড়াতেই বৈঠক হয়েছে। সমন্বয়ে যে ‘ফাঁক’ রয়েছে, তা এক চিঠিতে স্পষ্ট হয়েছে। জানা যাচ্ছে, দাসপুরের নাড়াজোলের রামদাসপুরে একটি বালি খাদান রয়েছে। খাদানটি বৈধ। স্বল্পমেয়াদি লিজে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ওই খাদানে হানা দেয় পুলিশ। পরবর্তী সময়ে দাসপুর থানার পক্ষ থেকে দাসপুর ১- এর বিএলআরও- র কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়। খাদান সম্পর্কিত কিছু তথ্য জানতে চাওয়া হয়। মূলত না কি চারটি প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া হয়। এক, খাদানটি বৈধ না অবৈধ। দুই, মেশিনপত্র দিয়ে বালি তোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে কি না! তিন, বালি মজুত করে রাখা যায় কি না এবং চার, বালি কাটতে মাটি খোঁড়ার যন্ত্র (জেসিবি) ব্যবহার করতে পারা যায় কি না। ভূমি দফতরের এক সূত্রে খবর, ১ জুলাই থেকে খাদানটি চালু হয়েছে। তিন মাসের স্বল্পমেয়াদি লিজে দেওয়া হয়েছে। এ জন্য রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ৪৯ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা। ২৭ লক্ষ সিএফটি বালি তোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক এক সূত্রের দাবি, বৈঠকে নানা দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আশা করা যায়, আর কোথাও ধোঁয়াশা থাকবে না!
অবৈধ বালির কারবারে শাসক দলের একাংশ নেতা- নেত্রী যুক্ত বলে অভিযোগ। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘প্রশাসনকে আমরা বলেছি, দল দেখবেন না। কে তৃণমূল, কে বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম কিচ্ছু দেখার দরকার নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy