শপথবাক্য পাঠ করছেন নন্দীগ্রামে নির্বাচিত তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা। ছবি: ভাইরাল ভিডিয়ো।
‘আমরা কোনও প্রলোভনেই পা দেব না’— এই বয়ানে শপথবাক্য পাঠ করলেন ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটে নন্দীগ্রামে নির্বাচিত তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা। তারই একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এল। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাসকদলকে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিজেপি।
তৃণমূল সূত্রে খবর, গত রবিবার নন্দীগ্রাম-২ ব্লকে শপথবাক্য পাঠের কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। খোদামবাড়ি-১ পঞ্চায়েতের অঞ্চল সভাপতি নাড়ুগোপাল জানার নেতৃত্বে ওই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সেখানে অঞ্চালের জয়ী দলীয় প্রার্থীরা হাজির ছিলেন। প্রকাশ্যে আসা ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, তাঁরা সকলে শপথবাক্য পাঠ করে বলছেন, ‘‘আমরা তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত প্রার্থীগণ। আমরা কর্মীদের সামনে শপথ করছি, আমরা তৃণমূলের প্রতীক ব্যতীত অন্য কোনও প্রলোভনে পা দেব না। আমরা প্রতিজ্ঞা করছি, খোদামবাড়ি-১ অঞ্চলে তৃণমূলের বোর্ড তৈরি করে তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উৎসর্গ করব। আমরা যাঁরা এই সভায় আছি, তাঁদের অঙ্গীকার করতে হবে, দলের সুস্বাস্থ্যের জন্য আমরা কোনও দিন ব্যক্তিনির্ভর না হয়ে দলের জন্যই কাজ করব।’’
তবে ঠিক কোন প্রলোভনের আশঙ্কা থেকে এই ‘কর্মসূচি’, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি ব্লক নেতৃত্ব। এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে পাঁচটিতেই জয় পেয়েছে বিজেপি। নন্দীগ্রাম-২ পঞ্চায়েত সমিতিও গেরুয়া শিবিরের দখলে গিয়েছে। তৃণমূল শুধু জিতেছে খোদামবাড়ি-১ এবং আমদাবাদ-১ পঞ্চায়েত। এর মধ্যে খোদামবাড়ি-১ পঞ্চায়েতের ১৫টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে আটটি আর বিজেপি পেয়েছে সাতটি আসন। তৃণমূল সূত্রে দাবি, ভোটের পর থেকেই এলাকায় ‘সন্ত্রাস’ বিজেপি। ভয় দেখিয়ে দল ভাঙিয়ে দলের হাত থেকে পঞ্চায়েত ছিনিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে তারা। সেই কারণেই হয়তো দলের জয়ী প্রার্থীদের দিয়ে শপথবাক্য পাঠ করানো হয়েছে।
যদিও এ কথা আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বীকার করা হয়নি শাসকদলের পক্ষ থেকে। নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের ১০ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির আসনে জয়ী তৃণমূল নেত্রী পুষ্পিতা গিরি বলেন, “দল সবার উপরে। দলের সিদ্ধান্তেই আমরা শপথ বাক্য পাঠ করেছি। তবে আমাদের কারও কাছে কোনও প্রস্তাব এসেছে কি না, জানা নেই। দল যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তখন আমরাও শপথ নিতে পিছপা হইনি।’’ দলের আর এক ব্লক স্তরের নেতা সুনীল বরণ বলেন, “দলের প্রতি আনুগত্য থাকতে হবে। আগামী পাঁচ বছর পঞ্চায়েতে থেকে জনগণের জন্য কাজ করতে সকলের ঐক্যবদ্ধ থাকা জরুরি। এই কারণেই শপথবাক্য পাঠ করানো হয়েছে। নন্দীগ্রাম-২ ব্লকে বিজেপির সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর খোদামবাড়ি অঞ্চল তৃণমূলের দখলে এসেছে। সেখানে দলের প্রতি সবার আনুগত্য থাকার বার্তা দিতেই শপথ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।’’
এ নিয়ে শাসকদলকে পাল্টা আক্রমণ করেছে বিজেপি। দলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে নন্দীগ্রাম-২ ব্লকে ভাল ফল করেছে বিজেপি। মানুষের ভোটে বিজেপি পঞ্চায়েত সমিতির পাশাপাশি পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছে। সেই ভরাডুবি থেকে নিজেদের মান বাঁচাতে এখন শপথ নিয়ে নাটক করছে তৃণমূল। বিজেপি কোথাও পঞ্চায়েত গড়তে গায়ের জোর খাটাতে যায়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy