ক্যামেরা চুরির আগে উঠেছিল এই ছবি। নিজস্ব চিত্র।
জঙ্গলে গাছ চুরির পরে এবার হাতির গতিবিধি জানতে বসানো ক্যামেরাও চুরি হয়ে গেল ঝাড়গ্রাম রেঞ্জ এলাকায়।
বন দফতর সূত্রে খবর, ঝাড়গ্রাম রেঞ্জের বৃন্দাবনপুর এলাকায় একটি ক্যামেরা চুরি হয়েছে। শনিবার ঘটনাটি জানাজানি হতেই ঝাড়গ্রাম থানায় অভিযোগ জানায় বন দফতর। গত বছর তিনবার গাছ চুরির ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। তবে ক্যামেরা চুরির ঘটনায় এক যুবককে শনিবারই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম কিসুন হাঁসদা। বছর উনিশের ওই যুবকের বাড়ি ঝাড়গ্রাম থানার পশরো এলাকায়। চুরি হওয়া ক্যামেরাটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ, রবিবার ধৃতকে ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হবে। ঝাড়গ্রামের ডিএফও পঙ্কজ সূর্যবংশী বলেন, ‘‘আমরা থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলাম। পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে।’’
হাতির গতিবিধি জানতে গত বছর নভেম্বর মাসে ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে বসানো হয়েছিল ক্যামেরা। এই বিষয়টি দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে প্রথম। উন্নত মানের ওই সব ক্যামেরার সাহায্যে হাতির গতিবিধি স্পষ্ট ভাবে জানা যাচ্ছে। জাপানের ‘জাইকা’ নামে একটি সংস্থার সহযোগিতায় ধাপে ধাপে হাতির করিডরে এই ক্যামেরা লাগানো হবে বলে জানান বন আধিকারিকেরা।
প্রাথমিক পর্যায়ে ঝাড়গ্রাম ডিভিশনের চারটি রেঞ্জে ৩০টি ক্যামেরা বসানো হয়। ডিএফও বলেন, ‘‘রাতের বেলায় গভীর জঙ্গলে যাওয়া সম্ভব নয়। ওই ক্যামেরা লাগানোর ফলে নির্দিষ্ট সময়ে হাতির গতিবিধি জানা যাচ্ছে। জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এর ট্রায়াল পর্যায় চলবে।’’ এবার সেই ক্যামেরার নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল।
উল্লেখ্য, ২০২২-২৩ আর্থিক বর্ষে ঝাড়গ্রাম ও খড়্গপুর ডিভিশন মিলিয়ে হাতির হানায় ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এরমধ্যে ঝাড়গ্রাম ডিভিশনের ২৮ জন আছেন। ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে ঝাড়গ্রাম জেলায় ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে হাতির হানায়। শুধু তাই নয়, জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় হাতির তাণ্ডবে প্রচুর বাড়িও ভেঙেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন চাষিরা। গত আর্থিক বছরে ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে প্রায় ৪ হাজার চাষি ক্ষতিপূরণের জন্য বন দফতরে লিখিত আবেদন করেছিলেন। চলতি আর্থিক বছরেও অনেক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এই সব সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যেই সামনে এল চুরির ঘটনা।
ওই ক্যামেরার সামনে হাতির উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলে স্বয়ংক্রিয় ভাবে সতর্কতামূলক বার্তা ক্যামেরার সঙ্গে সংযুক্ত মোবাইলে চলে যায়। রাতের বেলাতেও মিলছে স্পষ্ট ছবি। ওই ক্যামেরা চুরি করতে এসে সেই প্রযুক্তির ফাঁদেই পড়ে যায় কিসুন হাঁসদা। তার ছবিও ক্যামেরায় উঠে যায়। সেই ছবি মোবাইলে চলেও আসে।
ফলে তাকে ধরতে বেশি দেরি হয়নি পুলিশের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy