চায়ের দোকান অথবা কোনও সক্রিয় সমর্থকের বাড়ি। যে কোনও দলীয় সভা কিংবা গোপন মিটিংয়ের জন্য এত দিন হাতে গোনা এই সব জায়গাই ভরসা ছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের বিজেপি নেতৃত্বের। কিন্তু, দিন পাল্টেছে। লোকসভা ভোটে একক ভাবে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। রাজ্যেও বেড়েছে ভোটের হার। এখন সময় ঘুরে দাঁড়ানোয়। তারই অঙ্গ হিসাবে জেলার সব ব্লকে কার্যালয় খোলার পাশাপাশি সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিল বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নেতৃত্ব।
বিজেপির জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের ২৮টি মণ্ডল কমিটির (ব্লক) মধ্যে ১৬টিতে নিজস্ব কার্যালয় রয়েছে। বাকি এলাকায় নিজস্ব কোনও কার্যালয় নেই। কার্যালয় নেই এমন এলাকায় জুলাই মাসের মধ্যে নতুন কার্যালয় খোলা হবে। প্রয়োজনে বড়িভাড়া নেওয়া হবে।” জেলা সভাপতির নির্দেশ পেয়ে ইতিমধ্যেই কর্মীরা জেলাজুড়ে তৎপর হয়েছেন।
এত দিন পশ্চিম মেদিনীপুরে বিজেপির অস্তিত্ত্ব থাকলেও সংগঠন ছিল ঢিলেঢালা। লোকসভা ভোটের পরে অবস্থা পাল্টেছে। সিপিএম, কংগ্রেস এমনকী শাসকদল তৃণমূল থেকেও বহু নেতা-কর্মী কিংবা সমর্থক প্রায় প্রতিদিনই বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখছেন বিভিন্ন দলের ব্লক থেকে জেলাস্তরের নেতৃত্বও। সামনেই পুরসভার নির্বাচন। এ ছাড়াও রয়েছে কলেজ ভোট, সমবায় সমিতি, স্কুল পরিচালন সমিতি-সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। এর প্রতিটিতেই সমানে সমানে টক্কর দিতে প্রয়োজন জোরদার সংগঠন। আর সংগঠন তৈরির প্রাথমিক শর্ত হল স্থায়ী দলীয় কার্যালয়। বিজেপি নেতৃত্ব এর বাস্তবতা বুঝেই কার্যালয় তৈরির উপরে এত জোর দিয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত।
পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল, দাঁতন ২, খড়্গপুর ১, পিংলা, সবং-সহ প্রভৃতি ব্লকে বিজেপির নিজস্ব কোনও অফিস নেই। দলীয় সূত্রের খবর, ওই সব এলাকায় দলের কোনও সমর্থকের বাড়িতে বা চা-দোকানেও বসে বৈঠক করেন নেতৃত্ব। এটা ভাল সংগঠন তৈরির পক্ষে বাধা বলে মানছেন বিজেপি নেতৃত্ব। দলের এক নেতার কথায়, এত দিন বিজেপির বহু সমর্থক থাকলেও বাম আমলে এবং বর্তমান শাসকদলের স্থানীয় নেতৃত্বদের চোখ রাঙানিতে দলীয় অফিস দূরের কথা, মিছিলে বের হতেও অনেকে ভয় পেতেন। কিন্তু, এখন কেন্দ্রে বিজেপির সরকার। রাজ্যেও দলের ভোট বেড়েছে যথেষ্টই। ফলে আগের ভয় কেটেছে অনেকটাই। এখন অনেকেই সাহস করে যেখানে দলীয় কার্যালয় রয়েছে সেখানে যাচ্ছেন। মিটিং, মিছিল থেকে দলের বৈঠকেও যোগ দিচ্ছেন।
তবে, একাধিক ব্লকে দলের অফিস না থাকায় গোপন আলোচনা যেমন হচ্ছে না, তেমনি সমর্থকেরাও নিয়মিত অফিসে যেতে পারছেন না। এতে সমস্যা হচ্ছে, তা মানছেন বিজেপির জেলা সভাপতি। তুষার মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “প্রত্যন্ত এলাকার সমর্থকেরা প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট মণ্ডল-কমিটির সভাপতি বা নেতৃত্বদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। জরুরি আলোচনাতেও সমস্যা হচ্ছে।”
এ সবের পাশাপাশি দলের সভাপতি বলছেন, “ঘাটাল-সহ কিছু এলাকায় মণ্ডল কমিটির সভাপতি নির্বাচন এখনও হয়নি। সেই সব জায়গায় এখনও পুরানো নেতারাই দল সামলাচ্ছেন। খুব দ্রুত আমরা স্থানীয় পুরনো কর্মীদের সম্মতি নিয়ে মণ্ডল কমিটির সভাপতি নির্বাচন করব।” যা দেখে রাজনৈতিক মহল বলছে, একদিকে নতুন কার্যালয় তৈরি, অন্যদিকে সংগঠনকে ঢেলে সাজিয়ে রাজ্য তথা জেলার রাজনীতির নিয়ামক শক্তি হওয়ার লক্ষ্যে জোরদার লড়াই শুরু করছে বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy