দাসপুরে সব্জি গাছের পরিচর্যার কাজ চলছে। —নিজস্ব চিত্র।
টানা কয়েকদিনের তাপপ্রবাহ শেষে স্বস্তির বৃষ্টি হাসি ফুটিয়েছে সকলের মুখে। বৃষ্টির দরুণ তাপমাত্রা কমায় স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সব্জি চাষিরাও।
তীব্র তাপে অনেক জমিতেই সব্জি গাছ মাঠেই শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। টানা বৃষ্টি না হওয়ায় ভূ-গর্ভস্থ জলস্তরের উচ্চতাও নেমে গিয়েছিল। ফলে ক্ষতির আশঙ্কায় দিন গুনছিলেন চাষিরা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিক রণজয় দত্ত বলেন, “বৃষ্টি হওয়ায় সব্জি চাষে ভাল প্রভাব পড়েছে। বৃ্ষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ার সব্জি গাছের পাতা-সহ গোড়া থেকে নানা শোষক পোকা ঝড়ে গিয়েছে। যে সব খেতে সব্জি নষ্ট হয়নি বা আংশিকভাবে নষ্ট হয়েছে, সেক্ষেত্রে এখনকার তাপমাত্রায় সব্জির ফলন ফের শুরু হবে।”
জেলা উদ্যানপালন দফতর সূত্রে খবর, এখন যে সব সব্জি চাষ হচ্ছে, তার সবই সেচ নির্ভর। চলতি মরসুমে জেলায় প্রায় ২০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে নানা জাতের সব্জি চাষ হয়েছে। বিভিন্ন সব্জির মধ্যে বেগুন, উচ্ছে, করলা, শশা, কুঁদরি, ঝিঙে, পটল বেশি চাষ হয়েছে। জেলার দাসপুর, ডেবরা, সবং, গড়বেতা, চন্দ্রকোনা, পিংলা-সহ একাধিক ব্লকের নানা এলাকায় মূলত সব্জি চাষ হয়েছে। গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে জেলায় তাপমাত্রার পারদ ৪০-৪২ ডিগ্রির আশেপাশে ওঠানামা করছিল। কোনও কোনও দিন তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রিতেও পৌঁছে যায়। ফলে প্রবল রোদে জমিতে সেচের জল দিলেও তীব্র তাপে তা দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছিল। অতিরিক্ত তাপমাত্রায় সব্জি গাছে বেড়ে গিয়েছিল শোষক পোকার আক্রমণও। গাছের কান্ড ও গোড়ায় রসের পরিমাণও কমে যাচ্ছিল। তীব্র তাপে হলুদ হয়ে যাচ্ছিল গাছের পাতা। উৎপাদন কমতে থাকায় বাজারেও সব্জির জোগান কমছিল।
জেলা উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃষ্টি হওয়ায় ফের গাছের গোড়া সতেজ হয়ে উঠবে। তাপমাত্রার পারদ কমায় হলুদ হয়ে যাওয়া গাছের পাতাও স্বাভাবিক হতে শুরু করবে। কমবে শোষক পোকতার আক্রমণও। ফলে সব্জি চাষে উৎপাদন আগের থেকে বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চন্দ্রকোনার কুঁয়াপুরের সব্জি চাষি অনন্ত ঘোষ বলেন, “আমি দেড় বিঘা জমিতে উচ্ছে, ঝিঙে লাগিয়েছিলাম। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় ও প্রচণ্ড গরমে জমিতে মাকড় পোকা লেগে গাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। কিছুটা ফলন হলেও তা খাওয়ার অযোগ্য। উচ্ছেতেও পোকা লেগে হলুদ হয়ে যাচ্ছিল। বৃষ্টি হওয়ায় ফের ফলন পাওয়ায় আশা রয়েছে।” তাছাড়াও বর্ষাকালে পেঁয়াজ ও শীতকালীন সব্জি চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করে এইসময়ই চাষিরা ফুলকপি, বাঁধাকপি, লঙ্কা-সহ নানা ধরনের জলদি জাতের চারা রোপণ করেন। বৃষ্টি হওয়ায় চারা রোপণেও সুবিধা হবে বলে জানা গিয়েছে। রণজয়বাবু বলেন, “বৃষ্টি হওয়ায় ফের জেলায় সব্জির ভাল ফলন শুরু হবে। এই বৃষ্টিটা না হলে জেলার অধিকাংশ সব্জি খেতেই ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা ছিল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy