পাঁচ বছরের এক শিশু কন্যাকে খুন করার অপরাধে এক মহিলাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত। বৃহস্পতিবার ঘাটালের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক দেবপ্রসাদ নাথ এই সাজা শোনান চন্দ্রকোনা থানার বিষ্ণুদাসপুর গ্রামের বছর পঁয়ত্রিশের বধূ মানসী দে-কে। রায় শুনে আদালতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে মানসী। সরকারি আইনজীবী শির্ষেন্দু কৃষ্ণ মাইতি বলেন, “খুনের ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় ওই মহিলাকে যাবজ্জীবন কারদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।” মানসীর আইনজীবী অসিত মণ্ডল অবশ্য জানান, এই রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা উচ্চ আদালতে যাবেন।
পুলিশ ও আদালত সূত্রের খবর, ২০১২ সালের ২২ অক্টোবর দুর্গাপুজোর অষ্টমীর সন্ধ্যায় বিষ্ণুদাসপুর গ্রামের বাসিন্দা পাঁচ বছরের মেঘা নায়েক বাবা গৌতম ও মা শ্রাবণী নায়েকের সঙ্গে পাড়ার এক অনুষ্ঠানে গিয়েছিল। সেখান থেকেই নিখোঁজ হয়ে যায় মেঘা। গভীর রাত পর্যন্ত খুঁজেও মেঘার হদিস মেলেনি। খবর পেয়ে রাতেই চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ শিশুকন্যার খোঁজ শুরু করে। পরদিন ভোরে গ্রামেরই ধানজমিতে পাওয়া যায় মেঘার মৃতদেহ। মেঘার কাকা উত্তম নায়েক চন্দ্রকোনা থানায় খুনের মামলা রুজু করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ গ্রামেরই বধূ মানসী দে-কে গ্রেফতার করে। জেরায় সে খুনের কথা কবুল করে। পুলিশ খুন ও প্রমাণ লোপাটের মামলা শুরু করে। চল্লিশ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। অভিযুক্ত আর জামিন পায়নি। মাস দেড়েক আগে থেকে মামলার শুনানি শুরু হয়। বৃহস্পতিবার এক বছর আট মাসের মাথায় রায় ঘোষণা হল।
কেন খুন করেছিল মানসী?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, স্বামী সঞ্জয় দের সঙ্গে মেঘার মা শ্রাবণীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল বলে সন্দেহ করত মানসী। এ নিয়ে অশান্তিও চলছিল। ঘটনার মাস তিনেক আগে মানসী একদিন শ্রাবণীদেবীর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে মারধর করে। এরপর সঞ্জয়বাবু স্ত্রীকে মারধর করেন। ওই সময় মানসী অন্তঃস্বত্তা ছিল। মারধরের ফলে তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়। ঘটনার তদন্তকারী অফিসার বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, “তদন্তে এই সব তথ্য উঠে এলেও কোনও পক্ষই থানায় মামলা করেনি। মানসীও কারও নামে অভিযোগ করেনি।” এ দিন রায় শুনে আদালত থেকে বেরনোর সময় মানসী বলেন, “পেটের মধ্যেই আমার বাচ্চাটা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তাই রাগে আমি শ্রাবণী নায়েকের মেয়েকে খুন করেছিলাম।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy