প্রতীকী ছবি।
ফের অনলাইন প্রতারণার শিকার হলেন এক ব্যক্তি। সেই জালে সর্বস্বান্ত হয়ে আত্মঘাতীও হয়েছেন ওই প্রৌঢ়। রবিবার সকালে কাঁথি-৩ ব্লকের মশাগাঁর এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, গাঁ-গঞ্জে প্রতারণা রুখতে কতটা সক্রিয় পুলিশ!
মৃতের নাম শ্রীকান্ত ওঝা (৫০)। এ দিন সকালে বাড়িতেই গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাঁকে ঝুলতে দেখেন পরিবারের লোকজন। পরে খবর পেয়ে সেখানে যায় মারিশদা থানার পুলিশ। তারা মৃতদেহ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে। সাদা কাগজে লেখা, ওই ব্যক্তি ১৭ লক্ষ টাকা প্রতারিত হয়েছেন। তার পরেও তাঁকে রাজ্যের যে কোনও থানার মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হত। কোন কোন ফোন নম্বরে তিনি কথা বলতেন, সে রকম বেশ কয়েকটি মোবাইল নম্বরও শ্রীকান্ত লিখে রেখে গিয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
শ্রীকান্তদের পারিবারিক অবস্থা ভাল। জমি-জমাও রয়েছে। তিনি নিজে জোগাড়ের কাজ করতেন। একটি স্টেশনারি দোকানও রয়েছে। জানা যাচ্ছে, বছর তিনেক হল এই অনলাইন বেটিং চক্রে জড়িয়েছিলেন শ্রীকান্ত। বেশ কিছু জমিজমাও বিক্রি করেছিলেন। মৃতের পরিবারের এক সদস্য বলছেন, ‘‘কিছু দিন ধরেই আমরা শুনেছিলাম উনি মোবাইলে কারও সঙ্গে কথা বলেন। তার কাছে ৭-৮ লক্ষ টাকা পাঠিয়েওছিলেন। নিষেধ করেছিলাম। তবে এই ধরনের ঘটনা ঘটবে বুঝতে পারিনি।’’
করোনাকালে কাজ খুইয়ে আতান্তরে পড়েছেন বহু মানুষ। অনলাইনে সক্রিয়তাও বেড়েছে আগের তুলনায় বহু গুণ। এই আবহেই লকডাউন শুরুর সময় থেকেই কাঁথি-সহ গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে অনলাইনে নানা প্রতারণার চক্র সক্রিয়। গত দু’বছরে এই ধরনের প্রতারণা চক্রের ফাঁদে জড়িয়েছেন বহু মানুষ। তবে গ্রামীণ এলাকায় এমন প্রতারণা শিকার হয়ে একেবারে মৃত্যুর নজির সাম্প্রতিক কালে সে ভাবে সামনে আসেনি।
শহরের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকাতে অনলাইনে প্রতারণার জাল ছড়িয়ে পড়লেও তা রুখতে পুলিশ-প্রশাসনের যথেষ্ট উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের। তবে অনলাইন প্রতারণা চক্র নিয়ে বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর সংস্থার মাধ্যমে এবং প্রশাসনিক ভাবেও নিরন্তর সচেতনতামূলক বার্তা পাঠানো হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) মানবকুমার সিংঘল বলেন, ‘‘আমরা সাধারণ মানুষকে অনলাইন প্রতারণার ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য সব সময় সতর্ক করি। লোকজনকেও সজাগ থাকতে হবে।’’ তবে এ দিনের ঘটনা নিয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ রাত পর্যন্ত জমা পড়েনি। মৃতদেহের পাশ থেকে পাওয়া সুইসাইড নোট খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy