পাকিস্তান থেকে ভারতে আসা উদ্বাস্তুরা।—ছবি আর্কাইভ থেকে
সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দেশ উত্তাল। কেন্দ্র সেই আইন প্রয়োগের জন্য বিধি তৈরির প্রস্তুতিও শুরু করেছে। এর মধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দেশভাগের সময়কার প্রায় ১২ লক্ষ গোপন ফাইল প্রকাশ্যে (‘ডিক্লাসিফাই’) এনেছে। ওই সব ফাইলে দেশভাগের সময়কার উদ্বাস্তু সমস্যা সংক্রান্ত প্রায় সব তথ্যই রয়েছে বলে মন্ত্রক সূত্রের খবর। জাতীয় মহাফেজখানা ফাইলগুলি ঝাড়াইবাছাই করে ‘ক্যাটালগিং’ বা শ্রেণিবদ্ধ করবে। তার পরে দেশের আমজনতার জন্য সেই ফাইলগুলি খুলে দেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৪৭ থেকে ১৯৫০ পর্যন্ত উদ্বাস্তুদের এ দেশে আসা, পুনর্বাসন, ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত যাবতীয় ফাইল রয়েছে এর মধ্যে। পাকিস্তান থেকে আসা কোনও পরিবার সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ পেয়ে থাকলে বা অন্য কোনও ভাবে নথিভুক্ত হয়ে থাকলে তার সবিস্তার বিবরণ মিলবে এই ১২ লক্ষ ফাইলের মধ্যে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের পরিপ্রেক্ষিতে পুরনো ওই তথ্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে জানাচ্ছেন মন্ত্রকের কর্তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এর আগে কোনও মন্ত্রক একসঙ্গে ১২ লক্ষ গোপন ফাইল প্রকাশ্যে আনেনি। এত বিপুল পরিমাণ ফাইল নিয়ে জাতীয় মহাফেজখানারও অবস্থা সঙ্গিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, মহাফেজখানায় এত ফাইল রাখার জায়গা নেই। আপাতত দিল্লির জয়সলমের হাউসে ফাইলগুলি রাখা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ও মহাফেজখানা কর্তৃপক্ষ ফাইলগুলি বাছাই করছেন। কোন কোন ফাইল রাখতে হবে, কোনগুলি অপ্রয়োজনীয়, তার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এর পরে সেগুলির শ্রেণিবদ্ধ করা হবে।
মহাফেজখানা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, একসঙ্গে এত ফাইল নিয়ে কোনও দিন কাজ হয়নি। যে-ভাবে কাজ চলছে, তাতে ক্যাটালগিং শেষ করতে আরও ১৫ বছর লেগে যেতে পারে। অবিলম্বে লোকলশকর বাড়াতে হবে। শুধু দেশভাগ সংক্রান্ত ফাইল রাখার জন্য আলাদা ভবন দরকার বলে জানাচ্ছেন কর্তারা। যে-সব ফাইল প্রকাশ্যে আনা হয়েছে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিধি তৈরির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা এখনও মাঝেমধ্যেই জয়সলমের হাউসে এসে সেগুলো দেখে যাচ্ছেন, তথ্য সংগ্রহ করছেন।
মন্ত্রক সূত্রের খবর, দেশভাগের পরে নানা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া, ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ঠিক করা, পুনর্বাসনের স্থান ঠিক করার মতো তথ্য রয়েছে ওই সব ফাইলে। সব চেয়ে বেশি ফাইলে রয়েছে উদ্বাস্তু পরিবারগুলির ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন এবং ক্ষতিপূরণ মেটানোর নথি। অবিভক্ত পঞ্জাব থেকে যে-উদ্বাস্তুরা এসেছিলেন, তাঁরা দিল্লি, হরিয়ানা এবং এ দেশের পঞ্জাব প্রদেশে পুনর্বাসন পেয়েছেন। তাঁদের নথিই বেশি। তুলনায় পূর্ব পাকিস্তান থেকে যে-সব বাঙালি পরিবার পশ্চিমবঙ্গে এসেছিলেন, তাঁদের নথির সংখ্যা কম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা জানান, পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা পরিবারগুলির ক্ষতিপূরণের নথি তৎকালীন রাজ্য পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের কাছেও রয়েছে। প্রয়োজনে সেগুলো বার করার চেষ্টা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy