Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Metropolitan Institution for Girls

বাংলার পাশাপাশি এ বার ইংরেজিতেও পড়ানো হবে বিদ্যাসাগরের স্মৃতিধন্য স্কুলে

কলকাতা শহরে বাংলা মাধ্যমের বেশ কিছু নামী স্কুলেও পড়ুয়ার সংখ্যা এখন তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এই ধরনের কিছু স্কুলকে পুনরুজ্জীবিত করতে সেখানে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যমও চালু করছে শিক্ষা দফতর।

An Image Of Classroom

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:৩৩
Share: Save:

মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন (মেন) ফর গার্লসে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে বাংলার পাশাপাশি শুরু হতে চলেছে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বিপাশা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘শিক্ষা দফতর পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর অনুমতি দিয়েছে। বিদ্যাসাগরের স্মৃতিবিজড়িত এই স্কুলে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যমেও পড়ানো হবে। পড়াবেন বাংলা মাধ্যমের শিক্ষিকারাই। ইংরেজি মাধ্যম চালু হচ্ছে জানতে পেরে ইতিমধ্যেই পঞ্চম শ্রেণিতে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করানোর জন্য বেশ কয়েক জন অভিভাবক ফর্ম তুলে নিয়ে গিয়েছেন।’’

কলকাতা শহরে বাংলা মাধ্যমের বেশ কিছু নামী স্কুলেও পড়ুয়ার সংখ্যা এখন তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এই ধরনের কিছু স্কুলকে পুনরুজ্জীবিত করতে সেখানে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যমও চালু করছে শিক্ষা দফতর। ১৮৬৪ সালে স্থাপিত এই মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন (মেন) ফর গার্লসে ছাত্রীর সংখ্যা বর্তমানে তলানিতে। ছাত্রীর সংখ্যা এখন একশোর আশপাশে। প্রধান শিক্ষিকার কথায়, ‘‘এই স্কুল যে অঞ্চলে সেখানে প্রচুর হিন্দিভাষীর বসবাস। তাঁরা অনেকেই বাচ্চাদের বাংলা মাধ্যমে পড়াতে চান না। আশা করা যায়, এখানে ইংরেজি মাধ্যম শুরু হলে অনেকেই ছেলেমেয়েদের ভর্তি করাতে উৎসাহী হবেন।’’ বিপাশা জানালেন, তাঁদের স্কুলে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অধীনে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ার খরচ বাংলা মাধ্যমের মতোই। বছরে ২৫০ টাকা। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ারা বাংলা মাধ্যমের মতোই বিনামূল্যে বই পাবে। স্মার্ট ক্লাস থেকে শুরু করে সব ধরনের সুবিধাও থাকবে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো স্কুলে আছে কি? বিপাশা বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে ক্লাসঘরের কোনও অভাব নেই। বরং ইংরেজি মাধ্যম হয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়লে শিক্ষিকারা খুশিই হবেন। আমাদের স্কুলে শিক্ষিকার সংখ্যাও পর্যাপ্ত।’’

শহরের বেশ কয়েকটি স্কুলে বাংলা মাধ্যমের পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যমও চলছে। যেমন, হিন্দু স্কুল, যাদবপুর বিদ্যাপীঠ। হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত বললেন, ‘‘বর্তমানে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ইংরেজি মাধ্যম চলছে। ধাপে ধাপে বাড়ানো হচ্ছে। ইংরেজি মাধ্যমে প্রতিটি সেকশনে ৪০ জন করে পড়ুয়া রয়েছে। কোনও আসন খালি নেই। আমাদের স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর জন্য আলাদা শিক্ষক নেই। যাঁরা বাংলা মাধ্যমে পড়ান, তাঁরাই ইংরেজি মাধ্যমে পড়াচ্ছেন।’’ প্রশ্ন উঠেছে, যাঁরা বাংলা মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে পড়াচ্ছেন, সেই শিক্ষকেরা ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর ক্ষেত্রে কতটা সড়গড়? যাদবপুর বিদ্যাপীঠেও এখন বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানো হয়। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য ব‌লেন, ‘‘পঞ্চম শ্রেণিতে ইংরেজি মাধ্যমের ১৯টি আসনে ভর্তি হতে ৩৫০ জন পড়ুয়া লটারিতে অংশ নিয়েছে। বাংলা মাধ্যমের শিক্ষকেরাই ইংরেজি মাধ্যমে পড়াচ্ছেন।’’

সমগ্র শিক্ষা মিশনের কলকাতা জেলার চেয়ারম্যান কার্তিক মান্না বললেন, ‘‘যে সমস্ত স্কুলে পরিকাঠামো রয়েছে, অর্থাৎ পর্যাপ্ত ক্লাসঘর, শৌচাগার, শিক্ষক রয়েছেন, সেই সব স্কুল আবেদন করলে তাদের বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যম চালু করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়ছে। যাঁরা ইংরেজি মাধ্যমে পড়াচ্ছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে দেখা হচ্ছে, স্নাতক স্তরে ইংরেজি একটি বিষয় হিসাবে ছিল কি না, অথবা তাঁর স্নাতক স্তরে পড়াশোনার মাধ্যম ইংরেজি ছিল কি না। দু’টির মধ্যে যে কোনও একটি থাকলেই হবে। পরে এঁদের ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর জন্য আলাদা করে প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

English Medium Bengali Medium School students
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE