Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ছকভাঙা রবীন্দ্রগান প্রাণ ঢালল আনন্দ সন্ধ্যায়

ব্যতিক্রমী এক সন্ধ্যায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকল এ বছরের ‘আনন্দ পুরস্কার’। ঐতিহ্যমণ্ডিত এই পুরস্কার প্রদানের সান্ধ্যবাসরটি অভিনব হয়ে উঠেছিল উচ্চাঙ্গসঙ্গীত শিল্পী রাশিদ খানের সঙ্গীত পরিবেশনায়।

সুরে-সুরে: রবীন্দ্রসঙ্গীতে রাশিদ খান। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী।

সুরে-সুরে: রবীন্দ্রসঙ্গীতে রাশিদ খান। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী।

চিত্রিতা চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:২৮
Share: Save:

ব্যতিক্রমী এক সন্ধ্যায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকল এ বছরের ‘আনন্দ পুরস্কার’। ঐতিহ্যমণ্ডিত এই পুরস্কার প্রদানের সান্ধ্যবাসরটি অভিনব হয়ে উঠেছিল উচ্চাঙ্গসঙ্গীত শিল্পী রাশিদ খানের সঙ্গীত পরিবেশনায়।

এ দিনের অনুষ্ঠানে শিল্পী নিবেদন করলেন তিনটি রবীন্দ্রগান। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের প্রতিবেশে পরিবেশিত গানগুলি শিল্পীর স্বকীয় গায়নশৈলীতে আবেদনময় হয়ে উঠেছিল।

রবীন্দ্রনাথ তাঁর অজস্র গানে হিন্দুস্থানি সঙ্গীতের সনাতন ধারাকে অনুসরণ করেছিলেন। রবীন্দ্রসঙ্গীতের মূলগত ভিতটি রচনা করে দিয়েছিল ভারতের প্রাচীনতম এই সঙ্গীতধারা। শিল্পী রাশিদ খান নির্বাচন করেছিলেন তেমনই তিনটি রবীন্দ্রগান, যেখানে মার্গসঙ্গীতের প্রভাব সুস্পষ্ট। রাগাশ্রয়ী স্বরালাপের সংযোগে তিনি রবীন্দ্রগানগুলিতে ভিন্ন মাত্রা যোগ করলেন।

তাঁর প্রথম নিবেদন ছিল ‘মাঝে মাঝে তব দেখা পাই’। ১৮৮৫ সালে রচিত এই গানটি কাফি রাগে সৃজিত। রাশিদ গানটি শোনালেন খানিক ব্যতিক্রমী ভঙ্গিতে। বহুশ্রুত কীর্তনাঙ্গের পরিবর্তে শোনালেন টপ্পা অঙ্গে সুরারোপিত গানটি। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের মেলবন্ধনে পরিবেশিত এই রবীন্দ্রগান শ্রোতাদের হৃদয়ে দাগ কেটে গেল।

পরবর্তী গান— ‘একি লাবণ্যে পূর্ণ প্রাণ, প্রাণেশ হে’। এই রবীন্দ্রগান মহীশূরি সুর অনুসরণে রচিত। একতালে নিবদ্ধ গানটি তিনি দ্রুত বন্দিশের মেজাজে গাইলেন। অলঙ্কার এবং স্বরবিস্তার প্রয়োগে গানটি হয়ে উঠেছিল ব্যতিক্রমী। সুরবিহারে ফুটে উঠছিল পটদীপ রাগের ছায়া। দরাজ কণ্ঠ এবং নিজস্ব মেজাজে গানের অন্তর্নিহিত ভাবটি চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুললেন শিল্পী। বিপ্লব

মণ্ডলের যথাযোগ্য তবলাবাদন এবং মুরাদ আলির সারেঙ্গি বাড়তি আবেদন যোগ করেছিল সঙ্গীত পরিবেশনায়।

আরও পড়ুন:‘বিপুলা পৃথিবী’র হাতে আনন্দ-অর্ঘ্য

রাশিদের শেষতম নিবেদন ছিল ‘এ পরবাসে রবে কে’। এটি একটি ভাঙা গান। সিন্ধু রাগে মধ্যমান তালে নিবদ্ধ এই গানটি শোরী মিঞার ‘ও মিঞা বেজনুওয়ালে’-র সুরাবলম্বনে সৃজিত। সাধারণ ভাবে এই গানটি তাল ছাড়া অধিক শোনা যায়। তালবদ্ধ গানটি শিল্পীর ব্যতিক্রমী উপস্থাপনায় মনোরম পরিবেশ রচনা করেছিল। হারমোনিয়ামে চমৎকার সঙ্গত করেছেন জ্যোতি গোহো।

রবীন্দ্রনাথের গানের প্রধান অবলম্বন সুর এবং সাহিত্য। এই দুয়ের যথাযথ মেলবন্ধনই তাঁর গানকে চিরনবীন করে রেখেছে। শিল্পী রাশিদ খানের উপস্থাপনাতেও ভাবসম্মিলন ঘটল সুর ও সাহিত্যের।

অন্য বিষয়গুলি:

Rashid Khan Rabindra Sangeet Ananda Puraskar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE