চাকরি-প্রার্থীদের অবস্থান। ফাইল চিত্র।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) চাকরি-প্রার্থীদের অবস্থানে পোস্টার হাতে এর ব্যক্তির ছবি নিয়ে বিতর্ক বাধল। সুদাম গিরি নামে শিবপুরের ওই বাসিন্দা টেট উত্তীর্ণ বা মেধা-তালিকায় নাম থাকা কেউ নন। পেশায় তিনি মাংস বিক্রেতা। ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে ‘আমরা টেট পাশ প্রশিক্ষিত, তবুও আমরা বঞ্চিত’ লেখা পোস্টার নিয়ে তিনি অবস্থানে শামিল। এই ছবিকে হাতিয়ার করে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রসের অভিযোগ, চাকরি-প্রার্থীদের আন্দোলনকে কুৎসিত ভাবে ব্যবহার করছে বিরোধীরা। অবস্থানকারীদের তরফে অবশ্য বলা হয়েছে, তাঁদের আন্দোলনে সহমর্মিতা জানাতে এসে অনেকেই এমন ছবি তোলেন। এই ছবি দেখিয়ে চাকরি-প্রার্থীদের আন্দোলনে রাজনৈতিক রং লাগানোর চেষ্টা ঠিক নয়।
শিবপুরের সুদামের দাবি, দশমীর দিন বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতেই তিনি প্রাথমিকের চাকরি-প্রার্থীদের মঞ্চে গিয়েছিলেন। যোগাযোগ করা হলে সোমবার তিনি বলেন, ‘‘চারিদিকে দুর্গাপুজোর উৎসব, আনন্দ চলছে। আর কয়েক জন চাকরি-প্রার্থী আন্দোলন করছে। এটা আমাদের খুব খারাপ লেগেছে। তাই আমরা কয়েক জন মিলে শিবপুর থেকে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে ওই মঞ্চে গিয়েছিলাম।’’ তাঁর দাবি, কোনও রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় তিনি ওই মঞ্চে যাননি। সুদামের বক্তব্য, ‘‘ওখানে তো কত মানুষই ব্যানার ধরে বসে রয়েছে। আমিও সে রকমই ব্যানার নিয়ে বসেছিলাম। ব্যানার নিয়ে বসলেই সবাইকে চাকরি-প্রার্থী হতে হবে, সেটা কে বলল? দিল্লিতে যে কৃষক আন্দোলন হয়েছিল, যারা তাঁদের সমর্থন করতে গিয়েছিলেন, ব্যানার হাতে বসেছিলেন, তাঁদের সবাই কি কৃষক ছিলেন?’’ সুদাম জানান, তিনি নিশ্চয়ই একটি রাজনৈতিক দলের সমর্থক। কিন্তু সে দিন অবস্থানে যাওয়ার সঙ্গে কোনও দলের সম্পর্ক নেই।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘‘চাকরি-প্রার্থীদের ধর্না-মঞ্চকে কুৎসিত ভাবে ব্যবহার করছেন বিরোধীরা। সেখানে যে কেউ ঢুকে যাচ্ছেন। চাকরি-প্রার্থীদেরও বলব, আপনাদের তো চাকরির আশ্বাস দিয়েছে সরকার। সরকারের উপরে ভরসা রাখা উচিত।’’
প্রাথমিকের এক চাকরি-প্রার্থী অচিন্ত্য সামন্ত বলেন, ‘‘বিষয়টা নিয়ে অযথা জলঘোলা হচ্ছে। আমাদের সংগঠন বা আন্দোলন, পুরোটাই অরাজনৈতিক। আমাদের মঞ্চের বদনাম করা হচ্ছে। আন্দোলন সমর্থন করতে কত মানুষই তো আসছেন। উনিও এসেছিলেন। উনি মাংস বিক্রেতা কি না, তা আমাদের জানা নাই। কোনও দলের প্ল্যাকার্ড বা পতাকা নিয়ে ওঁরা বসেননি।’’ দশমীর দিন সুদাম যেখানে বসেছিলেন, তার পাশেই ছিলেন এক আন্দোলনকারী পিয়ালী গুছাই। তিনি বলেন, ‘‘দশমীর দিন অনেকেই কিন্তু আন্দোলন সমর্থন করতে এসেছিলেন মিষ্টি নিয়ে। সুদাম আমাদের সহমর্মিতা জানাতেই বিজয়ার মিষ্টি খাইয়েছিলেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy