Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

টেবিল পেতে রোগী দেখলেন চিকিৎসকেরা

পুরুলিয়া এবং বালুরঘাটের জেলা হাসপাতাল, কামাখ্যাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে  প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করে বহির্বিভাগ চালু রাখা হয়েছিল।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৯ ০২:২০
Share: Save:

হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে পাতা হয়েছে চেয়ার-টেবিল। তাতে বসেই রোগী দেখছেন ডাক্তারেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দুই ইন্টার্ন আহত হওয়ার প্রতিবাদে বহির্বিভাগ বন্ধ রাখা হয়েছে। তা বলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের ফেরানো হয়নি। বুধবার এ ছবি হাওড়া জেলা হাসপাতাল, চুঁচুড়া সদর হাসপাতাল এবং আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল চত্বরের।

পুরুলিয়া এবং বালুরঘাটের জেলা হাসপাতাল, কামাখ্যাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করে বহির্বিভাগ চালু রাখা হয়েছিল। কালো ব্যাজ পরে এনআরএস-কাণ্ডের প্রতিবাদ জানালেও উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার হাসপাতাল এবং কলকাতা লাগোয়া হুগলির তিনটি মহকুমা হাসপাতাল এবং গ্রামীণ হাওড়ার উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক রেখেছিলেন ডাক্তারেরা। বাঁকুড়ার খাতড়া মহকুমা হাসপাতাল, নদিয়ার তেহট্ট মহকুমা হাসপাতাল, পলাশিপাড়া প্রীতিময়ী গ্রামীণ হাসপাতাল ও করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের বহির্বিভাগ বন্ধ রাখা হলেও, রোগীদের জরুরি বিভাগে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা, ওষুধ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এই দৃশ্য দেখা গিয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল, শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল, ময়নাগুড়ি হাসপাতাল, জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালেও। জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটিতেও ডাক্তারেরা বাইরে টেবিল-চেয়ার পেতে বসে রোগীদের দেখেন। সেখানে জরুরি বিভাগে সাধারণত এক জন ডাক্তার থাকেন। এ দিন ছিলেন তিন জন।

পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল, বীরভূমের রামপুরহাট হাসপাতাল, পশ্চিম মেদিনীপুরের সাতটি গ্রামীণ এবং দু’টি সুপার স্পেশ্যালিটি, পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি, মুর্শিদাবাদের লালবাগ ও বেলডাঙার প্রায় সব ক’টি হাসপাতাল, উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া স্টেট জেনারেল, চাঁদপাড়া গ্রামীণ, বসিরহাট ও বসিরহাট সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, দমদম ও দক্ষিণ দমদম পুরসভার হাসপাতালে। বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে পরিষেবা স্বাভাবিক থাকায় রোগীর ভিড় উপচে পড়েছিল। পরিস্থিতি সামলাতে বাড়তি তিন জন চিকিৎসককে পাঠায় স্বাস্থ্য দফতর।

হাওড়া জেলা হাসপাতালের প্রবীণ ডাক্তারেরা জানান, যেহেতু রাজ্য জুড়ে চিকিৎসকেরা এনআরএস-কাণ্ডের প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন, তাই বহির্বিভাগের নির্দিষ্ট ঘরে বসেননি তাঁরা। বদলে বাইরে টেবিল-চেয়ার নিয়ে বসে রোগী দেখেছেন। ফলে, রোগী পরিষেবায় সমস্যা হয়নি।

বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের বড় ভরসা খাতড়া মহকুমা হাসপাতাল। ওই এলাকার অনেকের কাছেই এনআরএস-কাণ্ডের খবর পৌঁছয়নি। খাতড়ার তিলবনি গ্রামের বধূ সন্ধ্যা মাঝি, ধরমপুর থেকে তিন বছরের ছেলেকে চিকিৎসা করাতে আসা কবিতা সর্দার বলেন, ‘‘এখানে এসে শুনি বহির্বিভাগ বন্ধ। চিন্তায় পড়েছিলাম।’’ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার তাপসকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘এনআরএসের ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে বহির্বিভাগ বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু রোগীদের চিকিৎসা করার দায়বদ্ধতাও এড়িয়ে যাওয়া যায় না। দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষগুলোর কথা ভেবে তাঁদের জরুরি বিভাগে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়েছে।’’

প্রায় একই যুক্তি রামপুরহাট হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিন্টেডেন্ট ও ভাইস প্রিন্সিপাল (এমএসভিপি) সুজয় মিস্ত্রির।

তাঁর কথায়, ‘‘এই হাসপাতালে মুর্শিদাবাদ ও ঝাড়খণ্ডের একটা অংশ থেকেও রোজ অনেক রোগী আসেন। হাসপাতালের চিকিৎসকদের রোগী পরিষেবা চালু রাখার অনুরোধ করা হয়েছিল। সেটা চালু রয়েছে।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

অন্য বিষয়গুলি:

Health Medical College
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy