Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪

পুর-পরিষেবা নিয়েই বেশি অভিযোগ নবান্নে

লোকসভা ভোটের ফল বেরোনোর পরে সরকারি স্তরে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের অধীনে অভিযোগ গ্রহণের ব্যবস্থা করেছে নবান্ন। গত এক মাস কাজ করার পরে সেই অভিযোগ গ্রহণ বিভাগের একাংশের অভিমত হল, স্থানীয় স্তরে দুর্নীতির অভিযোগই সব চেয়ে বেশি।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৯ ০৩:১২
Share: Save:

সমস্যা, পরামর্শ, ইচ্ছা-অনিচ্ছা, সরকারি কাজের মূল্যায়ন সরাসরি নিজেই শুনতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার তিনি নিজেই শুরু করেছেন ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি। যেখানে ফোনে বা ওয়েবসাইটে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে নিজের কথা জানাতে পারবে আমজনতা।

লোকসভা ভোটের ফল বেরোনোর পরে সরকারি স্তরে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের অধীনে অভিযোগ গ্রহণের ব্যবস্থা করেছে নবান্ন। গত এক মাস কাজ করার পরে সেই অভিযোগ গ্রহণ বিভাগের একাংশের অভিমত হল, স্থানীয় স্তরে দুর্নীতির অভিযোগই সব চেয়ে বেশি। যদি স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারে, তা হলে কাটমানি-বিক্ষোভের আবহে সরকারের ভাবমূর্তি ফেরানো সম্ভব।

অভিযোগ গ্রহণ বিভাগকে গুরুত্ব দিতে এক সিনিয়র আইএএস অফিসারকে তার তদারকির দায়িত্ব দিয়েছে নবান্ন। সঙ্গে দেওয়া হয়েছে আরও কয়েক জন অফিসার। এ মাসের শুরু থেকে সরকারি প্রকল্পগুলির অভিযোগ বিশ্লেষণ শুরু করেন অফিসারেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, গত এক মাসে সব মিলিয়ে ২৩০০ অভিযোগ এসেছে বিভিন্ন জেলা থেকে। বাছাই পর্বে শ’পাঁচেক অভিযোগ ধর্তব্যের মধ্যে আনেননি কর্তারা। তাঁরা জানাচ্ছেন, অযৌক্তিক কথাবার্তা, অনাবশ্যক পরামর্শ বাদ দেওয়া হয়েছে। এর পরেও প্রায় ১৮০০ অভিযোগ বিভিন্ন দফতরে, জেলাশাসক-পুলিশ সুপারদের কাছে ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য পাঠানো হয়েছে। কর্তাদের একাংশ জানান, সাত দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কী করা হল, তা জানাতে বলা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে।

কী ধরনের অভিযোগ সর্বাধিক?

অভিযোগ গ্রহণ কেন্দ্রের বক্তব্য, সব চেয়ে বেশি অভিযোগ এসেছে পুরসভাগুলির পরিষেবা নিয়ে। তার পরেই আছে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা ও অতি সক্রিয়তা নিয়ে অভিযোগ। সেই সঙ্গে স্কুলশিক্ষা দফতরের পেনশন, বদলি, হেনস্থার নানান অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে জমা পড়েছে। তবে সরকারি স্তরে পঞ্চায়েত দফতর নিয়ে অভিযোগ উল্লেখযোগ্য ভাবে কম। কেন? কর্তারা জানাচ্ছেন, পঞ্চায়েতে বেশি অভিযোগ আসছে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের কর্তাদের বিরুদ্ধে। জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ এলে তা রাজনৈতিক ভাবে দেখা হচ্ছে। ফলে সরকারি কাজকর্মের তদারকির মধ্যে তা আনা হচ্ছে না।

সরকারি কর্তারা জানান, শুরুতে রোজ ২০০-র বেশি অভিযোগ আসছিল। এখন তা কমে হয়েছে শ’খানেক। রাজনৈতিক অভিযোগের সংখ্যাও কম করে আড়াই হাজার বলে জানাচ্ছেন কর্তাদের একাংশ।

কেমন ধরনের অভিযোগ বেশি?

সিএমও-র কর্তারা জানাচ্ছেন, একেবারে ব্যক্তিগত সমস্যার কথা লিখে সুরাহা চাওয়ার প্রবণতাই বেশি। পুরসভা নালা পরিষ্কার না-করা, বাড়ির সামনে ভ্যাটের দুর্গন্ধ, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলি নিয়ে ক্ষোভ, বা বদলির আবেদনও সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চলে আসছে। অনেকে আবার বিশ্ব রাজনীতির কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রীর আশু কর্তব্য নিয়েও ‘জ্ঞান’ দিয়ে চলেছেন অহরহ। তাঁদের অভিযোগগুলি শেষ পর্যন্ত ‘জাঙ্ক’ হিসেবে ধরে নেওয়ার কথাই বিবেচনা করছে সরকার। আর রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগগুলির কী হচ্ছে? অভিযোগ গ্রহণ কেন্দ্রের প্রধান কর্নেল দীপ্তাংশু চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে নবান্নের শীর্ষ কর্তারা এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে সরকারি সূত্রের খবর।

অন্য বিষয়গুলি:

Nabanna Mamata Banerjee TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy