ফাইল চিত্র।
সাত বছর আগে ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশে স্টিং অপারেশন চালিয়েছিলেন তিনি। সেই নারদ-কাণ্ডে চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হলেও তখন তৃণমূলে থাকা এবং পরে বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারীকে গ্রেফতার করা হল না কেন, সোমবার প্রশ্ন তুলেছেন ম্যাথু স্যামুয়েল।
ম্যাথুর অভিযোগ, অন্যদের সঙ্গে শুভেন্দুও তাঁর হাত থেকে টাকা নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “আমি নিজে শুভেন্দুর অফিসে গিয়ে টাকা দিয়ে এসেছিলাম। পরে সিবিআইয়ের সামনে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকারও করেছেন শুভেন্দু। তা হলে তাঁর নাম গ্রেফতারের তালিকায় নেই কেন?”
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া মুকুল রায়ও নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত। ম্যাথু এ দিন বলেন, "কলকাতার ভবানীপুরে মুকুলবাবুর ফ্ল্যাটে যাওয়ার পরে তিনি বলেন, ‘আমি টাকা নিই না। আপনি বর্ধমানের পুলিশ সুপার এসএমএইচ মির্জাকে টাকা দিয়ে আসবেন।’ আমি মুকুলবাবুর কথা অনুযায়ী বর্ধমানের তৎকালীন পুলিশ সুপারের হাতে টাকা দিয়ে আসি। এবং মির্জা জানান, তিনি মুকুলবাবুর হয়ে টাকা নিয়ে থাকেন। পুলিশ সুপার সেই টাকা পরে মুকুলবাবুকে দিয়েছিলেন কি না, সিবিআইয়ের তদন্তকারীরাই সেটা বলতে পারবেন। কারণ, মির্জাকে কয়েক বছর আগে নারদ-কাণ্ডে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই।’’
নারদ-কাণ্ডে সিবিআই এ দিন রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিম এবং তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র ও প্রাক্তন তৃণমূল নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে। এ দিনই ওই চার জনের সঙ্গে নারদে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার, বর্তমানে সাসপেনশনে থাকা মির্জার নামে চার্জশিট পেশ করেছে তারা।
শুধু ওই চার জন নয়, সব অভিযুক্তেরই গ্রেফতারি চান ম্যাথু। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগেই নারদ স্টিং অপারেশন করেছিলেন ছদ্মবেশী সাংবাদিক ম্যাথু। ২০১৬-য় বিধানসভা ভোটের মাসখানেক আগে সেই অপারেশনের ভিডিয়ো সম্প্রচার করা হয়। সেই ভিডিয়োয় দেখা যায়, ম্যাথুর হাত থেকে লোকসভার একাধিক প্রার্থী, বিধায়ক ও মন্ত্রী টাকা নিচ্ছেন। তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় দেশ জুড়ে।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সেই মামলার তদন্ত শুরু করে সিবিআই।
এ দিন ফোনে যোগাযোগ করা হলে ম্যাথু বলেন, “তদন্তে দীর্ঘসূত্রতা চলছে। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া শুভেন্দুর বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন আছে।’’ রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, নারদ-কাণ্ডে গ্রেফতারি এড়াতেই শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যান এবং এ দিন প্রমাণিত হয়ে গিযেছে যে, তাঁদের এই দাবি অমূলক নয়।
ম্যাথু মনে করেন সিবিআই আইন মেনেই তদন্ত করছে। নারদ বড় মামলা। ম্যাথুর বক্তব্য, সিবিআই হয়তো ধাপে ধাপে এগোনোর চেষ্টা করছে। তা ছাড়া উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণে এই মামলা চলছে।
ম্যাথুর দাবি, তহলকা ডট কমের কর্ণধার তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন তৃণমূল সদস্য ও অ্যালকেমিস্ট অর্থ লগ্নি সংস্থার চেয়ারম্যান কেডি সিংহের নির্দেশে তিনি নারদ স্টিং অপারেশন করেন। অ্যালকেমিস্টের সল্টলেকের অফিস থেকে নগদ টাকা নিয়েই তিনি নেতা মন্ত্রী ও লোকসভার প্রার্থীদের হাতে তুলে দেন। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এবং সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের সামনে কেডি-র উপস্থিতিতে এই সংক্রান্ত সব রকম তথ্যপ্রমাণ তিনি পেশ করেছেন। পরে কেডি সিংহকে গ্রেফতার করে ইডি।
ম্যাথুর বক্তব্য, নারদ তদন্তে দেরি হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু কোনও ভাবেই সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাট হয়নি। সে-ক্ষেত্রে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের আইন অনুযায়ী শাস্তি পাওয়া উচিত। তাঁর আবেদন, অভিযুক্তেরা যেন কোনও ভাবেই ছাড় না-পান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy