ফাইল চিত্র।
চাকরি না-পাওয়া প্রার্থীরা সরব হওয়ার আগেও যে আপত্তি উঠেছিল এবং প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল, তদন্তে সেটা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে বলে জানাচ্ছে সিবিআই। তারা জানাচ্ছে, বেআইনি নিয়োগের ক্ষেত্রে উপদেষ্টা কমিটির সুপারিশ নিয়ে বেশ কিছু স্কুল আপত্তি-প্রতিবাদ করেছিল। এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ-দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় আইনজীবী ও অভিযোগকারীদের জিজ্ঞাসাবাদে এই তথ্য উঠে এসেছে। ওই সব স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত যোগাযোগ করেনি সিবিআই। প্রয়োজনে পরবর্তী পর্যায়ে ওই সব স্কুলের কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
বেআইনি নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যতম অভিযুক্ত শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতার বিরুদ্ধে যিনি মামলা করেছেন, সেই ববিতা সরকারকে আজ, বুধবার নিজ়াম প্যালেসের আঞ্চলিক দফতরে তলব করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী অঙ্কিতার বেআইনি নিয়োগের ক্ষেত্রে ববিতার বয়ান লিপিবদ্ধ করতে চায় সিবিআই।
সোম ও মঙ্গলবার এসএসসি মামলার কৌঁসুলি, অভিযোগকারীদের প্রাথমিক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁদের বয়ান নথিভুক্ত করা হয়েছে বলে জানান তদন্তকারীরা। এক সিবিআই-কর্তা বলেন, ‘‘অভিযোগের উৎস খোঁজার চেষ্টা চলছে। সে-ক্ষেত্রে অভিযোগকারীদের বিস্তারিত ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার। কারণ, বেআইনি ভাবে চাকরি দেওয়ার সময় যে-বিনিয়োগ করা হয়েছিল, তার সব নথি ওই অভিযোগকারীদের মাধ্যমেই আইনজীবীদের কাছে পৌঁছেছে। মামলা চলাকালেও অভিযোগকারীরা আইনজীবীদের নানা তথ্য সরবরাহ করেছেন। সিবিআইয়ের দাবি, এমন অনেক অভিযোগকারী রয়েছেন, যাঁরা এখনও প্রকাশ্যে আসেননি। তাঁদেরও খোঁজ চলছে। আইনজীবীদের মাধ্যমে ওই সব অভিযোগকারীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
তদন্তকারীরা জানান, বেআইনি ভাবে নিয়োগপত্রের ভিত্তিতে কর্মরত একাধিক ব্যক্তিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনের চিত্র স্পষ্ট। কী ভাবে কার মাধ্যমে বেআইনি নিয়োগ হয়েছিল, সেই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সূত্রও মিলেছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। তাঁদের কথায়, তদন্ত যতই এগোচ্ছে, বেআইনি নিয়োগের সংখ্যা বাড়ছে। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের যোগসাজশে একটি বৃহত্তর চক্র যে বেআইনি নিয়োগে সক্রিয় ছিল, তা স্পষ্ট হয়েছে। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী (বর্তমানে শিল্পমন্ত্রী) পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ইতিমধ্যেই ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।এ ছাড়াও, দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকেও। তদন্তকারীদের দাবি, বেআইনি নিয়োগের ক্ষেত্রে শুধু এসএসসি-র উপদেষ্টা কমিটির পাঁচ সদস্য নয়, শিক্ষা দফতরের অনেক অফিসারও কোনও না-কোনও ভাবে সক্রিয় ছিলেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
প্রশ্ন উঠছে, আর্থিক ভাবে তাঁরা কি লাভবান হয়েছেন? এ প্রসঙ্গে এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়া প্রার্থীরা তদন্তের ক্ষেত্রে অন্যতম সাক্ষী তথা তুরুপের তাস। আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমেই যে বেআইনি ভাবে নিয়োগ করা হয়েছিল, কিছু চাকরিপ্রার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া তথ্যে সেটা একেবারেই পরিষ্কার। শুধু তাই নয়, সেই টাকার ভাগ কোথায় কাদের কাছে পৌঁছেছে, সেটাও স্পষ্ট হয়ে যাবে অচিরেই।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy