ভাসছে বাঁশঝাড়। বাঁকুড়ার সোনামুখীর শালি নদীতে। ছবি: শুভ্র মিত্র
জল নামছে বহু জায়গা থেকেই। তবে কোথাও ফুঁসছে নদী। কিছু জায়গায় নতুন করে জলও ঢুকছে।
শনিবারও হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও দুই বর্ধমানের বিস্তীর্ণ অংশ ছিল জলের তলায়। ত্রাণ ও পানীয় জলের হাহাকারের সঙ্গে দাঁড়ি নেই মৃত্যুতেও। হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের শিবপুরে এ দিন জলের স্রোতে ভেসে মৃত্যু হয়েছে ঋদ্ধি ধাড়া নামে এক শিশুর। তলিয়ে গিয়েছিল শিশুটি। পরে দেহ উদ্ধার হয়। কাটোয়ায় অজয়ের জমা জলে ভেসে থাকা বিদ্যুৎবাহী তারে হাত পড়ে বানু দাস (৪২) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ।
বন্যা পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি হয়নি হুগলির আরামবাগে। শনিবার দ্বারকেশ্বরের জলস্তর কিছুটা কমায় গোঘাটের দু’টি ব্লক, আরামবাগের তিনটি পঞ্চায়েত এবং পুর এলাকা কিছুটা স্বস্তিতে। তবে দামোদর, মুণ্ডেশ্বরী এবং রূপনারায়ণ চরম বিপদসীমার উপরে বইছে। প্লাবিত পুরো পুরশুড়া ব্লক, আরামবাগের ১৩টি পঞ্চায়েত এবং খানাকুলের ২টি ব্লকের ২৪টি পঞ্চায়েত এলাকাই। মুণ্ডেশ্বরীর পুরনো জমিদারি বাঁধ বহু জায়গায় ধসে গিয়ে গ্রামগুলিতে জল বাড়ছে। হাওড়ার আমতা-২ ব্লকের ১৪টির মধ্যে ৬টি পঞ্চায়েত নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। সর্বত্রই ত্রাণ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনের বক্তব্য, চিঁড়ে-গুড় পাওয়া যায়নি। তবে, ত্রিপল, চাল এবং শিশুখাদ্য দেওয়া হচ্ছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে সব থেকে খারাপ অবস্থা ঘাটালে। থানা, পুরসভা, ব্লক অফিস অন্যত্র সরেছে। ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সড়ক, ঘাটাল-মেদিনীপুর (ভায়া নাড়াজোল) সড়ক ডুবেছে। দাসপুর-১ ব্লকও প্লাবিত। মনসুকার বহু গ্রাম ঝুমি নদীর জলে ভেসেছে। দোকান, পাকা বাড়ি তলিয়ে গিয়েছে। লাগাতার বৃষ্টি আর মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে জল ছাড়ায় পূর্ব মেদিনীপুরে কংসাবতীর রুদ্ররূপ। পাঁশকুড়ায় নদীবাঁধের একাধিক জায়গায় ধস নেমেছে।
মেদিনীপুরেও কংসাবতী বইছে বিপদসীমার কাছে। এ দিন সকালে অ্যানিকেত বাঁধ পরিদর্শন করে জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, ‘‘কংসাবতীর এমন ভয়ঙ্কর মূর্তি আগে দেখিনি।’’ সকালে নদিয়ায় ভাগীরথীর জলস্তরও ৮.৮০ মিটারে চূড়ান্ত বিপদসীমার কাছে পৌঁছয়। শান্তিপুর ও চাকদহের গ্রামাঞ্চলে কিছু নিচু এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। নবদ্বীপ শহরের ১৩টি লকগেট বন্ধ রাখা হয়েছে। মায়াপুরের ইদ্রাকপুরে একটি রাস্তা জলে ডুবেছে।
হাওড়ার উদয়নারায়পুরের অবশ্য জল কমছে। জেলা প্রশাসনের কর্তারা মনে করছেন, ডিভিসি ২ লক্ষ ৩১ হাজার কিউসেক জল ছাড়ায় যে পরিমাণ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হয়েছিল, বাস্তবে ঘটেছে তার থেকে কম। শনিবার উদয়নারায়ণপুরে যান জনস্বাস্থ্য কারিগরিমন্ত্রী পুলক রায়। বাঁকুড়ার বড়জোড়া ও সোনামুখীর মানাচরের বেশিরভাগ এলাকা থেকেই জল নামতে শুরু করায় ত্রাণ শিবির কমে হয়েছে ১০টি। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন এলাকায় যান। কাটোয়ায় ত্রাণ শিবির পরিদর্শন করেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের সাঁতলায় অজয়ের ভাঙা বাঁধ পরিদর্শনে গেলে সেচ দফতরের কর্মী-আধিকারিককে বাসিন্দারা নিগ্রহ করেন বলে অভিযোগ। পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের রেলপাড়ে পানীয় জলের দাবিতে পথ-অবরোধ হয়। কালাঝরিয়া জলপ্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পাণ্ডবেশ্বর, জামুড়িয়া, রানিগঞ্জের একাংশে জল সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy