প্রতীকী ছবি।
মেট্রো পরিষেবা শুরু হওয়ার পরে শহরে সে ভাবে করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত না হলেও মেট্রোর কর্মীদের মধ্যে সংক্রমিতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। পুজোর পর থেকে গত দু’মাসের মধ্যে মহাত্মা গাঁধী রোড, চাঁদনি চক, রবীন্দ্র সদন, নেতাজি ভবন, কালীঘাট, মহানায়ক উত্তমকুমার, কবি নজরুল-সহ একাধিক স্টেশনের কর্মীদের সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। কয়েকটি স্টেশনে অল্প সময়ের ব্যবধানে একাধিক কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কারও কারও সংক্রমণ গুরুতর ছিল বলেও সূত্রের খবর। পরিস্থিতি এমনই যে সংক্রমণের আশঙ্কায় মেট্রোর কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। আক্রান্তদের মধ্যে বিভিন্ন স্টেশনের সুপার, স্টেশন মাস্টার পদমর্যাদার আধিকারিকদের পাশাপাশি কমার্শিয়াল পোর্টারেরাও রয়েছেন।
মেট্রো সূত্রের খবর, সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় কয়েকটি ক্ষেত্রে স্টেশনের দৈনন্দিন কাজকর্ম পরিচালনাও কঠিন হয়ে পড়ছে। সংক্রমিতেরা ছুটিতে চলে গেলে একাধিক কর্মীকে বাড়তি কাজের চাপ নিতে হওয়ায় তাঁদের মধ্যেও সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে। সম্প্রতি নেতাজি ভবন, কালীঘাট এবং মহানায়ক উত্তমকুমার স্টেশনে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এমনকি, কিছু ক্ষেত্রে কর্মী সংখ্যার অপ্রতুলতার কারণে বিধি মেনে সংক্রমিতদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের আইসোলেশনে পাঠানোও সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এর জেরে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে কর্মীদের একাংশের মধ্যে।
মেট্রোর কর্মীরা ছাড়াও আরপিএফ বা রেল রক্ষী বাহিনীর কর্মীদের মধ্যে সংক্রমণের হারও যথেষ্ট বেশি বলে জানা যাচ্ছে। একাধিক ব্যারাকে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। পার্ক স্ট্রিটের মেট্রো ভবনেও প্রায় সব ক’টি তলেই কর্মীদের মধ্যে সংক্রমণের ঘটনা সামনে এসেছে। তাঁদের মধ্যে অনেকের করোনা পরবর্তী অসুস্থতাও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। মেট্রো সূত্রের খবর, বিভিন্ন স্টেশনে আরপিএফ জওয়ান, স্টেশন মাস্টার, কমার্শিয়াল পোর্টার এবং সাফাইকর্মীদের মধ্যে সংক্রমণের হার বেশি। তুলনায় টিকিট কাউন্টারের কর্মী, প্যানেল অপারেটরদের মধ্যে সংক্রমণের হার কম। বিভিন্ন স্টেশনে কর্তব্যরত আধিকারিকদের একাংশের মতে, আরপিএফ কর্মী, স্টেশন মাস্টার, কমার্শিয়াল পোর্টারদের একটি বড় অংশ রোজ সরাসরি যাত্রীদের সংস্পর্শে আসায় এমন পরিস্থিতি দেখা দিচ্ছে। মেট্রো যাত্রীদের অনেকেই স্মার্ট কার্ড ফেরানো-সহ নানা কারণে স্টেশন মাস্টারের ঘরে যাতায়াত করছেন। সামগ্রিক ভাবে স্টেশন পরিচালনার কাজ তদারকি করার জন্য স্টেশন সুপার এবং মাস্টারদের ঘোরাঘুরিও করতে হয় বেশি। কমার্শিয়াল পোর্টারদের প্রায়ই বহু প্রয়োজনে দ্রুত ডাক পড়ে। ফলে ওই কর্মীদের মধ্যে সংক্রমণের হার বেশি। তুলনায় টিকিট কাউন্টারে কাচের আড়াল থাকায় এবং টোকেন ব্যবহার বন্ধ থাকায় সেখানকার কর্মীরা আক্রান্ত কম হচ্ছেন।
মেট্রো সূত্রের দাবি, গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে মেট্রো পরিষেবা শুরু হওয়ার পরে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০০ জন কর্মী সংক্রমিত হয়েছেন। কয়েক জনের মৃত্যুও ঘটেছে বলে অভিযোগ। কলকাতা মেট্রোয় আইএনটিটিইউসি-র কর্মী সংগঠন বিষয়টি নিয়ে একাধিক চিঠি দিলেও কর্তৃপক্ষ তেমন সদর্থক পদক্ষেপ করেননি বলেই অভিযোগ। যদিও, মেট্রোকর্তাদের একাংশের দাবি, সব ক্ষেত্রেই স্যানিটাইজ়েশনের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। পরিষেবার সঙ্গে আপস না করে বিধি মেনে চলার দিকেও খেয়াল রাখা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে এক মেট্রো কর্তা বলেন, ‘‘অনেকেই যেমন সংক্রমিত হচ্ছেন, তেমনই সামগ্রিক বিচারে সংক্রমণ কমছেও। ফলে পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে আশা রাখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy