শনিবার রাজ্য জুড়ে ২০৭টি কেন্দ্রে টিকাকরণ কর্মসূচি চলেছে। নিজস্ব চিত্র
প্রথম দিনে রাজ্যে করোনা টিকাকরণের কর্মসূচিতে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হল না। অনেকেই এলেন না কোভিশিল্ড টিকা নিতে। শনিবার রাজ্য জুড়ে ২০৭টি কেন্দ্রে টিকাকরণ কর্মসূচি চলেছে। স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব ছিল, প্রতিটি কেন্দ্রে ১০০ জন করে করোনার টিকা নিলে ২০ হাজার ৭০০ জন কোভিশিল্ডের ডোজ পাবেন। এ দিন শেষ পর্যন্ত সেই সংখ্যাটা থেমে গেল ১৬ হাজারের আশপাশে।
করোনার প্রতিষেধক টিকা নেন ডাক্তার, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। কেউ কেউ দ্বিধাগ্রস্ত থাকলেও, করোনা টিকা কোভিশিল্ড শরীরে প্রবেশ করার পর, অনেকেই বলছেন, এ যেন মৃত্যু মুখে ‘অমৃত’-এর ভাণ্ডার হাতে পাওয়া। করোনাকে জব্দকে কেন্দ্রীয় সরকার আপাতত কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিনকে ছাড়পত্র দিয়েছে। আজ, শনিবার গোটা দেশের সঙ্গে এ রাজ্যেও টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। রাজ্যে প্রায় ৭ লক্ষ কোভিশিল্ড পৌঁছেছে।
কেন্দ্রের পাঠানো টিকা যত দিন রাজ্যের হাতে থাকবে, তত দিনই টিকাকরণ প্রক্রিয়া চলবে। কম পরিমাণে টিকা পাঠানো নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা হয়েছে। নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টিকা কেনা নিয়েও স্বাস্থ্য কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আগামী সপ্তাহে, সোম, মঙ্গল এবং শুক্র-শনি টিকাকরণ কর্মসূচি চলবে। প্রতিটি কেন্দ্রে দৈনিক ১০০ জন করে টিকা পাবেন।
এসএসকেএম-এর গ্রুপ ডি কর্মী রাজা চৌধুরী পেলেন প্রথম করোনা টিকা। নিজস্ব চিত্র
এ দিন বিসি রায় হাসপাতালের এক নার্স অসুস্থ হয়ে পড়েন টিকা নেওয়ার পর। তাকে এনআরএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যদিও তিনি টিকা নেওয়ার কারণে অসুস্থ হয়েছেন কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত নন চিকিৎসকেরা। এ দিন রামপুরহাটে এমনই একটি ঘটনা ঘটে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আরও বেশি হাসপাতালে টিকা পৌঁছে দেওয়া যায় কি না, তার চেষ্টা চলছে। এ দিন সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে বেসরকারি ৫ হাসপাতালেও টিকাকরণ প্রক্রিয়া চলেছে। বিশেষত যাঁরা কোভিড-হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন, তাঁদেরই আগে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। প্রায় ৬ লক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী আগে টিকা পাবেন। তার পর বাকিরা।
কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের উপস্থিতিতে এ দিন এসএসকেএম হাসপাতালে প্রথম টিকা পান গ্রুপ-ডি কর্মী রাজা চৌধুরী। হাসপাতালে কাজ করতে করতে তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। তিনিই এ দিন প্রথম টিকা পান। তার সঙ্গেই দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসাবে টিকা পেয়েছেন অমৃত পায়রা। শুধু এসএসকেএম-এ নয়, কলকাতার ১৯টি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাকরণ কর্মসূচি চলেছে। রাজা চৌধুরী বলেন, “টিকা পাব কি না ভাবিনি। আমার করোনা হয়েছিল। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে। বাড়ির লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে পারছিলাম না। ভাল লাগছে করোনার টিকা পেয়ে। যেন অমৃতের সন্ধান পেলাম।”
চিকিৎসক মানস গুমটাকে দেওয়া হচ্ছে করোনা টিকা। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, “অনেকেই এ দিন টিকা নিয়েছেন। রাজ্যের প্রায় ৭৫ শতাংশের কাছাকাছি। কলকাতায় ৯২ শতাংশ।”
হাসপাতালগুলির পাশাপাশি কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে টিকাকরণ কর্মসূচি চলেছে। এ দিন শুক্লা দাস, বিপাশা সেন, ইয়াসিন আখতার-সহ ১০০ জন ডাক্তার, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা পেয়েছেন। আগে থেকেই তাঁদের কাছে বার্তা পৌঁছে গিয়েছিল।
যদিও এ দিনকো-উইন অ্যাপ কাজ করেনি। ফলে রাজ্য জুড়েই টিকাকরণ কর্মসূচি চলেছে হাতেকলমে। পরে তাঁদের নাম, ঠিকানা কো-উইন অ্যাপে নথিভূক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্তা।
আরও পড়ুন:জেলায় জেলায় বিভিন্ন কেন্দ্রে চলছে টিকাকরণের কাজ
আরও পড়ুন: ন্যাতা-বালতি ধরা হাতে ডাক্তারদের আগেই টিকা পেলেন মুন্না-সঞ্জয়-চন্দনরা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy