তাপস চট্টোপাধ্যায় এবং সব্যসাচী দত্ত।—নিজস্ব চিত্র
ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়কে সামনে রেখে বিধাননগরে মেয়র সব্যসাচী দত্তের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার যে প্রস্তুতি চলছে, তাতে সল্টলেকের তৃণমূল কাউন্সিলরদের একাংশ খুশি নন। তাঁদের মতে, রাজারহাটের প্রাক্তন সিপিএম নেতা তাপসবাবু মেয়র হলে সেটা সল্টলেকবাসীদের আবেগকে ‘আঘাত’ করবে।
সিপিএম থেকে বছর চারেক আগে তৃণমূলে আসেন তাপসবাবু। তার আগে ২০১১-র বিধানসভা ভোটে তৎকালীন সিপিএম প্রার্থী তাপসবাবুকে হারিয়েছিলেন তৃণমূলের সব্যসাচী। এর পরে তৃণমূলের দলীয় অঙ্কে পুরভোটে জেতার পরে তাপসবাবুকে ডেপুটি মেয়র করার সিদ্ধান্ত নেন দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। পদে বসলেও মেয়র সব্যসাচীর সঙ্গে সম্পর্ক কখনওই ‘মধুর’ নয়। অন্যদিকে তৃণমূলের অন্দরে গুঞ্জন, তাপসবাবুর মাথায় দলের একটি প্রভাবশালী অংশের হাত আছে।
এখন সম্ভাব্য পরবর্তী মেয়র হিসেবে তাঁর নাম সামনে আসার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিধাননগর পুরভবনেই শোনা যাচ্ছে ভিন্ন সুর। বিধাননগরের চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যখন সব্যসাচী মেয়র হন, তখন আমারও মেয়র হওয়ার ইচ্ছা ছিল। এখনও আমার ইচ্ছা আছে। নিশ্চিতভাবে ইচ্ছা আছে। তবে এখনও সব্যসাচীই মেয়র।’’
মেয়র পারিষদ দেবাশিস জানার বক্তব্য আরও খোলামেলা। তাঁর কথায়, ‘‘তাপসবাবুকে মেয়র হিসেবে মেনে নিতে খাস সল্টলেকের মানুষের আপত্তি থাকবেই। এটা অস্বীকার করা যায় না।’’ তিনি যে ১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূলের কর্মী, তা দাবি করে দেবাশিসবাবুর মন্তব্য, ‘‘তাপসবাবু সিপিএম থেকে মাত্র ৪ বছর আগে তৃণমূলে এসে ডেপুটি মেয়র হয়েছেন।’’ তাপসবাবুকে মেয়র করার প্রস্তাব এলে তাঁরা কী করবেন, তৃণমূল কাউন্সিলরদের অনেকেই এ প্রশ্নে এখনও খুব খোলাখুলি কিছু বলতে রাজি নন। তবে দল সব্যসাচীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনলে তাঁরা সেই প্রস্তাবের বিরোধিতা করবেন, এমন কথাও বড় একটা কেউ বলছেন না। চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা বলেন, ‘‘আমি দলের সৈনিক। দল যা দায়িত্ব দেবে, তা মেনে নিতে প্রস্তুত। সব্যসাচী শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছেন কি না, তা দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি দেখবে। আমাদের যা বলার দলকে বলেছি।’’
মেয়র পারিষদ দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘সব্যসাচী দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে দলীয় নেতৃত্ব যদি ব্যবস্থা নেন, তার সঙ্গে থাকব। কিন্তু সেই নির্দেশ যদি তাপসবাবু মারফৎ আসে, তবে সেটা মেনে নেওয়া মুশকিল।’’
তাপসবাবু এই সব বিতর্কে জড়াতে নারাজ। তাঁর দাবি, ‘‘কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলছি। অনেকেই সব্যসাচীর বিরুদ্ধে সরব। তাই তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থায় কাউন্সিলররা রাজি হবেন বলে আশা করি।’’ আর সব্যসাচী বলেন, ‘‘তাপসকে সৌজন্য দেখিয়ে ডেপুটি মেয়র হিসেবে পাশে বসিয়ে রেখেছিলাম। ওঁকে বিধানসভা ভোটে হারিয়েছিলাম তো আমি। হেরে গেলে গলার জোর বাড়ে!’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy