গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
‘ষড়যন্ত্রকারী’ গ্রেফতার। শুটারের ছবি ধরা পড়েছে সিসি ক্যামেরায়। তবু শুটারের নাগাল পেতে ধৃতদের স্বীকারোক্তি বা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বুধবার রাত পর্যন্ত কাজে আসেনি। টিটাগড়ের বিজেপি নেতা মণীশ শুক্ল খুনে ধৃতের সংখ্যা এখনও দুই।
খুনির নাগাল পেতে শেষ পর্যন্ত প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে তদন্তকারী সংস্থা। শুটারের খোঁজে ভিন্ রাজ্যে গিয়েছে পুলিশের দু’টি দল। বুধবার ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। তবে এই কাজে এত দেরি কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এ দিন দুপুরে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের দলটি ঘটনাস্থলে আসে। মাটিতে পড়ে থাকা রক্তের নমুনা, সেখানকার মাটি, ব্যবহৃত গুলির খোল সংগ্রহ করে। দলের এক আধিকারিক জানান, সেগুলি পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে দেখা হবে। সেখান থেকে বিশেষ কিছু সূত্র মিললেও মিলতে পারে। কিন্তু, ঘটনার পরে তিন দিন পার হয়ে যাওয়ায় অনেক নমুনা নষ্ট হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কোনও জবাব দেননি ওই আধিকারিক।
আরও পড়ুন: টিটাগড়ে মণীশ-খুনে শুটারের হদিস নেই এখনও
মণীশ খুনের প্রায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুররম খান এবং তাঁর এক সঙ্গী গুলাব শেখকে গ্রেফতার করে ঘটনার কিনারা করে ফেলেছে বলে দাবি করেছিল সিআইডি। কিন্তু তার পরে নতুন করে কাউকে গ্রেফতারের কথা সিআইডি সরকারি ভাবে জানায়নি। তবে সূত্রের খবর, আরও তিন জনকে আটক করেছে তারা। তাদের জেরা চলছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও তাঁদের হাতে এসেছে। যে কোনও সময় তাদের গ্রেফতার করা হতে পারে।
আরও পড়ুন: লরির চাকায় করোনা!
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে খুররম এবং গুলাবকে নিয়ে টিটাগড় এবং ব্যারাকপুরের বেশ কয়েকটি জায়গায় গিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। ধারণা করা হচ্ছে, আততায়ীরা ওই জায়গাগুলিতে আত্মগোপন করে থাকতে পারে। কিন্তু আততায়ীরা কি খুররমের পরিচিত নয়? সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও তথ্য খুররমের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। মনে করা হচ্ছে, খুররম ‘সুপারি কিলার’ নিয়োগ করে থাকতে পারে। এমনকি, এই ঘটনায় একাধিক ষড়যন্ত্রকারী থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। অথবা অন্য কারও সঙ্গে খুররমের যোগসাজশ থাকতে পারে বলেও মনে করছে তদন্তকারীরা। আপাতত ধৃতদের জেরা করে সেই জট ছাড়ানোর চেষ্টায় রয়েছে তদন্তকারী সংস্থা।
আরও পড়ুন: ল্যাব-রিপোর্টে ‘ভুল’ সংশোধনে তৎপর কমিশন
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, যে বা যারাই সুপারি কিলারের সঙ্গে ‘ডিল’ করে থাকুক না কেন, মণীশকে খুনের সময় ঘটনাস্থলের কাছাকাছিই ছিল সে। তা না হলেও খুনি বা মধ্যস্থতাকারীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ অবশ্যই ছিল তার। তাদের চিহ্নিত করতে মোবাইল সিগন্যালের ‘টাওয়ার ডাম্প’ প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছেন তদন্তকারীরা। ওই পদ্ধতিতে খুনের সময়ে ঘটনাস্থলের কাছে থাকা মোবাইল টাওয়ারের আওতায় কোন কোন মোবাইলের নম্বর ব্যবহার হয়েছে তা চিহ্নিত করা যাবে। গোয়েন্দাদের অনুমান, ‘অপারেশন’ সফল হয়েছে কি না, খুনিরা তা কাউকে জানিয়ে থাকতে পারে। তা হলে ওই পদ্ধতিতে খুনিদের চিহ্নিত করা যাবে। সিআইডির বেশ কয়েকটি দল ঘটনাস্থল থেকে সোদপুর এবং ব্যারাকপুর পর্যন্ত রাস্তার ধারে থাকা বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে। ফুটেজে মোটরবাইক দেখা গেলেও সেগুলির নম্বর এখনও উদ্ধার করতে পারেননি তদন্তকারীরা।
সিআইডি সূত্রের খবর, উত্তর-দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং হুগলির ‘শার্প শুটার’দের খোঁজ শুরু করা হয়েছে। ঘটনার সময় তারা কোথায় ছিল, তা জানার চেষ্টা চলছে। জেলের বাইরে রয়েছে, এ রকম কিছু দুষ্কৃতীর নামও উঠে এসেছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। যে বিষয়গুলি নিয়ে এখনও ধন্দ রয়েছে, ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা সে বিষয়ে কিছুটা দিশা দিতে পারবেন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। যেমন সে দিন প্রথম গুলি কোন দিক দিয়ে চলেছে। কতটা দূরত্ব থেকে মণীশকে গুলি করা হয়েছিল।
তদন্তকারীরা আরও এক ব্যবসায়ীর উপরেও নজর রেখেছেন। মণীশের বাবার এফআইআরেও শেষ নামটি ভোলা প্রসাদ নামের ওই ব্যবসায়ীর। তাকে বছর দু’য়েক আগে একটি খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। মণীশের ডান হাত হিসেবে পরিচিত সতীশ মিশ্র নামে এক তরুণকে গুলি করে খুন করা হয়। সেই ঘটনায় মণীশের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল ওই ব্যবসায়ীকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy